১. প্রতিদিন মিটিং

অনেক অফিসেই প্রতিদিন গড়ে কর্মঘণ্টার প্রায় অর্ধেক সময়ই কেটে যায় মিটিং করে। সেই মিটিংয়ের খুব সামান্য অংশই বাস্তবে কর্যকর হয়। এসব মিটিং করার ফলে একদিকে যেমন কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়, অন্যদিকে বাকি সময়ে কাজ শেষ করার চাপ বাড়ে। ফলে প্রায়ই কর্মীরা ‘ওভারটাইম’ করেও কাজ শেষ করতে পারেন না। ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত আর একরাশ হতাশা নিয়ে ঘরে ফেরেন। অ্যাডাম জানান, গড়ে সপ্তাহে ১ দিন মিটিং অফিসের কর্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য উপযোগী।        

আরও পড়ুনযে ১০ লক্ষণ দেখে বুঝবেন চাকরি ছাড়ার সময় এসে গেছে ৩১ অক্টোবর ২০২৪২.

সপ্তাহে ৫/৬ দিন অফিস

আধুনিক সময়ে সমস্যার আধুনিক সমাধান একান্ত কাম্য। আগে শারীরিকভাবে কাজের প্রয়োজন ছিল বেশি। সময়ের সঙ্গে ক্রমেই কায়িক শ্রমের জায়গা নিতে চলেছে সৃজনশীল কাজ। তাই এখন আর আগের মতো সপ্তাহে ৫ বা ৬ দিন অফিস করার প্রয়োজন নেই। ৪ দিনই যথেষ্ট। জাপান, বেলজিয়াম, নিউজিল্যান্ড, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ডের অনেক অফিসে সপ্তাহে ৪ দিন ‘ওয়ার্ক ডে’। এসব দেশে কর্মীদের অনেকে ৩ দিন অফিস আর ৪ দিন ছুটির জন্য আন্দোলন করছেন। এমনকি অফিসে সশরীর হাজির হয়ে কাজ করার প্রয়োজনীয়তাও কমে আসছে। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে বসে যেকোনো অফিসে কাজ করা সম্ভব, আমরা ইতিমধ্যে সে সময়ে ঢুকে পরেছি।

আরও পড়ুনদেশে বসে বিদেশে চাকরি, কেন জনপ্রিয় হচ্ছে ‘রিমোট জব’১৯ জানুয়ারি ২০২৫৩. বস–প্রথা 

আপনাকে কি কোনো কাজ করার আগে বসের অনুমতি নিতে হয়? আপনার ‘বস’কে তাঁর বসের অনুমোদন সাপেক্ষে চলতে হয়? এর মানে আপনার অফিসে স্বাধীনতা, নতুন উদ্ভাবন, সৃজনশীলতা, প্রতিনিয়ত পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সুযোগ নেই বললেই চলে। আধুনিক কর্মক্ষেত্রে বস-প্রথার দিন শেষ।

৪. তথাকথিত চাকরির পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার

চাকরির পরীক্ষায় যেসব প্রশ্ন আসে, এর সঙ্গে চাকরিতে আপনার যে দায়িত্ব, তার কী সম্পর্ক? মনে করুন, আপনি ব্যাংকে ক্যাশিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান। আর চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্ন এসেছে তেগুসিগালপা কোন দেশের রাজধানী? এভাবে প্রার্থী নির্বাচনের দিন শেষ। বরং চাকরিতে ওই ব্যক্তির যে দায়িত্ব, তাঁকে সে সম্পর্কিত কোনো সমস্যা সমাধান করতে দেওয়াই কি যুক্তিযুক্ত নয়? তাই চাকরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দক্ষতা যাচাই করতে ‘ডেমো’ নিন। যে চাকরিতে ধৈর্য্য মুখ্য, সেখানে ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিন।  

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট 

আরও পড়ুনরতন টাটা কেন একটা ‘চাকরি’ খুঁজছিলেন১৩ অক্টোবর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পর ক ষ কর র প চ কর র

এছাড়াও পড়ুন:

এখনই কেন ইরানের এ অপূরণীয় ক্ষতি করল ইসরায়েল

ইরানে এবার চালানো ইসরায়েলের হামলা আগের দুটি সামরিক অভিযানের তুলনায় শুধু বিস্তৃত ও তীব্রই ছিল না, এতে গত নভেম্বরে লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আক্রমণে ব্যবহৃত কিছু কৌশলও ব্যবহার করা হয়েছে। এ কৌশল হলো– শুধু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে আঘাত করা নয়, বরং দেশটির গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বকে হত্যা করতেও হামলা চালানো।

গতকাল শুক্রবার বিবিসির বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নেতাদের হত্যার কৌশল ওই সংগঠনের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি নিয়ে আসে। একটি টেকসই পাল্টা আক্রমণ চালানোর ক্ষমতার ওপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলেছিল। তেহরানে হামলার ফুটেজে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট ভবনগুলোতে আঘাত হানার দৃশ্য অনেকটা বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে ইসরায়েলের আক্রমণের চিত্রের মতো, যার পরিণতিতে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন। 

ইরানে এত বড় কোনো ব্যক্তি নিহত হননি বলে মনে হচ্ছে। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। কিন্তু অভিযানের প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের সামরিকপ্রধান, শক্তিশালী বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার হোসেইন সালামি এবং বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে দেশটির অভিজাতদের অভূতপূর্ব ক্ষতি করা হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এ অভিযান আরও কয়েকদিন ধরে চলতে পারে।

গত বছর ইসরায়েলে দুইবার হামলা চালায় ইরান। এবার তারা আরও তীব্র হামলা চালাতে পারে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু তেহরানের পক্ষে এ ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো এতটা সহজ হবে না। সম্ভবত নেতানিয়াহু হিসাবনিকাশ করেই এ বিরোধে উস্কানি দিয়েছেন। প্রশ্ন হলো, কেন তিনি এখনই আক্রমণ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলেন– যেটা তিনি এতদিন ধরে সমর্থন করে আসছিলেন। অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, এটি ইসরায়েলের অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়। 

নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছেন, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করলে ইসরায়েলের অস্তিত্বের হুমকিতে পড়বে। সম্প্রতি ইসরায়েলের এক ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা জানান, তারা জানতে পেরেছেন– ইরানের কাছে কয়েক দিনের মধ্যে ১৫টি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য পর্যাপ্ত উপকরণ রয়েছে। 

ইরানে এ হামলার পেছনে ভিন্ন একটি কারণও থাকতে পারে। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির একটি চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আগামীকাল রোববার ষষ্ঠ দফায় আলোচনা শুরু হতে চলেছে। এতে কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় নেতানিয়াহুর কাছে মনে হতে পারে, সম্ভাব্য ‘অগ্রহণযোগ্য’ চুক্তি বন্ধের এটাই উপযুক্ত সময়। 

সামরিক দিক থেকে তিনি ও তাঁর উপদেষ্টারা হয়তো বুঝতে পারছেন– শুধু ইরানই নয়, বরং এ অঞ্চলে তার সহযোগী, বিশেষ করে হিজবুল্লাহ এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে, তারা আগের  মতো আর হুমকি নয়। আগামী কয়েক ঘণ্টা ও দিনে প্রমাণ হবে– এটি সঠিক, নাকি একটি বিপজ্জনক ভুল গণনা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েল ঠিক এখনই কেন ইরানে হামলা করল
  • এখনই কেন ইরানের এ অপূরণীয় ক্ষতি করল ইসরায়েল