ভারতের বিজেপি সরকার আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে: জামায়াতের সেক্রেটারি
Published: 8th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘ভারতের বিজেপি সরকার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা ভারত থেকে উসকানি দিচ্ছেন। উনি দেশে আসবেন বলছেন। এখানকার আওয়ামী লীগের দোসরেরা বলছে, আপা আসেন। কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে আসবেন বলছেন।’ আজ শনিবার দুপুরে নেত্রকোনা শহরের মুক্তারপাড়া মাঠে জামায়াতে ইসলামীর কর্মিসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের মাস্টারমাইন্ড হাসিনার বিরুদ্ধে দুই শতাধিক মামলা আছে। তার বিরুদ্ধে আদালত থেকে ওয়ারেন্ট রয়েছে। এই খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের জন্য ভারত দায়ী নয়, এ কথা অসত্য। আমরা এই কথার নিন্দা জানাই। আমরা বলছি, ভারত তুমিই দায়ী। কেন তুমি খুনের মাস্টারমাইন্ড মানবতাবিরোধী অপরাধী হাসিনাকে আশ্রয় দিলে? হাসিনা এসব উসকানিমূলক বক্তব্যে আমাদের দেশের অখণ্ডতা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘১৭ বছর ধরে দেশে আইনের কোনো শাসন ছিল না। এখনো আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট রয়েছে—কিছু ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি ও এসআইয়ের মুখের কথা শুনলেই বোঝা যায়। অনেকেই নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হচ্ছেন; কিন্তু আমরা চাই, আগে সংস্কার করে তারপর নির্বাচন দেওয়া হোক। সংস্কার করতে যত সময় লাগে, জামায়াতে ইসলামী সেই যৌক্তিক সময় দিতে প্রস্তুত। এ ছাড়া গণহত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তারপর নির্বাচন হোক। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা হোক।’
শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের মানুষের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছিল, সেই নির্যাতনের ক্ষোভের কারণেই দেশে এখনো বিভিন্ন জায়গায় হামলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক দিনে ৩৫টি জেলার মধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসবের দায় শেখ হাসিনাকেই নিতে হবে।’
দলীয় নেতা-কর্মী ও ছাত্র-জনতাকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শান্ত থাকার আহ্বান জানান মিয়া গোলাম পরওয়ার। কর্মী সম্মেলনে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ছাদেক আহমাদ হারিছের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জামায়েতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য ও প্রচার সেক্রেটারি মতিউর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও ময়মনসিংহ অঞ্চল পরিচালক ছামিউল হক ফারুকী, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, নেত্রকোনার সাবেক আমির এনামুল হক।
এর আগে সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে এসে যোগ দেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র আওয় ম ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা বিগত ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। সেখানে জনগণের কাঙ্ক্ষিত কল্যাণ সাধিত হয়নি। বিগত সরকারগুলো হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের মাধ্যমে দেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশের মানুষ এখন বলতে শুরু করেছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, শুধু বাকি রয়েছে ইসলামি শাসন দেখার। তাই তো আমিরে জামায়াত শফিকুর রহমান একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক দিয়েছেন। একটি জনমুখী ও কল্যাণকর রাষ্ট্রের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। যেখানে লুটপাট-দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হবে না, বেকারত্বের অভিশাপ কোনো যুবককে বয়ে বেড়াতে হবে না, সকল বৈষম্য দূর হবে। মানুষ সত্যিকার একটি কল্যাণরাষ্ট্র দেখতে পাবে।’
আজ রোববার সকালে পবিত্র হজ পালন শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার নিজ বাড়িতে আসার পথে খুলনার সিকিরহাট, ফুলতলা বাজার ও শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে স্থানীয় জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের কথা অনুযায়ী হয়তো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন হতে পারে। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক দাড়িপাল্লা ফিরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
সকাল ১০টায় ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিকিরহাট খেয়াঘাট চত্বরে, সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবদুল আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ও খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক পথসভা হয়। এসব পথসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা অফিস সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুব বিভাগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি ইউসুফ ফকির প্রমুখ।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মনে করেন, কল্যাণকর ও জনমুখী রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে সৎ মানুষের প্রয়োজন। জামায়াত নির্বাচিত হলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কী কী করা হবে, বক্তব্যে সেসব তিনি তুলে ধরেন।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য ছিলেন গোলাম পরওয়ার। বক্তব্যে নিজের সংসদীয় এলাকায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনাও তুলে ধরেন তিনি।