চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। 

বুধবার (৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

কর্মসূচিতে জানানো হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে জেল সুপারের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে উঠেছে। ফলে তারা কারাগারে সিট-বাণিজ্যের পাশাপাশি বন্দিদের স্বজনরা দেখা করতে গেলে টাকা দাবি করা হচ্ছে। যারা টাকা দিতে পারছেন তাদের সব সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে এসব অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। তা না হলে আগামীতে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকবেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক মুত্তাসিন বিশ্বাস বলেন, “গত কয়েক দিন আগে কারাগারে আমার ভাইকে দেখতে গেলে টাকা চাওয়া হয়। যারা টাকা চেয়েছিলেন তারা হলেন কারাগারে কর্মরত শরিফুল ও আকবর। আমার কাছ থেকে ১৫০০ টাকা নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে দিতে রাজি হন তারা। টাকাগুলো জমা দেয়ার সময় আমি ভিডিও করেছিলাম। পরে টাকাগুলো ফেরত দিয়ে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন শরিফুল ইসলাম।”

অভিযোগের বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেল সুপার মো.

শরিফুল ইসলাম বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে সেগুলো ভিত্তিহীন। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমরা কেউই জড়িত নই।”

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক নূরে আশিক তানভির, যুগ্ম সদস্যসচিব আহমেদ ইমতিয়াজ পারভেজ, সদস্য পারভেজ, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নেতা সাদ হোসেন মুজাহিদসহ অন্যরা।

ঢাকা/শিয়াম/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ