প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, সরস্বতী পূজা বসন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে। আমরা আশা করি এবারের সরস্বতী পূজা আমাদের সমাজেও বসন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে আসুক।

সোমবার ঢাকার রমনা কালীমন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সচিবালয় পূজা উদযাপন ও কল্যাণ পরিষদ আয়োজিত সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বাণী অর্চনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি জ্ঞান রঞ্জন পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার বাড়েই। 

উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা.

বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, সরস্বতী দেবী বিদ্যার দেবী, জ্ঞানের দেবী, শিল্পকলার দেবী। সরস্বতী পূজা করা মানে জ্ঞানের পূজা করা, শিল্পকলার পূজা করা এবং জ্ঞান ও শিল্পকলা চর্চার মাধ্যমে একজন মানুষ প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠে, মানবিক মানুষ হয়ে উঠে। সুতরাং সরস্বতী পূজা করা মানে আমাদের এ মূল্যবোধগুলোকে জ্ঞান এবং মানবিক মূল্যবোধগুলোকে উপরে তুলে ধরা এবং এর মাধ্যমেই আমরা একটি জ্ঞানসমৃদ্ধ এবং মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে পারি। সরস্বতী পূজায় এটাই আমাদের কামনা। 

তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানেরই দুটি দিক থাকে। একটি বিশ্বাসীগণের জন্য, ভক্তবৃন্দের জন্য। অনুষ্ঠানের আচারমূলক দিক। কিন্তু এ ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোর আরেকটি দিক রয়েছে, সেটি হলো- উৎসবমূলক দিক। যেটা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একত্রিত করে এবং কোন একটি সুন্দর সমাজের জন্য এই একত্রিত হওয়াটা খুবই প্রয়োজনীয়। ধর্মবোধ নির্বিশেষে মানুষরা যেন আনন্দে মিলিত হতে পারে, এই উৎসব সেই সুযোগ তৈরি করে দেয়। যুগ যুগ ধরে আমাদের সমাজে এই রীতি চলে আসছে।  আমরা এই মূল্যবোধকে উচ্চে তুলে ধরি। আমাদের সমাজে সম্প্রীতির সুবাতাস বয়ে আসুক, সেই কামনা করি।

এর আগে উপদেষ্টা ঢাকায় অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বাণী অর্চনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা, মঙ্গলালোক স্মরণিকা উন্মোচন, মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলন এবং জুলাই বিপ্লবে শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিকট চেক হস্তান্তর করেন।

এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও অফিসার্স ক্লাবের চেয়ারম্যান ড. শেখ আব্দুর রশীদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, নেপালের রাষ্ট্রদূত জ্ঞানসেম ভান্ডারী, পূজা উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার ও কো-চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার।

উপদেষ্টা বিকেলে বসুন্ধরাস্থ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বাণী অর্চনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়

শ্রম আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ কবে হবে, সে বিষয়ে আর সময়সীমার কথা বলছে না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বর মাসে এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এ অধ্যাদেশ হবে। মার্চ শেষে এপ্রিলও শেষ হচ্ছে আজ বুধবার।

সচিবালয়ে আজ ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে সময়সীমা থাকার পক্ষে নন তিনি। শ্রমিক–মালিকদের স্বার্থ রক্ষাসহ শিগগিরই তা করা হবে। বিষয়টি এখন কোন প্রক্রিয়ায় আছে, তা বলতে রাজি হননি শ্রম উপদেষ্টা।

শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় স্লোগান ছিল দুনিয়ার মজদুর, এক হও।’ এখন তা বদলে গেছে। এখন হবে ‘দুনিয়ার মালিক-শ্রমিক, এক হও’। এখন ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের সন্তানের মতো মনে করেন।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ১০১টি ধারা ও উপধারা সংশোধন হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

আইএলওর বৈঠকে যোগ দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে যে দলটি জেনেভা সফর করে, সেখানে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও শ্রম উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ছিলেন।

এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠক থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন হবে। উপদেষ্টা তখন এ–ও বলেছিলেন, আগের সরকারের আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) নেতৃত্বাধীন দলকে আইএলও পর্ষদে অপদস্থ করা হয়েছিল। অথচ এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বরং প্রশংসা করা হয়েছে। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথাও বলেছিল।

জানা গেছে, শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতির অভিযোগ এনে জাপানসহ ছয়টি দেশের পক্ষ থেকে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো চলমান।

আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এদিকে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে (টিসিসি) শ্রমিকপক্ষ জানিয়েছে, আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মে দিবস আর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ–স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।

এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষমতায় গেলে নারীদের মর্যাদা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে: জামায়াত আমির
  • এখনো শ্রমিকদের লড়াই করতে হচ্ছে, কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি
  • শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের মহান মে দিবস আজ
  • কর্মক্ষেত্রে অধিকার আদায়ের রক্তাক্ত গৌরবময় দিন
  • শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
  • শিগগিরই শ্রম আইন সংশোধন করা হবে: শ্রম উপদেষ্টা 
  • আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসে শিল্পকলা একাডেমির  দুই দিনের আয়োজন
  • মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানো যাবে না, নির্দেশ হাইকোর্টের
  • আইনগত সহায়তা দিবসে আলোচনা সভা-শোভাযাত্রা
  • আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন