জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
Published: 4th, March 2025 GMT
রাজধানীর ধোলাইখালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় এক বিএনপির নেতার হামলার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।
আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে ’৭১–এর গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘যে হাত শিক্ষার্থী মারে, সে হাত ভেঙে দাও’, ‘আমার শিক্ষার্থী ভাইকে মারে, প্রশাসন কী করে’, ‘হামলাকারীর বিচার চাই, বাঁচার জন্য বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। বিক্ষোভ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, আহত শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে ধোলাইখাল এলাকার টিপু সুলতান সড়কে ঘটনার সূত্রপাত। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ধোলাইখাল এলাকা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। ভুলক্রমে তিনি নির্মাণাধীন একটি ভবনের ঢালাইয়ের ওপর পা রাখেন। এতে স্থানীয় কয়েকজন তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থী। তাঁরা যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন তাঁদেরও আটকে রেখে মারধর, হামলা করেন।
আহত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, মারধর–হামলায় নেতৃত্ব দেন স্থানীয় বিএনপির নেতা শহিদুল হক সহিদ। তিনি ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড (ওয়ারী থানা) বিএনপির নেতা। এ ছাড়া তিনি নবাবপুর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তবে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে আজ বিভিন্ন সময় শহিদুল হককে ফোন দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
আজ জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাহীন মিয়া বলেন, ‘গতকাল ধোলাইখালে শিক্ষার্থীদের ওপর যে ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে, আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। হামলাকারীরা যে দল, গোষ্ঠী, মতেরই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নে আমরা একতাবদ্ধ আপসহীন।’
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী শহিদুল ও তাঁর দোসররা যে দলেরই হোক, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। নতুবা ভিন্ন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে তার দায়ভার আপনাদের গ্রহণ করতে হবে।’
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইভান তাহসীব বলেন, ‘কালকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েও কেন সঙ্গে সঙ্গে তাদের (হামলাকারীদের) আটক করেনি?.
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গতকাল রাতে ধোলাইখাল এলাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এতে আট শিক্ষার্থী আহত হন। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নাহিদ ইসলাম, জাহিদ হাসান, ইশতিয়াক হোসেন ও আল মামুন; ইতিহাস বিভাগের হাবিবুর রহমান; ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের আবু বকর সিদ্দিক, আকাশ ও আবু সাঈদ মো. আকিব। তাঁদের মিটফোর্ড হাসপাতাল ও ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষ র থ দ র ওপর ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’
এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’
এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।