Samakal:
2025-05-01@11:37:06 GMT

অশ্রুবারিচয়

Published: 6th, March 2025 GMT

অশ্রুবারিচয়

তুমি আমাকে ছেড়ে যাচ্ছো না কেন রায়হান?
প্রশ্নটা ধক্‌ করে লাগে রায়হানের। প্রশ্নের অন্তরালে কোনো হতাশা, অভিযোগ কিংবা ক্ষোভের স্পর্শ নেই। কিন্তু পেছনে যেন লুকিয়ে আছে অনেক কিছুই। সে ঠিক ধরতে পারে না– প্রমি কি মুক্তি চাইছে? নাকি অনিশ্চিত একটা সম্পর্ককে আশ্বস্ততার চাদরে মুড়ে দেওয়ার পথে রায়হানের একঘেয়ে অজুহাত সে মেনে নিতে পারছে না? ভেতরটা ফাঁপা লাগে তার, হাহাকার হয়ে বাজে। কেবল একটাই স্পষ্ট শব্দ বেরোয় তার কণ্ঠনালি ভেদ করে– ভালোবাসি!
এরপর নিকষ নিস্তব্ধতার ঝাঁপি নামে বসে থাকা পার্কের বেঞ্চিজুড়ে। কারও মুখেই কোনো শব্দ বেরোয় না। বেশ কিছুক্ষণ। চারপাশে স্বাভাবিক ছন্দে বাতাস বয়ে চলে। কংক্রিটের শহর থেকে খানিক দূরের গোছানো রিসোর্টের এক চিলতে এই পার্কে হুটহাট দু’একটা পাখির ডাক শোনা যায়। মাঝে মাঝেই ওদের পাশ দিয়ে হেঁটে যায় ঘুরতে আসা যুগল। ওদের স্বতঃস্ফূর্ত হেঁটে চলা, যুবকের বাহুর নিচে আগলে ধরা যুবতীর শাড়ি সামলে সাবলীল ঘুরে বেড়ানো বেশ আগ্রহ নিয়েই বেহায়ার মতো তাকিয়ে দেখে রায়হান। ভালো লাগে তার। কী নির্ভরতা! কী স্বাভাবিক ছন্দ! ওদের নিশ্চয়ই অনিশ্চয়তার রেশ নেই কোনো। কিংবা কে জানে, হয়তো আছে!
বেশ কিছুদিন ধরেই কেমন জানি একটা অদৃশ্য অস্বস্তির ছায়া ওদের সম্পর্কের মাঝে উঁকি দিচ্ছিল। ঠিক অস্বস্তিও না, আবার সাবলীলও না। যেটাকে ডিফাইন করাও দুরূহ। এমন না যে ওরা একে অপরকে ভুল বুঝছে, আবার এমনও না যে সব ঠিকঠাক চলছে। ঠিক কী কারণে এই দূরত্ব, সেটা বোঝাও মুশকিল। সেটা কাটাতে কিনা কে জানে, শহরতলিতে কোথাও নিরিবিলি সময় কাটানোর চিন্তা থেকে এই রিসোর্টে আসে ওরা। 
সুন্দর গোছানো চারপাশ। কৃত্রিম লেক ঘিরে রেখেছে রিসোর্টকে। চারদিকে সারি সারি নারকেল আর সুপারি গাছ, মাঝে প্রশস্ত লনে ছড়ানো রঙিন ক্যানভাস চেয়ার, যেখানে বসে বিকেলের নরম রোদ গায়ে মাখা যায়।
রিসোর্টের মূল ভবনটি কাঠ ও লাল ইটের সংমিশ্রণে তৈরি, যেন গ্রাম্য ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মিশেল। একতলায় খোলা বারান্দা, যেখানে দুলতে থাকা কুণ্ডলী বাঁধানো দোলনাগুলো অতিথিদের আমন্ত্রণ জানায় যেন। ভেতরে ঢুকলেই কাঠের আসবাব, দেয়ালে পুরোনো দিনের জল রঙের ছবি– একটা নস্টালজিক আবহ তৈরি করে। রিসোর্টের অভ্যর্থনা কর্মী জানাচ্ছিল– চারপাশে ঘিরে আছে যে লেকটা, সেটায় সন্ধ্যার আলো-আঁধারিতে ভেসে বেড়ায় কাঠের নৌকাগুলো। লেকের ধারে কাঠের ব্রিজ পেরিয়ে গেলে রিসোর্টের কটেজগুলোর দেখা মেলে– প্রতিটিই আলাদা আলাদা নকশার, কিন্তু সবগুলোতেই খোলামেলা বারান্দা, যেখানে বসে রাতের ঝিঁঝি পোকার ডাক শোনা যাবে নিশ্চিত।
কেন ভালোবাসো?
হু?
কেন বাসো?
নিকষ নিস্তব্ধতা ভেঙে প্রমিই জানতে চায় ফের। প্রশ্নটা যেন দূর পাহাড়ের গম্ভীর ডাক হয়ে রায়হানের ভেতর প্রতিধ্বনি তোলে। চোখে চোখ রেখে তাকায় সে। সেখানে প্রশ্নের চেয়েও বেশি কিছু লুকিয়ে আছে। হয়তো আকুতি কিংবা বিরক্তি। রায়হান ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। কিন্তু এটা বুঝতে পারে, উত্তরটা এড়িয়ে গেলে সে পুরোপুরি হারিয়ে যাবে। তাও কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে সে। গলার কাছে আটকে থাকা কথাগুলো বেরোতে চায়, কিন্তু পারে না।
ক’দিন আগেই প্রমি বলছিল– রায়হান, তোমাকে প্রায়োরিটি দিতে গিয়ে ভেবেছিলাম এভাবে একসময় আমি নিঃস্ব হয়ে যাব। হাজারো বিষয়ে আমারও দায়বদ্ধতা আছে; ফলে আমার প্রায়োরিটি দেওয়াটা খুব সস্তা না, রায়হান। আই হ্যাভ টু পে ফর ইট ইন এভরি সিঙ্গেল মোমেন্ট। আমারও চারপাশের হাজারটা সামাজিক প্রশ্ন ঠেলে টিকে থাকতে হয়। তোমাকে প্রায়োরিটি দিই, কারণ– ভালোবাসি। তোমার জন্য সীমাহীন মায়া আমার। আমার প্রতিটি অস্তিত্বে জড়িয়ে আছো তুমি। অথচ তোমার প্রায়োরিটি লিস্টে আমি তলানিতে, কিছু একটা চাইলেই যেন মহাকাশ ভেঙে আসে তোমার, মায়ার ছোঁয়া আমি পাই না। নিজেকে খুব তুচ্ছ লাগে জানো? কিন্তু আমার সেই ভাবনাটা ভুল, আমি প্রায়োরিটি দিতে গিয়ে শূন্য হয়ে যাইনি, বরং আরও বেটার কিছু করার ইচ্ছে জাগে আমার।
তোমার কি মনে আছে রায়হান? সেদিনের কথা? ব্রিজের ওপর শত মানুষের ভিড়ে তুমি আমাকে প্রথম চুমু খেয়েছিলে? মনে আছে সেদিন সারাটা রাস্তা হাতটা ধরে বসেছিলে? কী তীব্রতা ছিল তোমার চাওয়ায়! অথচ দেখো, ইদানীং আমি হাত ধরে থাকলেও তুমি ফোনে নোটিফিকেশন চেক করো। ধরে থাকা হাতের কোনো রেসপন্স থাকে না। কোনো উষ্ণতা থাকে না। ক্রমে ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে না আমাদের পথচলাটা?
রায়হান ভাবনার ঝাঁপি সাজিয়ে বসলেও প্রমি উঠে দাঁড়ায়। তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে মাথা নেড়ে হাতের নখ খোঁটে। যেন বোঝাতে চায়– ‘কেন এসব প্রশ্ন করা? এর চেয়ে ঢের ভালো চুপ করে থাকা’। 
আমি কী করব, প্রমি? তোমার মতো করে তোমাকে হয়তো আমি কখনোই ভাবি নাই। স্বার্থপরের মতো তোমাকে আঁকড়ে ধরে শ্বাস নেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করে গেছি, তোমার শ্বাস বন্ধ করে। আমার প্রকাশ হয়তো অতটা না, যতটা ভেতরে খুবলে খায়। তোমার মনের অগোচরে প্রশ্ন জাগতেই পারে আমি আদৌ ভালোবাসি কিনা, সেটাই স্বাভাবিক। আমার অনিশ্চিত অস্তিত্বে তুমি হয়তো ক্লান্ত। কিন্তু কীভাবে তোমাকে বোঝাই– ‘কেহ দেখিবে না মোর অশ্রুবারিচয়’। কীভাবে বোঝাই ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে আসার অনুভূতি। রায়হানের গলাটা খানিক ধরে আসে।  
কার লেখা লাইনটা? পরিচিত মনে হচ্ছে? প্রমি পরিবেশ স্বাভাবিক করতেই হয়তো প্রশ্ন করে। রবি বুড়ো? .

.. ও আচ্ছা! ধরতে পেরেছি এবার। চেরি পিকিং করেছ দেখে বুঝি নাই। কতবার ভেবেছিনু থেকে পিক করেছ। কেহ জানিবে না মোর গভীর প্রণয়/কেহ দেখিবে না মোর অশ্রুবারিচয়! কিন্তু তোমার প্রণয় তো জানিবে না টাইপ না। জানিয়েছ তো আমাকে! 
প্রমি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে পরিবেশ। রায়হানের হাত ধরে টেনে তোলে। এলোমেলো হাঁটতে থাকে ওরা লেকের পাশ ঘেঁষে। কিন্তু রায়হান বুঝতে পারে প্রমির ক্লান্তি। বুঝতে পারে নিজের অসহায়ত্ব। বুঝতে পারে সে তলিয়ে যাচ্ছে। 
দেখো রায়হান, যা পেয়েছি, সেটাই-বা কম কীসে বলো? তুমি ঝুম গানটা শুনেছ না? কোক স্টুডিওর? ওখানে একটা লাইন আছে দেখবে– সাব নু সামাঝ কে কি কারনা আয়ে। যেখানে আমার নিয়ন্ত্রণ নেই, সেখানে কেন অবগাহন? বাদ দাও, লেটস ফোকাস অন দ্য ডে। আবহাওয়াটা বেশ চমৎকার, না? প্রমির চোখেমুখে এখন আর প্রশ্ন নেই, আছে শুধু শূন্যতা। যেই শূন্যতা কাটিয়ে সে পরিবেশ স্বাভাবিক করতে চাইছে। আর সেই শূন্যতাই রায়হানের ভেতরে একটা গহ্বর তৈরি করছে, যা ক্রমশ তাকে গ্রাস করে ফেলছে।
সন্ধ্যের আগেই ওরা ফিরে আসে রিসোর্টের অনাবিল সৌন্দর্য উপেক্ষা করে। ফিরতে ওদের হতোই। শহরতলি থেকে দূরে গিয়ে ‘আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়াতে’ চেয়েছিল ওরা, আরও বেশি বাইরে চলে যেতে নয়। কিন্তু বুঝতে পারে ক্রমে ওরা বাইরের পানেই চলেছে একাকী। অমন অস্বস্তি নিয়ে রিসোর্টে থাকতে চায়নি বলেই ফিরে এসেছে।
তারপর থেকে শীতল দূরত্বের মধ্যেও কথা হয়, হঠাৎ করেই– কখনও অপ্রয়োজনীয় কিছু নিয়ে, কখনও অভ্যাসবশত। সম্পর্কটা যেন একটা দোদুল্যমান দড়ির ওপর দাঁড়িয়ে, ভারসাম্য হারালেই তলিয়ে যাবে, অথচ দুজনেই এক অদৃশ্য টানে তা ধরে রাখার চেষ্টা করে।
অবশেষে, একদিন সত্যিই দড়িটা ছিঁড়ে যায়। তুমুল কোনো ঝগড়া নয়, কোনো হঠাৎ সিদ্ধান্তও নয়– একটা ধীরলয়ের দূরত্ব, একটা বুঝতে পারা যে, ওরা একসঙ্গে থাকলে শুধুই ক্লান্তি বাড়বে। তবু শেষ মুহূর্তে রায়হান এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে যায়। একবার শুধু প্রমির চোখের দিকে তাকায়, কিছু বলার চেষ্টা করে। গলা শুকিয়ে আসে, কণ্ঠ ভারী হয়ে ওঠে। তাও বলে– কেমনে প্রকাশি কব কত ভালোবাসি?
প্রমি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে, তারপর হালকা হাসে। সেই হাসিতে অভিমান নেই, অভিযোগও নেই– শুধু একরাশ বিষাদ লেগে থাকে। খুব আস্তে বলে– আমাদের গল্পটা কখনও সহজ ছিল না রায়হান, কখনও হবেও না। ইফ অল সাই উইশেস অয়্যার টু কাম ট্রু, হোয়াট উড বি লেফ্ট ইন দ্য ওয়ার্ল্ড টু ডু? তুমি ভালো থেকো, রায়হান। অনেক রাত একা কেঁদেছে প্রমি, পুরোনো টেক্সট পড়েছে, অ্যালবামের ভেতর রাখা পুরোনো ছবি মুছে ফেলতে গিয়ে থেমে গেছে। কিন্তু ধীরে ধীরে, সময়ের সঙ্গে সম্পর্কের সেই বিষাদমাখা ভারটাকে মেনে নিয়েছে সে।
রায়হান পারেনি। ওর জন্য সম্পর্কটা ফুরোয়নি কখনও। সে ফিরে যেতে চেয়েছে বার কয়েক। কিন্তু টেক্সট লিখে পাঠায়নি, দূর থেকে কেবল দেখেছে প্রমিকে। অনুভব করতে চেয়েছে। সামনে এগিয়ে যেতে চেয়েও পারেনি রায়হান, আবার পেছনেও ফিরতে পারেনি। 
তবু জীবন এগোয়। এগোতেই হতো। কখনও কি আবার কথা হবে ওদের? হয়তো হবে, হয়তো না। কেউ কাউকে পুরোপুরি হারায় না, আবার ফিরে পাওয়ার আশাটাও ধীরে ধীরে ফিকে হতে থাকে। সময়ের স্রোতে সম্পর্কের সংজ্ঞা বদলে যায়। অনুভূতিও। ছেড়ে আছি ভাবলেই বুকের ভিতরের হাহাকারটা জাগে না আর। হয়তো একদিন নতুন কারও পাশে বসবে আলাদাভাবে, হাসবে, হাতে হাত রাখবে, কিন্তু কোথাও একটা কণামাত্র অনুভূতি হয়তো থেকে যাবে পরস্পরের জন্য। আনডিফাইন্ড একটা কণা, একটা আক্ষেপ, অশ্রুবারিচয়। যেটা ঠিক ভালোবাসাও নয়। v
 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গানের ভুবনে লিজার অন্তহীন পথচলা

শীর্ষ তারকা হওয়ার দৌড়ে কখনও অংশ নিতে দেখা যায়নি তাঁকে। যদিও ২০০৮ সালে ‘ক্লোজআপ ওয়ান: তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় সেরা শিল্পীর মুকুট মাথায় উঠেছিল, তবু ধীরলয়ে পথ হেঁটে গেছেন। নিজের কাজে অতিমাত্রার উচ্ছ্বাসও দেখাননি কখনও। নীরবে নিভৃতে কাজ করে গেছেন সবসময়। গানে গানে কুড়িয়ে চলেছেন শ্রোতার ভালোবাসা। এ কারণে সমসাময়িকদের চেয়ে আলাদা করে তাঁকে চিনে নেওয়া যায়। বলছি, কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজার কথা। গানের ভুবনে অন্তহীন পথচলায় যিনি এরই মধ্যে পেরিয়ে এসেছেন প্রায় দেড় যুগের পথ। সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার রহস্যটা কী? শুরুতে যখন এ প্রশ্ন লিজার সামনে তুলে আনা হলো, তখন দেখা গেল, লিজা নিজেই এর উত্তর খুঁজতে বসে গেছেন। এ পর্যায়ে হেসে বললেন, ‘না, এর উত্তর সত্যি জানা নেই। আসলে আমি তো গান গাই শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ আর ভালোবাসা কুড়ানোর জন্য। হ্যাঁ, শিল্পীসত্তাকে খুশি রাখতে গানের চর্চা ধরে রেখেছি বললে ভুল হবে না। তারপরও প্রতিটি আয়োজনে শ্রোতার ভালোলাগা, মন্দলাগাকে প্রাধান্য দিয়েছি। এতে করে কতটুকু জনপ্রিয়তা পেয়েছি। সেই জনপ্রিয়তা শুরু থেকে একই রকম আছে কিনা– সেটি তো শ্রোতারা ভালো বলতে পারবেন।’ লিজার এ কথা থেকে বোঝা যায়, যাদের কারণে শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া, সেই শ্রোতা তাঁর দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। সেখানে তাঁর গানগুলো ছিল চালিকাশক্তি। তবে ১৭ বছরের সংগীতের এ পথচলায় লিজার কণ্ঠে মেলোডি গান বেশি শুনতে পাওয়া গেছে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই দেড় যুগে নানা ধরনের গান গেয়েছি, তবু কেন জানি শ্রোতারা আমাকে মেলোডি গানের শিল্পীদের দলে রেখে দিয়েছেন। অস্বীকার করব না যে, আমার কণ্ঠে যে ধরনের গান ভক্তরা বেশি শুনতে চান, সে ধরনের গান বেশি গাই। এটিও ঠিক যে, মেলো কিংবা স্যাড-রোমান্টিক গানের প্রতি শ্রোতার ভালোলাগা সবসময় ছিল। এখনও অনেকে মেলোডি ছাড়া গানের কথা ভাবতে পারেন না। এজন্য নিরীক্ষাধর্মী কাজ করলেও আমি চাই না মেলোডি থেকে কখনও দূরে সরে থাকতে। তাই মেলোডি গান যেমন গাইছি, তেমনি গানের নিরীক্ষাও চালিয়ে যাচ্ছি।’ লিজার এ কথা যে মিথ্যা নয়, তা সর্বশেষ প্রকাশিত গানগুলোর শুনলে প্রমাণ মেলে। ক’দিন আগে বিটিভির ‘বৈঠকখানা’ অনুষ্ঠানে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা মুহিনের সঙ্গে গাওয়া ‘তোমার নামে’ গানে যে লিজাকে শ্রোতা আবিষ্কার করবেন, তার সঙ্গে মেলানো কঠিন হবে সামজ ও রিজানের সঙ্গে ‘তিতা কথা’ গানের লিজাকে। আরেকটু পেছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে, ‘খুব প্রিয় আমার’, ‘তুমি এলে’, ‘পূর্ণিমা চাঁদ’ গানগুলোয় লিজা অতীতের গায়কীকে ছাপিয়ে কীভাবে আরও নতুন হয়ে নিজ কণ্ঠ তুলে এনেছেন। 

মাঝে কিংবদন্তি শিল্পীদের বেশ কিছু কালজয়ী গানের রিমেকে কণ্ঠ দিয়েও প্রশংসা কুড়িয়েছেন সংগীতবোদ্ধাদের। স্টেজ শো, রেডিও, টিভির আয়োজন থেমে শুরু করে সিনেমার প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন, তিনি অন্যদের চেয়ে কোনোভাবে পিছিয়ে নন। এককথায়, বহমান সময়টিকে সুরেলা করে রেখেছেন অনিন্দ্য কণ্ঠ জাদুতে। 

আগামীতেও লিজার কণ্ঠ বাতাসে ভেসে বেড়াবে– এ অনুমান করা যায়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিষ্টি মেয়ের গল্প
  • চেন্নাইয়ের ঘরে বিষাদের বাজনা, ধোনির চোখে বিদায়ের আভা
  • গানের ভুবনে লিজার অন্তহীন পথচলা
  • চিনি-লবণের অনুপম পাঠ
  • শততম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে চান ইয়ামাল
  • নির্মাতার ঘোষণার অপেক্ষায় চিত্রাঙ্গদা
  • শিশুর মাথা ঘামে কেন
  • কাঠফাটা রোদ্দুরে তপ্ত হাওয়া