হামাসের হস্তান্তর করা চার মরদেহের একটি কোনো জিম্মির নয়, দাবি ইসরায়েলের
Published: 21st, February 2025 GMT
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস যে চার জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে, তার মধ্যে একটি গাজায় আটক থাকা কোনো জিম্মির নয় বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
আজ শুক্রবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ দাবি করে। হামাস এরই মধ্যে নড়বড়ে যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে বলেও অভিযোগ করেছে তারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, হস্তান্তর করা মরদেহগুলোর মধ্যে একটি আলোচিত বিবাস পরিবারের শিশু কেফির বিবাস ও অন্যটি তার ভাই আরিয়েলের বলে শনাক্ত করা হয়েছে। তৃতীয় মরদেহটি তাদের মা শিরির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁর কিংবা অন্য কোনো জিম্মির সঙ্গে এ মরদেহের মিল পাওয়া যায়নি। মরদেহের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি।
এক বিবৃতিতে শিরি ও সব জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, এটি হামাসের ভয়াবহ লঙ্ঘন, যারা চুক্তি অনুসারে চার নিহত জিম্মির মরদেহ ফিরিয়ে দিতে বাধ্য।
এদিকে জিম্মি ওদেদ লিফশিৎসের পরিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তাঁর মরদেহ আনুষ্ঠানিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবির বিষয়ে হামাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার সময় জিম্মি হওয়া শিশু কেফির বিবাস, আরিয়েলসহ চার মরদেহ হস্তান্তর করার পর সংগঠনটির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
হামাসের সদস্যরা জনসম্মুখে সাজিয়ে রাখা চারটি কালো কফিন হস্তান্তর করেন। এ সময় ফিলিস্তিনি জনতা ও হামাসের অনেক যোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন। এভাবে মরদেহ হস্তান্তরের নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
আরও পড়ুনমা ও দুই শিশুসহ চার জিম্মির মরদেহ গাজা থেকে ইসরায়েলে ফিরল ২০ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় গত মাসে স্বাক্ষরিত গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীন কেফির, আরিয়েল, তাদের মা ও লিফশিৎসের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
মরদেহগুলোর কফিনবাহী গাড়ির বহর যখন এগেচ্ছিল, তখন গাজা সীমান্তের কাছে বৃষ্টির মধ্যে ইসরায়েলিরা শ্রদ্ধা জানাতে রাস্তার পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিলেন।
ইসরায়েলের নির ওজ এলাকা থেকে কেফির, আরিয়েল, তাদের মা শিরি ও বাবা ইয়ার্ডেনকে জিম্মি করা হয়েছিল। ওই সময় কাফির বিবাসের বয়স ছিল ৯ মাস।
আরও পড়ুনগাজায় দ্বিতীয় ধাপে যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলতি সপ্তাহে আলোচনা শুরু করবে ইসরায়েল১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫হামাস ২০২৩ সালের নভেম্বরে বলেছিল, বিবাস পরিবারের ছেলেরা ও তাদের মা ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। কিন্তু ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সে সময় তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
চলতি মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইয়ার্ডেন বিবাসকে গাজা থেকে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
ওদিকে লিফশিৎসকে যখন নির ওজ থেকে অপহরণ করা হয়েছিল, তখন তাঁর বয়স ছিল ৮৩ বছর। তাঁর স্ত্রী ইয়োশেভেদকেও অপহরণ করা হয়েছিল। তাঁর বয়স ছিল ৮৫ বছর। অবশ্য দুই সপ্তাহ পর অন্য এক নারীর সঙ্গে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনইসরায়েলি ৩ জিম্মি মুক্ত, কারামুক্তি পেলেন ৩৬৯ ফিলিস্তিনি১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় অসদাচরণের অভিযোগে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তকৃতরা হলেন: গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান মনি, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল্লা আল মামুন, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোছাঃ রাহানুমা তাজনীন, নির্বাহী প্রকৌশলী ফারহানা আহমেদ, সহকারী প্রকৌশলী মফিজুল ইসলাম এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের সহকারী স্থপতি শিরাজী তারিকুল ইসলাম।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জানায়, কর্মস্থলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকায় অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশের মাধ্যমে এ সকল কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, মনিরুজ্জামান মনি টরেন্টো ইউনিভার্সিটিতে ডক্টোরাল প্রোগ্রামে অংশ নিতে ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি কাটানোর পর পরবর্তী সময়ে অনুমতি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী তাকে ২১ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে বরখাস্ত করা হয়।
আবদুল্লা আল মামুন পিএইচ.ডি করতে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। এরপর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা মোতাবেক তাকে ১৫ মে ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
মোছাঃ রাহানুমা তাজনীন ২০২১ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জুলাইয়ের ৭ তারিখ পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে অননুমোদিতভাবে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ২ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
ফারহানা আহমেদ ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
মফিজুল ইসলাম ২০২৩ এর ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি কাটালেও পরে ছুটি না নিয়ে অফিসে অনুপস্থিত। তাকে ২৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
শিরাজী তারিকুল ইসলামও ২০২২ সালের ১২ মে থেকে ছুটি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাকে ২১ মে ২০২৫ তারিখে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//