মধ্যরাতে ধোলাইখালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর, উত্তেজনা
Published: 4th, March 2025 GMT
রাজধানীর ধোলাইখাল এলাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতের এই ঘটনায় আট শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নাহিদ ইসলাম, জাহিদ হাসান, ইশতিয়াক হোসেন, আল মামুন, ইতিহাস বিভাগের হাবিবুর রহমান, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের আবু বকর সিদ্দিক, আকাশ ও আবু সাঈদ মো.
আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজনকে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁরা হলেন আবু বকর সিদ্দিক, আকাশ ও আবু সাঈদ।
আহত বাকি পাঁচ শিক্ষার্থী নাহিদ, জাহিদ, ইশতিয়াক, আল মামুন ও হাবিবুর রহমানকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ঘটনার সূত্রপাত গতকাল রাত ১০টার দিকে ধোলাইখাল এলাকার টিপু সুলতান সড়কে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ধোলাইখাল এলাকা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। ভুলক্রমে তিনি নির্মাণাধীন একটি ভবনের ঢালাইয়ের ওপর পা রাখেন। এতে স্থানীয় কয়েকজন তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থী। তাঁরা যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন তাঁদেরও আটকে রেখে মারধর করেন।
আহত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, মারধরে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় বিএনপির নেতা শহিদুল হক সহিদ। তিনি ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড (ওয়ারী থানা) বিএনপির নেতা। এ ছাড়া তিনি নবাবপুর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে গতকাল রাতে একাধিকার শহিদুলের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মারধরের খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা শহিদুলের নবাবপুর এলাকার বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, স্থানীয় একটি ক্লাবে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাত একটার দিকে ওয়ারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা শহিদুলের বাড়িতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা দিতে বাড়িটি ঘেরাও করে রাখেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহত শ ক ষ র থ ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা