চলন্ত বাসে ডাকাতি: মুহিতকে আরো ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
Published: 26th, February 2025 GMT
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানীর ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল ইসলাম মুহিতকে আবারও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে মির্জাপুর আমলি আদালতে হাজির করে। আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট মোসাম্মৎ রুমি খাতুন চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মুহিতসহ তিন জনকে পুলিশ গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সাভারের গেন্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পর দিন শনিবার শহিদুলকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে এনেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত অপর দুইজন মো.
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) এসআই মো. আহসানুজ্জামান জানান, প্রথম দফা পাঁচ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদকালে শহিদুল ইসলাম মুহিদুল মুহিত ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। ডাকাত চক্রের বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রিমান্ডে আনা এই মামলার অপর আসামি আলমগীর শেখের সামনে মুখোমুখি করে শহিদুল ইসলাম মুহিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ ও সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। তাই দ্বিতীয় দফা রিমান্ড চাওয়া হয়।
এই ঘটনায় সোমবার আলমগীর শেখ ও রাজিব শেখ নামে দুই জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের গোয়েন্দা পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এই ডাকাতি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোট পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী যাত্রীবাহী একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা লুণ্ঠনের সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানী করে। ঘটনার তিনদিন পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে মির্জাপুর থানায় ওমর আলী নামে এক যাত্রী বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।
ঢাকা/কাওছার/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল
জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত
লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, “২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।”
“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ