শহীদ মিনার ভেঙে টয়লেট নির্মাণচেষ্টার অভিযোগে দুই শিক্ষক গ্রেপ্তার, পরে জামিন
Published: 20th, February 2025 GMT
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙে টয়লেট নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগে পাশের কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতে নেওয়া হলে বিচারক তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।
ওই দুই শিক্ষক হলেন কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক সুকুমার মল্লিক।
কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পাশাপাশি অবস্থিত। দুটি বিদ্যালয়ের একই মাঠ। এই মাঠের এক কোণে ৩০ বছর আগে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল। এই শহীদ মিনারে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী-শিক্ষকেরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে আসছেন।
কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান বাদী হয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক সুকুমার মল্লিককে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বুধবার তাঁদের যশোর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ শহীদ মিনারটি ভেঙে সেখানে টয়লেট (ওয়াশরুম) নির্মাণের উদ্যোগে নেন। এ ব্যাপারে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাধা দিলেও তাতে কর্ণপাত করা হয়নি। এ ঘটনায় কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ ছিল। বিষয়টি নিয়ে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দুজনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়। পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু মোত্তালিব আলম সরেজমিন তদন্ত করেন। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তিনি কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ দেন।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পেয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। তাঁরা আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে।
আরো পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
ঢাকা/শরিফুল/রফিক