১৭ ফেব্রুয়ারি টেলিকম খাতের কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী নিয়ে আলোচনা হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণায় এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত আর্থিক বছরের হিসাব চূড়ান্ত করার পাশাপাশি লভ্যাংশের সিদ্ধান্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছর রেকর্ড আয় করেছে টেলিকম খাতের কোম্পানি রবি আজিয়াটা। সেবার কোম্পানিটি ৯ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা আয় করেছে, রবির ইতিহাসে এক বছরে যা সর্বোচ্চ। রেকর্ড আয় করায় গত বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়।
রবি আজিয়াটা দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি। ২০২০ সালে কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তালিকাভুক্তির পর ২০২৩ সালে কোম্পানিটি সর্বোচ্চ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। রবি জানিয়েছে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে কোম্পানিটির আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ।
সেবার কোম্পানিটি ৩২১ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। গত বছর রবিতে নতুন ৪৩ লাখ গ্রাহক যুক্ত হয়েছেন। বছর শেষে কোম্পানিটির মোট গ্রাহকসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৮৭ লাখে; এই সংখ্যা দেশের মোট মুঠোফোন ব্যবহারকারীদের ৩১ শতাংশ। রবির মোট গ্রাহকের ৬১ শতাংশই ফোরজি বা চতুর্থ প্রজন্মের সেবা ব্যবহারকারী গ্রাহক।
গত এক বছরে রবি আজিয়াটার শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৩৫ টাকা ৯০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ২০ টাকা ৩০ পয়সা। তালিকাভুক্ত হওয়ার কোম্পানিটি ২০২১ সালে ৫ শতাংশ ও ২০২২ সালে ৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে
আগামী ২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের সভায় বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব উঠছে। সভায় অনুমোদন হলে একসঙ্গে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ শুক্রবার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের সভার এ তারিখ নির্ধারণের তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ পর্ষদের বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির পর্যালোচনা প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে।
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা দিতে আইএমএফ ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে বিশেষত টাকা–ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়।
সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৭৬ কোটি ডলার বাড়তি ঋণ চেয়েছে। বাড়তি ঋণ যোগ হলে মোট দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি ডলার। বিবৃতিতে বিনিময় হার, রাজস্ব আদায়, ব্যাংক খাতসহ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়।