ধর্ষণ বন্ধে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই : মামুনুর রশীদ
Published: 16th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মাওলানা মামুনুর রশীদ বলেছেন, দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। সম্প্রতি মাগুরার শিশু আছিয়া ধর্ষণের ঘটনা জাহিলিয়া যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এসব জগন্য অপরাধ থেকে সমাজ তথা দেশকে মুক্ত করতে হলে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।
রোববার (১৬ মার্চ) সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় মারকাজুন নূর মাদ্রাসা মিলনায়তনে নাসিক ২ নং ওয়ার্ড খেলাফত মজলিস আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা মামুনুর রশীদ বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে আলেফ উদ্দিন নামক র্যাব কর্মকর্তা এক বন্দির স্ত্রীকে ধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে তা যথাযথ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণের পাশাপাশি অনেকই হত্যার শিকার হচ্ছে। আবার লোকলজ্জা ও বিচার না পেয়ে অনেকই আত্মহত্যা করছে।
সরকারের কাছে আমাদের দাবি আইনের মাধ্যমে দ্রুত ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তিত করা। পাশাপাশি নারী শ্লীলতাহানি ও ইভটিজিং বন্ধে কার্যকর আইনি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা।
নাসিক ২ নং ওয়ার্ড খেলাফত মজলিসের সভাপতি হাফেজ মাওলানা হাশমত আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলমের সঞ্চালনায় এ মাহফিলে প্রধান আলোচক ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা হুসাইন আহমেদ। বিষেশ বক্তা ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ডা: আল-আমিন রাকিব, ঢাকা মহানগর শাখার যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রিযওয়ান হুসাইন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মুফতি দেলোয়ার আল হুসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সাকিব সাইফী, প্রচার সম্পাদক মুফতি ইমরান শফি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম আদনান,সম্পাদক মাওলানা উমর ফারুক, যুব মজলিস সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি মাওলানা আল আমিন মাহমুদ, ২ নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মোস্তফা কামাল, ইসলামী ছাত্র শিবিরের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি রিফাত আহমেদ ও মাওলানা লোকমান হুসাইন, মাওলানা রিয়াজুল ইসলাম প্রমুখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ হ স ইন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।