মাগুরায় বিএনপির সদস্য ফরম সংগ্রহ নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ২০
Published: 2nd, March 2025 GMT
মাগুরা সদর উপজেলার আলোকদিয়া বাজারে বগিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ফরম সংগ্রহ নিযে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার (১ মার্চ) বিকেলে ঘটনাটি ঘটে।
আহতরা জানান, শনিবার বিকেলে বগিয়া ইউনিয়নের আলোকদিয়া বাজারে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সংগ্রহের জন্য ফরম বিতরণ চলছিল। এ নিয়ে বগিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দুই সাবেক চেয়ারম্যান নিজামউদ্দিন ও আনিচ সরদারের সমর্থকদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। পরে দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। হামলা-পাল্টা হামলায় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে- আলমামুন (৪০), শিমুল (২৫), রাহাদুজ্জামান (১৬), মাহুরাব (৪০), কুরবান (৩২), মিজানুর (৫৫), রেজা (২৩), বিল্পব (৩৫) ও শামীমকে (২৩) মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
পাওনা টাকা নিয়ে ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
হাতিয়ায় ঘাট দখল নিয়ে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, নারীসহ আহত ১০
আনিচুর রহমানের সমর্থক শামীম আহম্মেদ অভিযোগ করেন, “বগিয়া ইউনিয়ন বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে আগে থেকে বিরোধ চলছিল। এরই মধ্যে ইউনিয়নে দলের সদস্য সংগ্রহের জন্য ৯ জনের একটি সার্চ কমিটি দেওয়া হয়। সার্চ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯টি ওয়ার্ডের বিএনপির সমর্থকদের ডেকে ফরম বিতরণ শুরু হয়।”
তিনি আরো বলেন, “অনুষ্ঠানের শুরু দিকে সব ঠিক থাকলেও পরে আনিচ চেয়ারম্যান ও নিজাম চেয়ারম্যানের গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।”
নিজামউদ্দিনের সমর্থক আলমামুন বলেন, “বিকেলে আলোকদিয়া বাজারে স্থানীয় বিএনপির সদস্য ফরম সংগ্রহ ও বিতরণ চলছিল। এ সময় জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। প্রথম দিকে অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে শুরু হলেও শেষের দিকে দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।”
তিনি আরো বলেন, “বিএনপির কমিটির মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থককে সদস্য ফরম প্রদান করা হয়। যা থেকে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়।”
মাগুরা সদর থানার ওসি আয়ুইব আলী বলেন, “বগিয়া স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের মধে সংর্ঘষ ঘটনা ঘটেছে।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ আহত ব এনপ র সদস য সদস য ফরম স ঘর ষ র সমর
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।
আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।