গাজীপুরে বাসন হক মার্কেট এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও যুবদলের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ৫টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।

গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজ ও বাসন থানার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি নাজমুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর তানভীর সিরাজের পদত্যাগ চেয়ে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিক্ষোভ করা হয়।

হামলায় আহত মো.

আল-আমিন, মো. ফয়সাল হোসেন, আব্দুল করিম, আক্তার হোসেন ও বুলবুল আহাম্মেদকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি, যুবদল নেতা–কর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাসন হক মার্কেটের এলাকায় ম্যালন ফ্যাশন লিমিটেড নামের একটি পোশাক তৈরির কারখানা রয়েছে। ওই কারখানায় একসময় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা ঝুট ব্যবসা করতেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বাসন, ভোগাড়, কড্ডা, ইসলামপুরের পোশাক তৈরি কারখানাসহ, ময়লা–আবর্জানা থেকে শুরু করে সব ব্যবসা দখল করে বাসন থানা বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজ। তাঁর সঙ্গে টক্কর দিয়ে বাসন থানার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি নাজমুল ইসলাম স্থানীয় ছাত্রদল ও যুবদলসহ কয়েকটি অঙ্গসংগঠনের নেতাদের নিয়ে বাসন হক মার্কেট এলাকার ম্যালন ফ্যাশন কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করার চেস্টা করেন।

আজ বেলা ১১টার দিকে নাজমুল তাঁর লোকজন নিয়ে ওই কারখানা থেকে ঝুটের মাল বের করতে গেলে বিএনপি নেতা তানভীর সিরাজের শতাধিক লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের প্রতিহত করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পাঁচটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করে।

ওই ঘটনার পর দুপুরে তানভীর সিরাজের পদত্যাগ চেয়ে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ঐক্য, ছাত্রদলসহ কয়েকটি সংগঠন বিক্ষোভ করে। সেখানে ছাত্র ঐক্য আন্দোলনের নেতা নাইম জমাদার বলেন, তানভীর সিরাজ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের আশ্রয় দিচ্ছে। তানভীরকে আন্দোলনের সময় দেখা যায়নি। এখন এলাকায় চাঁদাবাজি করছে। অনতিবিলম্বে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করার দাবিও জানানো হয়।

নাজমুল ইসলাম জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের ঝুটমাল দেবেন বলে কিছু দিন ধরে কথা বলছেন। এর মধ্যে হঠাৎ তানভীর সিরাজ ২০০–২৫০ লোক নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করেন। তাঁর লোকজন আমাদের পাঁচটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে কথা বলতে তানভীর সিরাজের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার আহমেদ বলেন, কারখানা ঝুটব্যবসা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একটি পক্ষ ৫টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কোনো অভিযোগ পেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, ঘটনাটি যেহেতু বিএনপির দুই পক্ষের, তাই মনে হয়, কেউ অভিযোগ করবেন না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ র ঘটন য বদল র ব এনপ র এল ক য় ইসল ম ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, শিক্ষক বহিষ্কার 

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মোহাম্মদ মান্নান খান উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গণিত শিক্ষক মো. সাঈদুজ্জামানের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এ ঘটনায় সাঈদুজ্জামানকে স্কুল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১ জুলাই) মোহাম্মদ মান্নান খান উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছেন এই মর্মে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে সোমবার বিকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসী বিদ্যালয় চত্বরে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান তারা। পরে বিষয়টি জেনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. ইসমাইল ঘটনাস্থলে যান। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তিনি সাঈদুজ্জামানকে সাময়িক বহিষ্কার করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার মিয়ার বিরুদ্ধেও যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠে আসে। তখন তাকেও স্কুল থেকে সাময়িক বহিষ্কারের নির্দেশ দেন তিনি। 

নাম প্রকাশ না-করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিনিয়ত স্কুলের শিক্ষকরা ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করছে। আমরা এর আগেও বলেছি। লোকলজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগীরা আড়ালে থাকেন। কিন্তু এভাবে তো চলতে দেওয়া যায় না। এটা আমাদের স্কুলের জন্য লজ্জা। আমরা একটি সুন্দর পরিবেশে শিক্ষা অর্জন করতে চাই।

আরো পড়ুন:

তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করার দাবি শিক্ষার্থীদের

মাইমুনা হত্যার প্রতিবাদে জবিতে মানববন্ধন

‘‘শিক্ষকরা হচ্ছে মা-বাবার সমান। কিন্তু শিক্ষকরাই এখন রক্ষকের স্থানে ভক্ষকের রূপ ধারণ করেছে। স্কুলটিতে এখন যে অবস্থা আমরা আমাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাই,’’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন একাধিক অভিভাবক।

বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘‘বিষয়টি জানার সাথে সাথে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ঘটনাস্থলে যান। তিনি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। আমরাও চাই, শিক্ষাঙ্গণ কুলষতা মুক্ত থাকুক।’’

বাদল//

সম্পর্কিত নিবন্ধ