২৯ বছর পর ঘরের মাঠে আইসিসি টুর্নামেন্ট। ঐতিহাসিক এই আসর শুরু হতে না হতেই কি দর্শক হয়ে যাবে পাকিস্তান! প্রতিবেশীর এমন ঘোর বিপদের সময় আবার রানে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন একজন। তিনি হলেন বিরাট কোহলি, যাঁর ব্যাটে রান মানেই পাকিস্তানের হার অবধারিত। তাই মিরাকল বলে যদি কিছু থাকে, সেটা ঘটানোর আজই মোক্ষম সময় বাবর-রিজওয়ানদের। মরুর বুকে আবারও কি ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ হয়ে উঠবে পাকিস্তান!

অনুশীলনে ঘাম ঝরানোর ব্যাপারে কোহলির জুড়ি মেলা ভার। ফিটনেস-পরিশ্রমের বেলায় তাঁর ধারেকাছে কেউ নেই। সেই কোহলি গতকাল যা করলেন, তা দেখে ভারতীয় টিমের পিছু ধাওয়া করা সাংবাদিকদেরও চোখ ছানাবড়া। গতকাল ভারতের অনুশীলন শুরু হয়েছে দুপুর ১টায়। কোহলি মাঠে আসেন তারও দেড় ঘণ্টা আগে। তারকা এ ব্যাটারের সঙ্গে ছিলেন ব্যাটিং কোচ সীতাংশু কোটাক, থ্রো-ডাউন বিশেষজ্ঞ নুয়ান সেনাবীরত্নে ও  ডি রাঘবেন্দ্র। নেটে স্থানীয় বোলারদের বিপক্ষে ব্যাট করেন তিনি। তখন ড্রাইভ, পুল, কাটের মতো শটগুলো বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলেন। নেট থেকে বেরিয়েও ড্রেসিংরুমে যাননি তিনি। প্যাড খুলে সীমানা দড়ির ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে থ্রো-ডাউনে লম্বা সময় ধরে নক করেন। এ সময় তাঁকে বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা যায়। সতীর্থদের সঙ্গে হাসিঠাট্টায়ও মেতেছিলেন কোহলি। মানসিক এই চাঙ্গাভাবই তাঁকে রানে ফিরতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। রোহিত শর্মা, শুভমান গিলরা দারুণ ফর্মে আছেন। কোহলিও রানে ফিরলে ভারতকে আটকানো কঠিন হয়ে যাবে।

অনুশীলনে পাকিস্তানও বেশ সিরিয়াস ছিল। দুবাই স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটের আলোয় বেসবল খেলে অনুশীলন শুরু করে তারা। এর পর কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে পুরো স্টেডিয়ামজুড়ে ফিল্ডিং অনুশীলন করে। তার পরও পাকিস্তান যে চাপে আছে, সেটা সংবাদ সম্মেলনে কোচ আকিভ জাবেদকে দেখে বোঝা গেছে। খেলোয়াড়দের চাপ থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করছেন তিনি। চাইছেন, মুক্তভাবে যেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ম্যাচটা খেলতে পারেন। তার পরও বাদ পড়ার শঙ্কা কি মন থেকে সরাতে পারবেন তারা! নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রথম ম্যাচ হারায় আজ ভারতের কাছে পরাজিত হলেই বিদায়। আসরে টিকে থাকার এ লড়াইয়ে পাকিস্তান দলে একটি পরিবর্তন আসছে নিশ্চিত। ফখর জামানের বদলে ডাক পা‌ওয়া ওপেনার ইমাম-উল হকের আজ মাঠে নামা নিশ্চিত। বাবর আজমের সঙ্গে ওপেন করতে পারেন তিনি। স্কোয়াডের আরেক রিজার্ভ ব্যাটার হলেন উসমান খান। ফর্মে না থাকা সৌদ শাকিলের জায়গায় দেখা যেতে পারে উসমানকে। তিনি চারে ব্যাট করতে পারেন। ভারতীয় দলে অবশ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। জ্বরের কারণে ঋষভ পন্ত গতকাল মাঠেই আসতে পারেননি, অনুশীলন তো দূরের বিষয়। তাই আজও লোকেশ রাহুলই গ্লাভস হাতে দাঁড়াবেন।

আসরের উদ্বোধনী দিনের আগের দিন দুবাইয়ে ভালো বৃষ্টি হলেও এর পর থেকে দুবাইয়ের আকাশ পরিষ্কার। আজও এখানে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে সন্ধ্যার পর আকাশ কিছুটা মেঘলা হতে পারে। তখন যদি বাতাস থাকে, তাহলে পেসাররা সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া এখানে স্লো বোলাররা বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে গত ম্যাচে তো বটেই, কয়েক দিন আগে এখানে আয়োজিত আইএল টি২০তেও মন্থর উইকেটের দেখা মিলেছে। এ ধরনের উইকেটের সদ্ব্যবহার করার জন্য ভারতীয়রা তাদের স্কোয়াডে পাঁচজন স্পিনার রেখেছে। পাকিস্তানের লেগি আবরার আহমেদও কার্যকর হয়ে উঠতে পারেন। মন্থর উইকেটের কারণে পরে ব্যাট করা দল চাপে থাকবে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় সহ-অধিনায়ক শুভমান গিল।

আইসিসি ইভেন্টে প্রায় একচ্ছত্র আধিপত্য ভারতের। এখন পর্যন্ত ২০-৩-এ এগিয়ে তারা। তবে এই অসম প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও একমাত্র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সমানে সমানে আছে পাকিস্তান। এই একটা মাত্র কারণেই আশায় বুক বাঁধছে পাকিস্তান।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু

৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এ বিশেষ যাতায়াত সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে শাখা ছাত্রদলের কর্মী নাফিস ইকবাল পিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে এ তথ্য জানিয়ে পোস্ট দেন। একইসঙ্গে শাখা সভাপতি সাগর নাইম ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপুও তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে পরীক্ষার্থীদের এ সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জন ও বিতরণের জায়গা: ইউজিসি চেয়ারম্যান

ছাত্রদল জানিয়েছে, ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাস ছাড়বে। একটি ঢাকা রুটে এবং অপরটি ময়মনসিংহ রুটে যাবে। প্রতিটি বাসে ৫০ জন করে মোট ১০০ জন শিক্ষার্থী এই ফ্রি সার্ভিসের আওতায় যাতায়াত করতে পারবেন। এজন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই আগাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গুগল ফর্মের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ এই সার্ভিসের সুবিধা নিতে পারবেন না।

শিক্ষার্থীদের জন্য এ উদ্যোগ ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী পোস্ট দিয়ে ছাত্রদলের এ পদক্ষেপকে ‘শিক্ষার্থীবান্ধব ও সময়োপযোগী উদ্যোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

শাখা সভাপতি সাগর নাইম তার পোস্টে বলেন, “প্রতি বছর বিসিএসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের আলো ছড়িয়ে দেন। আমরা চাই এ সুনাম আরো দূরে ছড়িয়ে পড়ুক, আরো উজ্জ্বল হোক। এ ধারাবাহিক সাফল্যের পথে আপনাদের পাশে থাকতে, ভালোবাসা ও সম্মান জানাতে মাভাবিপ্রবি ছাত্রদল ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে।”

এ বিষয়ে শাখা সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপু বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। গত বিসিএসে আমাদের বড় ভাই বিসিএস প্রশাসনে প্রথম হয়েছেন। এটি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, সারা দেশের জন্যই গর্বের বিষয়। সেই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমরা এবার পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করেছি।”

তিনি বলেন, “বিশেষ করে অনেক নারী শিক্ষার্থী আছেন, যারা ক্যাম্পাস থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র অনেক দূরে হওয়ায় অংশ নিতে পারেন না। আবার অনেকে যানবাহন না পেয়ে দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। আমরা চাইনি কেউ যেন যাতায়াত সমস্যার কারণে বিসিএস পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়েন। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাইয়ের সহায়তায় আমরা এ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছি।”

ঢাকা/আবিদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ