সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৬৫৩১ জনের ফল বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি হয়নি
Published: 16th, February 2025 GMT
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগে ৬ হাজার ৫৩১ জন নির্বাচন করে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফল বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের ওপর আজ রোববার শুনানি হয়নি। আবেদনকারীপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো.
এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ৬ হাজার ৫৩১ জন নির্বাচন করে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফল এবং নির্বাচিত ব্যক্তিদের অনুকূলে নিয়োগপত্র ইস্যুর সিদ্ধান্ত আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি মেধার ভিত্তিতে গত বছরের ২৩ জুলাইয়ের পরিপত্র অনুসরণ করে নতুন করে ফলাফল প্রকাশ করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে গত সপ্তাহে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আবেদনটি আজ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় ৭৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে। আদালতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলে আইনজীবী কামরুজ্জামান ভূঁইয়া ও ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ।
পরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আবেদনের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করবেন। সে জন্য সময় চাওয়া হয়। আদালত ১ দিন সময় মঞ্জুর করেছেন। আগামী মঙ্গলবার আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
রিট আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আবেদনকারীপক্ষ সময় নিয়েছে। আদালত নট টুডে (আজ নয়) দিয়েছেন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৪ জুন ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ৬ হাজার ৫৩১ প্রার্থীকে নির্বাচন করে গত বছরের ৩১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ১১ নভেম্বরের এ-সংক্রান্ত আদেশ অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীদের অনুকূলে ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যু করার কথা ছিল। তবে ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা অনুসরণের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগবঞ্চিত ৩১ প্রার্থী নভেম্বরে রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন এবং ৩১ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্তের কার্যক্রম স্থগিত করেন। রুলে ৩১ অক্টোবরের ফলাফল প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিষয়ে ১১ নভেম্বরের নির্দেশনাসংবলিত স্মারক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের আদেশ (৩১ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্ত স্থগিত) স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা ৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়ে হাইকোর্টে এ–সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রায় দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনজলকামানের পর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিল পুলিশ২ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।