ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জের ছয়টির মধ্যে ৫টি এবং ঝিনাইদহ জেলার ৪টি সংসদীয় আসনে প্রাথমিক বাছাইভিত্তিক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। 

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম এবং ঝিনাইদহ জেলা শাখার জামায়াতের আমির অধ্যাপক আলী আজম মো.

আবু বকর এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘আজ সকালে দারুল ইসলাম মহিলা কলেজ মাঠে সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের দাপ্তরিক সুধী সমাবেশে জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।’’

আরো পড়ুন:

মে-জুনের মধ্যেই ভোটের পূর্ণ প্রস্তুতি: বিএনপিকে বলল ইসি

এখন গণতন্ত্র ও ভোটের শত্রু চতুর দিকে: আহমেদ আযম

তিনি বলেন, ‘‘সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে দলের কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাঁচটি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে জামায়াতের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড।’’

ঝিনাইদহ জেলা আমির অধ্যাপক আলী আজম মো. আবু বকর বলেন, ‘‘জামায়াত ইসলামীর দলীয় সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে পর্যালোচনার পর ঝিনাইদহের ৪টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়েছে। এখানে নিজেদের কোনো চাওয়া-পাওয়া বা না পাওয়ার কোনো বিষয় নেই। আমরা চাই সুন্দর, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ।’’

সিরাজগঞ্জের ৫টি আসনের প্রার্থী—

সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর-সদরের একাংশ) আসনে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহীনুর আলম, সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনে কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান; সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ আলী আলম ও সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনে উপজেলা আমির অধ্যাপক মিজানুর রহমান।

এদিকে, রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে এখনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। যাচাই-বাছাই করে কয়েকদিনের মধ্যে সেটিও ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে দলটি।

ঝিনাইদহের ৪টি আসনের প্রার্থী—

ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা নিয়ে গঠিত) আসনে শৈলকূপা উপজেলা জামায়াতের আমির এ এস এম মতিয়ার রহমান; ঝিনাইদহ-২ (২টি উপজেলা সদর-হরিনাকুণ্ডু উপজেলা নিয়ে গঠিত) আসনে জেলা আমির অধ্যাপক আলী আজম মো. আবু বকর, ঝিনাইদহ-৩ (২টি উপজেলা কোটচাঁদপুর-মহেশপুর নিয়ে গঠিত) আসনে কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবেক আমির অধ্যাপক মতিউর রহমান ও ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ-সদর আংশিক নিয়ে গঠিত) আসনে কালীগঞ্জ উপজেলার নায়েবে আমির মাওলানা আবু তালেব।

সম্প্রতি সিলেটে এক অনুষ্ঠানে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, দলটি এখনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। সেখানে তিনি বলেছেন, “জামায়াত এখনো অফিশিয়ালি প্রার্থী ঘোষণা করেনি, এটা প্রাথমিক সিলেকশন। ইলেকশন এখনো অনেক দূর। ইলেকশন কাছে এলে দল ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেবে। তখন যাদের নমিনেশন দেওয়া হবে, তারাই হবেন প্রার্থী।”

তিনি বলেছেন, “মৌলিক সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়। সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে তা হবে নির্বাচনী জেনোসাইড। এটি আমরা চাই না; আমরা চাই সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির হওয়ার পর নির্বাচন হোক।”

অদিত্য/সোহাগ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ম য় ত র আম র স র জগঞ জ র রহম ন ঝ ন ইদহ ল ইসল ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ