দুই বিএনপি নেতার মৃত্যুর গুজব ছড়ানোয় ছাত্রদল নেতাকে শোকজ
Published: 3rd, February 2025 GMT
কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া মারা গেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন তথ্য ছড়িয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল নেতা সাইফ উদ্দিন।
রোববার সাইফ উদ্দিনের ফেসবুক আইডি থেকে বলা হয়, ‘ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লা আসার পথে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বরকত উল্লাহ বুলু ও মোস্তাক মিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। উনাদের মৃত্যুতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতাকর্মী শোকাহত।’
পরে খবরটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করে বিএনপি নেতা মোস্তাক মিয়া নিজেই তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান।
এদিন রাতে মৃত্যুর গুজব ছড়ানোর অভিযোগে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.
তবে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ উদ্দিন বলেন, আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছিল। সেখান থেকে ভুল খবর পোস্ট করা হয়। বিএনপির দুই নেতা মারা যাওয়ার খবরটি মিথ্যা ছিল। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া জানান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আজ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর এক ছাত্রদল নেতা তার ফেসবুক আইডিতে একটি ভুল খবর পোস্ট করে। পরে খবরটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ছ ত রদল র ফ সব ক ব এনপ র ছ ত রদল
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।