যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙে টয়লেট নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগে পাশের কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতে নেওয়া হলে বিচারক তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।

ওই দুই শিক্ষক হলেন কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক সুকুমার মল্লিক।

কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পাশাপাশি অবস্থিত। দুটি বিদ্যালয়ের একই মাঠ। এই মাঠের এক কোণে ৩০ বছর আগে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল। এই শহীদ মিনারে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী-শিক্ষকেরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে আসছেন।

কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান বাদী হয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক সুকুমার মল্লিককে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বুধবার তাঁদের যশোর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ শহীদ মিনারটি ভেঙে সেখানে টয়লেট (ওয়াশরুম) নির্মাণের উদ্যোগে নেন। এ ব্যাপারে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাধা দিলেও তাতে কর্ণপাত করা হয়নি। এ ঘটনায় কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ ছিল। বিষয়টি নিয়ে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দুজনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়। পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু মোত্তালিব আলম সরেজমিন তদন্ত করেন। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তিনি কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ দেন।

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পেয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। তাঁরা আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে বিবাহবিচ্ছেদের চার দিনের মাথায় লাউখেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার

পঞ্চগড়ে স্বামীর মৃত্যুর দুই বছর পর সন্তানদের রেখে গোপনে বিয়ে করে ঘর ছেড়েছিলেন এক নারী। দ্বিতীয় বিয়ের প্রায় এক মাস পর বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের। এ ঘটনার চার দিনের মাথায় বাড়ির পাশের লাউখেত থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের ধামোর মধ্যপাড়া এলাকার একটি লাউখেত থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর নাম তানজিনা আক্তার (৩৫)। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তানজিনার দ্বিতীয় স্বামী মিনাল হোসেনের বাবা দিলু হোসেনকে (৫৫) হেফাজতে নিয়েছে আটোয়ারী থানার পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, তানজিনা আক্তারের প্রথম স্বামী মজিবর রহমান প্রায় দুই বছর আগে মারা যান। তাঁদের দুটি ছেলে আছে। এর মধ্যে প্রায় এক মাস আগে স্থানীয় যুবক মিনাল হোসেনকে (২৭) গোপনে বিয়ে করে পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। এর পর থেকেই মিনালকে ছেড়ে দিতে তানজিনার ওপর চাপ দিতে থাকে মিনালের পরিবার। গত ৩০ অক্টোবর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকেই মিনালকে এলাকায় দেখা যায়নি।

পুলিশ জানায়, আজ সকালে ধামোর-মধ্যপাড়া এলাকার একটি লাউখেতে কয়েকজন লাউ তুলতে গিয়ে এক নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের জানান। এ সময় স্বজনেরা সেখানে গিয়ে লাশটি তানজিনার বলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে বারঘাটি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ও আটোয়ারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম সরকার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক সুরতহালে ওই নারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ