সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নিজের বাড়িতে যাওয়ার জন্য কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। সেখানে তেমন কিছু নেই। নিজের এলাকায় যাওয়ার জন্য তিনি কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প নেন। আপনারা (সাংবাদিকেরা) খোঁজ নিয়ে দেখেন।’

আজ বুধবার ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শফিকুল আলম এসব কথা বলেন। পরিকল্পনা কমিশনে এই আলোচনা অনুষ্ঠান হয়।

শফিকুল আলম মনে করেন, আরও ১০ বছর পরে এই টানেল হলে ভালো হতো। তখন হয়তো কর্ণফুলীর ওপারে অনেক কিছু হবে। তিনি আরও বলেন, টানেল এলাকায় ৪৫০ কোটি টাকায় সাত তারকা মানের হোটেল করা হয়েছে, এটা অপচয়।

সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, বর্তমান সরকার এমন এক অর্থনীতি পেয়েছে, যা একরকম ধসে পড়ার মুখে ছিল। যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারত। গত ছয় মাসে অর্থনীতির অকল্পনীয় উন্নতি হয়েছে।

শফিকুল আলম মনে করেন, বিগত সরকার জ্বালানি খাতকে চুরির কারখানা বানিয়েছে। ক্যাপাসিটি চার্জের মাধ্যমে ডাকাতির বন্দোবস্ত করেছে। রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায় এই ডাকাতি হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার অপ্রয়োজনীয় অনেক প্রকল্প করেছে বলে অভিযোগ করেন শফিকুল আলম। বলেন, টাকা নেই, কিন্তু ৫৬০টি মসজিদ বানানো হয়েছে। এমন রেলপথ বানিয়েছে, যেখানে দিনে একটি ট্রেন চলে। প্রকল্পের ব্যয় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। পছন্দের লোককে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব করা হয়েছে। বাংলাদেশের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার হয়েছে। দেশে থাকলে অন্তত কর্মসংস্থান হতো। কানাডায় বেগমপাড়া হয়েছে, লন্ডনে ব্লকের পর ব্লক কেনা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখন অর্থনীতির ‘যক্ষ্মা’ ঠিক করছে, পরে স্বাস্থ্য ঠিক করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দুই মাস ধরে মূল্যস্ফীতি কমছে। জুন মাসের মধ্যে ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন শফিকুল আলম। এখন প্রয়োজন জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা।

ব্যাংক খাত নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, আমানতকারীরা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না—এ বার্তা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বারবার দিচ্ছেন। আগের সরকার এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকলে কেউ এক টাকাও ব্যাংকে রাখতেন না।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডিজেএফবি সভাপতি হামিদ উজ জামান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার পথে কোনো বাধা দেখছি না: নজরুল ইসলাম খান

আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে বিএনপি কোনো বাধা দেখছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার পথে কোনো বাধা দেখছি না। যেহেতু বাধা দেখছি না, সেহেতু এটা না–ও হতে পারে, সেই দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। আমরা অপেক্ষা করছি, আশা করব শিগগিরই সরকার এ ব্যাপারে তাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য নিয়ে আসবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সেই অনুযায়ী পরামর্শ দেবেন।’

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে যেসব প্রক্রিয়া করা প্রয়োজন বিএনপির পক্ষ থেকে তা করা হচ্ছে, তবে ৮২৬টির মধ্যে ৫১টি সুপারিশ নিয়ে ভিন্ন মত আছে।

এর আগে হাটহাজারীতে পৌঁছে সেখানে হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির মাওলানা শাহ আহমদ শফী ও জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত করেন বিএনপি এই দুই নেতা। পরে মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমেদ কাশেমী এবং শায়খুল হাদীস শেখ আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

হাটহাজারী মাদ্রাসায় জুমার নামাজ আদায় শেষে সেখানে দুপুরের আহার করেন বিএনপির নেতারা। পরে তাঁরা চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাবুনগর আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম মাদ্রাসায় হেফাজত ইসলামের আমির মাওলানা শাহ মুহিববুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রওনা হন।

বিএনপির দুই স্থায়ী কমিটির সঙ্গে দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দিন, উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির নেতা নূর মোহাম্মদ, সরোয়ার আলমগীর; দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিন, জাসাস চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি কাজী সাইফুল ইসলাম, ফটিকছড়ি উপজেলার বিএনপি আহ্বায়ক আজিম উল্লাহ বাহার প্রমুখ রয়েছেন।

বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সৌজন্য সাক্ষাতে হাটহাজারী মাদ্রাসায় গেছেন দলের নেতারা। বিএনপি নেতারা সৌজন্য সাক্ষাৎ বললেও আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটির নেতারা হেফাজতে ইসলামের নেতারাসহ আলেম-ওলামাদের সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়েছেন।

গত ২০ জুলাই ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ সমাবেশে চট্টগ্রামে আসলে হাটহাজারী আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ নেতা-কর্মীরা। নাহিদ ইসলামের সঙ্গে ছিলেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল আরিফ প্রমুখ। নেতা-কর্মীরা হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ