নারায়ণগঞ্জে শুক্রবার শক্তির জানান দিবে জামায়াত
Published: 6th, February 2025 GMT
প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জে জনসমাবেশ করছে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরীর ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে এই জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। জনসভা সফল এবং ব্যাপক জনমাগম ঘটাতে গত কয়েকদিন জেলার ৫টি উপজেলা এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে কর্মী সভা করেছে জামায়াতের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও মাইকিং, ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন লাগিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে।
এদিকে এই জনসভার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জে প্রকাশ্যে জামায়াতে ইসলামী তাদের শক্তি ও সক্ষমতা জানান দিবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক সচেতন মহল। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই জনসভায় নারায়ণগঞ্জবাসীকে কি ম্যাসেজ দিবে জামায়াতে ইসলামী তা নিয়েও স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা। কারণ নারায়ণগঞ্জে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকান্ড চলমান থাকলেও কখনো তারা প্রকাশ্যে জনসভা করতে পারেনি। গত ১৬ বছরের আওয়ামীলীগের শসনামলে মামলা-হামলায় জর্জরিত ছিল নারায়ণগঞ্জে জামায়াত ইসলাম ও তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা। রীতিমত দলীয় কোন কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় পর্যন্ত দাঁড়াতে পারেনি। এরমধ্যে বিদায়ের শেষ দিকে আওয়ামীলীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে। এতে আরও বিপাকে পড়ে যায় দলটির নেতাকর্মীরা। তবে ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জে ঘুরে দাঁড়ায় জামায়েতে ইসলামী। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে নারায়ণগঞ্জে হতাহতদের বাড়ি-ঘরে ছুটে আসে কেন্দ্রীয় জামায়াতের আমীর সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে তারা হতাহতদের আর্থিক সহায়তা ও আগামীতে পাশে থাকার আশ^াস দেন। তাদের এই কর্মকান্ডকে পজেটিভভাবে নিয়েছে জুলাই বিপ্লবে হতাহতদের স্বজন ও সাধারণ মানুষ। তাই এমন সময়ে জনসভা ঘিরে উৎসবমুখোর জামায়েতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
অপরদিকে শুক্রবারের জনসভা সফল ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমীর ড.
সংবাদ সম্মেলনে জনসভা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ আবদুল জব্বার লিখিত বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ সময়কাল ধরে ধর্ম-বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে আমরা সকলেই আওয়ামী লীগের জুলুমতন্ত্রদ্বারা নিষ্পেষিত হয়েছিলাম, যার কারণে এদেশের সিংহভাগ মানুষ তাদের মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। গুম-খুন, জেল-জুলুম, নির্যাতন, দুর্নীতি, অনিয়ম, কালোবাজারি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, মাদক বাণিজ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের মাধ্যমে দেশকে এক অনিশ্চিত পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। জনগনের শেষ ভরসাস্থল বিচারালয়কেও আওয়ামী লীগ তাদের দলীয়করণের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে জনগণের ন্যায্য বিচার পাওয়ার অধিকারকে কেড়ে নিয়েছিল। মোট কথা আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগিরা দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। এহেন চরম দূর্বিসহ পরিস্থিতিতে নির্যাতিত মজলুম জনগনের রোনাজারিতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল। আল্লাহ তা'য়ালা মজলুমের ফরিয়াদ কবুল করেছেন। তাঁর মেহেরবানীতে ছাত্র জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ৫ আগস্টের দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের জনপদ হিসেবে অতীতে চিহ্নিত হয়েছিল। এ কারণে এ শহর সমৃদ্ধি-স্বস্তির নারায়ণগঞ্জের পরিবর্তে নৈরাজ্যের নারায়ণগঞ্জে পরিণত হয়েছিল। আমরা জুলাই-আগস্ট এর ছাত্র-জনতার অনন্য ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন বিজয়কে বুকে লালন করে সবাই মিলে ধ্বংস-ভাঙ্গা রাষ্ট্রকে মেরামতের মাধ্যমে নতুন নিরাপদময় একটি বাংলাদেশ এবং কাঙ্ক্ষিত ও প্রত্যাশিত বসবাস যোগ্য নারায়ণগঞ্জ গড়ে তুলতে চাই। যেখানে থাকবে না কোন বৈষম্য। কেউ আইনের বাইরে থাকবেনা। রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলগণ হবেন জনগনের সেবক ও বন্ধু।
লিখিত বক্তব্যে জামায়েতের এই নেতা আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে অনেকগুলো সমস্যার পাশাপাশি অঢেল সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সমস্যাগুলোর সমাধান করে এবং সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমরা নারায়ণগঞ্জকে একটি আদর্শ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির নারায়ণগঞ্জ হিসেবে রূপান্তরিত করতে পারব ইনশাআল্লাহ। যে নারায়ণগঞ্জে থাকবেনা সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মহড়া, কিশোরগ্যাঙ্গ, মাদক সেবন ও বিপণন, মাস্তানী ও দখলদারিত্ব। থাকবেনা বেকারত্বের আহাজারি। যে নারায়ণগঞ্জ হবে বসবাসযোগ্য, ভয়হীন, বৈষম্যমুক্ত একটি আদর্শ নগরী। সেই প্রত্যাশাকে নারায়ণগঞ্জবাসির উদ্দেশ্যে তুলে ধরতে আগামীকাল ৭ই ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, নারায়ণগঞ্জ মহানগরী ও জেলা শাখার উদ্যোগে ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম নেতা, মজলুম জননেতা ডাঃ শফিকুর রহমান। তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। এছাড়াও জনসভায় কেন্দ্রীয় এবং জেলা ও মহানগরীর নেতৃবৃন্দ গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। আশাকরি উক্ত জনসভা জন সমুদ্রে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। এই জনসভা হবে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জুলমবাজ, দখলবাজদের বিরুদ্ধে হুসিয়ারী উচ্চারণ, এই জনসভা হবে নারায়ণগঞ্জসহ দেশবাসীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের প্রতীক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রেীয় জামায়াতের নির্বাহী সদস্য ও ঢাকা দক্ষিন অঞ্চলের পরিচালক সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রেীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈনুউদ্দিন আহমদ,কেন্দ্রেীয় মজলিসে সূরা সদস্য জেলা আমীর মমিনুল হক সরকার, মহানগরী নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল কাইয়ুম, মহানগরী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানয়োর হোসাইন, কেন্দ্রেীয় মজলিসে সূরা সদস্য জাকির হোসাইন, কেন্দ্রেীয় মজলিসে সূরা সদস্য প্রফেসর ড.ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া সহ নারায়ণগঞ্জ মহানগরী ও জেলা কর্ম পরিষদের সদস্যবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ র ন র য়ণগঞ জ ত হয় ছ হয় ছ ল আল ল হ সদস য আওয় ম আগস ট ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও সদস্য ফরম বিতরণ
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির অন্তর্গত বন্দর উপজেলা বিএনপির আওতাধীন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম কার্যক্রম বিতরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল চারটায় কলাগাছিয়া ইউনিয়নের আলতাফ কমিউনিটি সেন্টারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এসময় আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপি'র নেতৃবৃন্দের কাছে তুলে দেন মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদুল্লাহ মুকুলের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড. জাকির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক এড. সরকার হুমায়ূন কবির, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজী নুরউদ্দিন, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হুমায়ূন কবির, বন্দর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মহি উদ্দিন শিশির, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি এড. মতিউর রহমান মতিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদ হোসেন।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেজ, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হুমায়ূন কবির, সহ- সভাপতি দিদার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সজিব খন্দকার, বন্দর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোহেল প্রধানসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।