বাবা-ছেলের পরিচালনায় কাজ করা ভাগ্যের বিষয়: ফারুক
Published: 20th, February 2025 GMT
মঞ্চ ও টেলিভিশনে অভিনয়ে ৪০ বছর পার করেছেন ফারুক আহমেদ। তবে অভিনয় জীবনের হুমায়ূন আহমেদের নাটক দিয়ে দর্শকমহলে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। সেই সুবাদেই হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে সম্পর্কও ছিল নিবির। এবার হুমায়ূন আহমেদের ছেলে নুহাশ হুমায়ূনের হাত ধরে ক্যামেরার সমানে দাঁড়ালেন এই অভিনেতা।
ফারুক আহমেদ সমকালকে জানান, নাটক নয়, নুহাশের হাত ধরে বিজ্ঞাপনের শুটিং করছেন তিনি। আজ গাজীপুরের বিভিন্ন লোকেশনে শুটিং সম্পন্ন হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আরও রয়েছেন আরও দুই জনপ্রিয় অভিনেতা ডা.
নুহাশ হুমায়ূনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের কারণেই আমার আজকের জনপ্রিয়তা। তাঁর সঙ্গে বহু নাটকে কাজ করেছি। এবার তাঁর ছেলের সঙ্গে কাজ ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছি। নুহাশের নির্মাণে হাত অসম্ভব সুন্দর। বাবার পর ছেলের সঙ্গে কাজ করছি। এটা আমার জন্য সৌভাগ্যের বিষয়।’
ফারুক আহমেদ, ডা. এজাজ ও স্বাধীন খসরু
ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মূলত বিজ্ঞাপনের জন্য আমাদের এক করেছেন নুহাশ। একসঙ্গে পাঁচটি বিজ্ঞাপন হবে। এই কাজের জন্য স্বাধীন খসরু লন্ডন থেকে সম্প্রতি দেশে এসেছেন। আপাতত নাটক নিয়ে তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই। দর্শক যদি যেভাবে চান তাহলে নাটকে কাজ হবে।’
হুমায়ূন আহমেদের ‘তারা তিনজন’, ‘তারা তিনজন টি-মাস্টার’, ‘তারা তিনজন ঝামেলায় আছে’, ‘তারা তিনজন হে পৃথিবী বিদায়’, ‘তারা তিনজন ফুচকা বিলাস’, ‘আবারো তিনজন’, ‘আমরা তিনজন’ নাটকে অভিনয় করেছেন ফারুক আহমেদসহ ডা. এজাজ ও স্বাধীন খসরু। যার সবগুলোই পেয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। ‘তারা তিনজন’ নাটকে ডা. এজাজ ও ফারুক আহমেদের ভাগনে চরিত্রে অভিনয় করেন স্বাধীন খসরু।
১১ বছর পর নুহাশ হুমায়ূনের ‘ওরা তিনজন’ বিজ্ঞাপনে তেমনই চরিত্রে থাকছেন তাঁরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ ম য় ন আহম দ ফ র ক আহম দ হ ম য় ন আহম দ র স ব ধ ন খসর ফ র ক আহম দ ত নজন
এছাড়াও পড়ুন:
২২ ক্যাডার নিয়ে চলতেন স্বেচ্ছাসেবক দলের জিতু
বগুড়ায় মেয়েকে উত্ত্যক্ত ও বাবাকে খুনে অভিযুক্ত জিতু ইসলাম দলীয় প্রভাবে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কথায় কথায় যাকে-তাকে অহেতুক মারধর করতেন। চলতেন ২২ জনের ক্যাডার বাহিনী নিয়ে। তারা সবাই নানা অপকর্মে জড়িত এবং একাধিক মামলার আসামি। তাঁর আয় চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা থেকে। গতকাল রোববার এলাকায় গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা যায়, জিতু ফুলবাড়ী কারিগরপাড়ার মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে। ২০০৩ সালে এলাকায় বালু ব্যবসা নিয়ে প্রতিপক্ষ রবিউল ইসলামকে খুন করেন। সেই মামলায় তাঁর ১৪ বছর সাজা হয়। সাজা খেটে তিন বছর আগে বের হন। এর পর এলাকায় গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। তাঁর বাহিনীতে যে ২২ জন সদস্য, তারা কেউ রাজনৈতিক দলের পদ-পদবিতে নেই। হত্যা মামলা ছাড়াও জিতুর বিরুদ্ধে একটি মাদক ও একটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
ফুলবাড়ীর এক মুদি দোকানি বলেন, জিতু মাঝেমধ্যে তাঁর দোকান থেকে বাকি নিতেন। দু’বছরে বাকির পরিমাণ প্রায় ৪৮ হাজার টাকা হয়। তখন একদিন টাকা চান। এ কারণে জিতু তাঁকে মারধর করে নাকে খত নেন।
বৃন্দাবন এলাকার আরেক ব্যবসায়ী বলেন, মাঝেমধ্যে জিতু তাঁর বাহিনী নিয়ে হাজির হতেন। মোটা অঙ্কের চাঁদা চাইতেন। চাঁদার কমপক্ষে অর্ধেক দিয়ে তবে নিস্তার পাওয়া যেত। এ ছাড়া ঈদে সেলামির নামে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো তাঁকে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী জানান, তাঁর কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা চান জিতু। না দেওয়ায় দোকানে ককটেল হামলা করেন। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় আগস্টের পর জিতু বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এলাকার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নিয়ে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। ছোট ভাই মিতুলও তাঁর বাহিনীর সদস্য।
জিতু গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সহসাধারণ সম্পাদকের পদ পান। সন্ত্রাসী হয়ে দলের পদ পাওয়ায় এলাকায় তাঁকে নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পদ পেয়ে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
এলাকার এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘জিতুর কারণে আমরা মুখ খুলতে পারি না। সে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার মাধ্যমে এলাকা অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের পদ-পদবি পেয়ে ভয়ংকর হয়ে ওঠে। তার নির্যাতনের শিকার অর্ধশতের কম হবে না। তার বখাটেপনার কারণে কেউ মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি হতো না।’
এক বছর আগে থেকে ফুলবাড়ির পাশেই শহরের শিববাটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন জিতু। সেই এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক শাকিল হোসেন। শাকিলের মেয়ে স্থানীয় ভান্ডারী সিটি বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। এক মাস আগে ৫২ বছর বয়সী জিতু বিয়ের প্রস্তাব দেন শাকিলের মেয়েকে। বিষয়টি শাকিল জেনে রাগ করেন। জিতুর ওপর চড়াও হন। কিছুতে রাজি না হলে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকেন জিতু। তাঁর মেয়েকেও উত্ত্যক্ত করতেন। এরই এক পর্যায়ে শনিবার বিকেলে শাকিলকে পিটিয়ে খুন করেন জিতু ও তাঁর বাহিনী।
এ হত্যার ঘটনায় জিতুকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে গতকাল রোববার বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা করেছেন শাকিলের স্ত্রী মালেকা খাতুন। পুলিশ শনিবার রাতেই জিতু ও তাঁর সহযোগী মতি এবং বিপ্লবকে আটক করে।
সন্ত্রাসীকে দলের পদ দেওয়ার বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার মুকুল বলেন, ‘আমি জানতাম না, সে দলের নাম ভাঙিয়ে এসব অপকর্ম করছে। আমরা তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছি।’ শনিবার রাতে স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানের সই করা বিবৃতিতে জিতু ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানানো হয়।
বগুড়া সদর থানার ওসি হাসান বাসির বলেন, ‘এ মামলার অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফুলবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জোবায়ের খান জানান, গতকাল জিতুসহ তিন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে হত্যার প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম জেলা শাখা। গতকাল বিকেলে শহরের সাতমাথায় সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট দিলরুবা নূরী এতে সভাপতিত্ব করেন।