কয়েক দফা স্থগিতের পর রোববার রাজবাড়ীতে বিএনপির সমাবেশ
Published: 22nd, February 2025 GMT
সারা দেশে জেলা পর্যায়ে সমাবেশ করছে বিএনপি। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী রাজবাড়ীতেও সমাবেশ করার কথা জানানো হয়; কিন্তু নানা কারণে রাজবাড়ীতে কয়েক দফা স্থগিত করা হয়। কাল রোববার সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও গতকাল শুক্রবার কেন্দ্রের বরাত দিয়ে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেয় জেলা বিএনপি। পরে আজ শনিবার সন্ধ্যায় আবার কালকের সমাবেশ হওয়ার কথা জানানো হয়।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি জেলায় পর্যায়ক্রমে বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজবাড়ীতেও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কেন্দ্র থেকে প্রথমে ১২ ফেব্রুয়ারি সমাবেশের কথা জানায়; কিন্তু তাঁর স্ত্রী অসুস্থ থাকায় ১২ ফেব্রুয়ারি করা হয়নি। পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি সমাবেশ করতে বলা হয়; কিন্তু স্থানীয় কিছু জটিলতার কারণে ১৯ ফেব্রুয়ারিও স্থগিত করে কাল ২৩ ফেব্রুয়ারি করার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, ২৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে যোগ দিতে স্থানীয়ভাবে অনেক কাজ থাকায় ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজবাড়ীর কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়। আজ সন্ধ্যার দিকে কেন্দ্র থেকে কাল রোববারের সমাবেশ সম্পন্ন করতে আবার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যার আলোকে সমাবেশ সফল করতে স্বল্প সময়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে রাজবাড়ী জেলা বিএনপি দুটি ধারায় বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ও সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরুল হক। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর রশিদ ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া।
কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা পর্যায়ের সমাবেশ সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিলেও দুটি পক্ষ আলাদা সমাবেশ করতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির কাছে প্রস্তাব দেয়; কিন্তু কেন্দ্র থেকে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দুই পক্ষের সবাইকে একত্র হয়ে একটি সমাবেশ করতে বলা হয়। যার আলোকে জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি উভয় পক্ষের নেতাদের নিয়ে একাধিকবার বৈঠকে বসেন। বৈঠকে সমাবেশস্থলে একটি মঞ্চ থাকলেও ভেন্যুতে আড়াআড়ি বাঁশের বেড়া দিয়ে দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের আলাদা বসার সিদ্ধান্ত হয়। এ নিয়ে সাধারণ নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা ধরনের সমালোচনা তৈরি হয়।
বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী বলেন, জেলা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল দীর্ঘদিনের। কেন্দ্রের নির্দেশে সমাবেশ সফল করতে দুই পক্ষের নেতাদের নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে তিন দফা বৈঠক হয়েছে। সর্বসম্মতিক্রমে কাল রোববার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও গতকাল বিকেলে স্থগিত করা হয়। আজ সন্ধ্যায় আবার কেন্দ্র থেকে সমাবেশ সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার, ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান ও মাসুকুর রহমানের উপস্থিত থাকার কথা আছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক