অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে দেশ ফ্যাসিস্টমুক্ত হলেও জনপ্রত্যাশা পূরণ হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির খুলনা বিভাগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন আমান। নগরীর অভিজাত হোটেলে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।

সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই হতে হবে জানিয়ে আমান বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা হত্যা, গুম ও নির্যাতন করেছেন। ইলিয়াস আলী, ছাত্রনেতা সুমনসহ বিএনপির হাজারো নেতাকর্মী গুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আওয়ামী লীগের অবৈধ এমপি-মন্ত্রী কেউ ছাড় পাবে না। সবাই বিচারের আওতায় আসবে।

খুলনা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডুর সঞ্চালনায় সভায় বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা, জেলা আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে যশোরের একটি হোটেলে খুলনা বিভাগের ছয় জেলার সাবেক এমপি, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আমান বলেন, বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা হত্যার দায়ে হাসিনার ৫৭ বার ফাঁসি হওয়া উচিত। তিনি আক্রোশের রাজনীতি করতেন। একসঙ্গে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন হাসিনা ও তাঁর সহযোগীরা। তাদের আর দেশে ফেরার সুযোগ নেই।

সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ