ধামরাইয়ে স্ত্রীর সামনে সাবেক ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা
Published: 21st, February 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্ত্রীর সামনে পিটিয়ে বাবুল হোসেন (৫০) নামে সাবেক এক ইউপি সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের মাখুলিয়া এলাকায় কৃষি জমিতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, জুমার নামাজের সময় স্থানীয় আকসির নগর প্রকল্পের ভেতরে একটি জমিতে সরিষা মাড়াইয়ের কাজ করছিলেন। এসময় সেখানে টেঁটা, হাতুড়ি, লোহার পাইপসহ দেশিয় অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হন স্থানীয় ৫-৬ জন ব্যক্তি। একপর্যায়ে তারা বাবুলকে মারধর করেন। আহত অবস্থায় তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন বলেন, “আমার সামনেই আমার স্বামীকে তারা মেরেছে। আমার স্বামী ফসলের মাঠে বাইক দিয়ে সরিষা মাড়াই করছিলেন। আমাদের পাড়ার ৫-৬ জন টেঁটা, হাতুড়ি, লোহার পাইপ নিয়ে সেখানে আসে। কিছু না বলে তাকে একটু দূরে নিয়ে ঘেরাও করে চোখ তুলে ফেলে ও হাত-পা ভেঙে হত্যা করে।”
তিনি বলেন, “আফসান, মনির, আরশাদ ও আরশাদের ছেলেসহ আরও দুজন ছিল। আকসির নগর হাউজিংয়ের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিল একসময়। তবে এখন তাকে কোথাও যেতে দেই না।”
বাবুলের ভাবী মুক্তা আক্তার বলেন, “আজ বাবুলকে মেরে ফেলেছে। কিছু দিন আগে তার বাবাকেও মেরে পুকুরে ফেলে রেখেছিল।”
সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা.
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, “আকসির নগর আবাসিক প্রকল্পের জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ হত্যা ঘটেছে বলে জেনেছি। ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।”
এর আগে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আকসির নগর প্রকল্পের ভেতরে একটি পুকুর থেকে নিহত বাবুলের বাবা ইদ্রিস আলীর মরদেহ উদ্ধার করেছিল ধামরাই থানা পুলিশ।
ঢাকা/সাব্বির/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জামালপুরে সমাজচ্যুতির ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন অভিযুক্ত মাতব্বররা
জামালপুর শহরে সাতটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করার ঘটনায় ভুল স্বীকার করে ভুক্তভোগীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত মাতব্বররা। ঢাকঢোল পিটিয়ে ও মাইকিং করে সমাজচ্যুতির ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন পর রোববার রাতে বসে নতুন সালিশ বৈঠক। এতে সেই মাতব্বররা নিজেদের ভুল স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একসঙ্গে বসবাসের অঙ্গীকার করেন। পরে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়, সাতটি পরিবারের বিরুদ্ধে নেওয়া আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
পারিবারিক বিরোধের জের ধরে জামালপুর শহরের দাপুনিয়া পশ্চিমপাড়ায় গত শুক্রবার রাতে বসে সালিশ বৈঠক। এতে ঘোষণা করা হয়, ‘মরহুম আজিজুল হক, ইসমাইল হোসেন মৌলভি, মুনসুর মিয়া, মানিক, জানিক, মজিবর ও নান্নুর পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে। এসব পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কেউ মেলামেশা, লেনদেন বা সামাজিক সম্পর্ক রাখতে পারবে না। এ নিষেধ অমান্যকারীকেও একঘরে করে দেওয়া হবে।’ পরে মাইকে এলাকাজুড়ে তা প্রচার করা হয়। এতে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
পরদিন বিকেলে ইসমাইল হোসেন, মুনসুর মিয়াসহ ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে জামালপুর সদর থানায় অভিযোগ দেন। তারা জানান, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে প্রভাবশালীরা সালিশ ডেকে একতরফাভাবে মুনসুর মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন। জরিমানার টাকা না দেওয়ায় সাত পরিবারকে সমাজচ্যুতির ঘোষণা দিয়ে একঘরে করে রাখা হয়েছে।
এই অভিযোগ পেয়ে তৎপর হয় পুলিশ প্রশাসন। রোববার রাত ১০টার দিকে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে এলাকার কয়েকশ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াহিয়া আল মামুন বলেন, উভয় পক্ষ এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের অঙ্গীকার করেছে। অভিযোগকারীরা তাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।