মুনাফা কমলেও ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে গ্রিন ডেলটা
Published: 12th, February 2025 GMT
বিমা খাতের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স ২০২৪ সালের ডিসেম্বর ৩১ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় এই লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়।
লভ্যাংশ দিলেও গত বছর গ্রিন ডেলটার মুনাফা কমেছে। ২০২৪ সালে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৫ দশমিক ৩৯ টাকা; ২০২৩ সালে যা ছিল ৬ দশমিক ১১ টাকা। একইভাবে গত বছর কোম্পানিটির নিট অ্যাসেট ভ্যালু পার শেয়ার বা শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য কমে হয়েছে ৭০ দশমিক ৪০ টাকা; আগের বছর যা ছিল ৭৩ দশমিক ১৮ টাকা। এ ছাড়া কোম্পানিটির নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো পার শেয়ার (এনওসিএফপিএস) বা শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ কমেছে, ২০২৪ সালে যা ছিল ১ দশমিক ১৯ টাকা; ২০২৩ সালে তা ছিল ৫ দশমিক ৯৮ টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণায় এসব তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বছরের তুলনায় প্রিমিয়াম আয় কমে যাওয়ায় ইপিএস এনওসিএফপিএস কমেছে। এ ছাড়া শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের মূল্য কমে যাওয়ায় শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য কমেছে।
গ্রিন ডেলটার বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ২৭ মার্চ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হবে। সভাটি বেলা ১১টায় শুরু হবে। লভ্যাংশের জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৪ মার্চ।
গত এক বছরে গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৭২ টাকা ৮০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ৪১ টাকা। এ ছাড়া কোম্পানিটি ২০২৩ ও ২০২২ সালে ২৫ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ৩০ শতাংশ ও ২০২০ সালে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এ ছাড়া ২০২০ সালে কোম্পানিটি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ