‘তরুণ’ মেসিকে ফেরালেন ‘বুড়ো’ মেসি, পিছিয়ে পড়েও জয় মায়ামির
Published: 17th, March 2025 GMT
বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে ছোঁ মেরে বল কেড়ে নিলেন, চিতার বেগে বক্সে ঢুকে পড়লেন, ডিফেন্ডারকে কাটালেন, চিপ করে গোলকিপারকে বোকা বানালেন—গোলটা দেখলে কে বলবে লিওনেল মেসির বয়স ৩৮ ছুঁই ছুঁই!
ক্যারিয়ারের সোনালি সময়ে এমন গোল অহরহ করেছেন মেসি। কিন্তু আটলান্টায় বাংলাদেশ সময় আজ ভোরে আবারও তাঁর পায়ের জাদু দেখার পর অনেকেই হয়তো বলছেন, ‘বুড়ো’ মেসি যেন ‘তরুণ’ মেসিকে ফিরিয়ে আনলেন। তাঁর জাদুকরী দিনে আটলান্টা ইউনাইটেডের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইন্টার মায়ামি।
দারুণ এ জয়ে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) গত মৌসুমের প্রতিশোধও নিয়ে ফেলল মায়ামি। ২০২৪ মৌসুমে প্লে-অফ পর্বে এই আটলান্টার কাছে দুই লেগেই হেরে ছিটকে পড়েছিল মায়ামি।
ঘরের মাঠ মার্সিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়ামে আজ ম্যাচের ১১ মিনিটেই এগিয়ে যায় আটলান্টা। গোল করেন দলটির আইভরিয়ান স্ট্রাইকার এমানুয়েল লাত্তে লাথ। এরপরেই ২০তম মিনিটে মেসির সেই গোল।
তবে মায়ামির জয়ের নায়ক মেসি নন। যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচটা ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে, তখনই আটলান্টাকে স্তব্ধ করে দেন ফাফা পিকল্ট। হাইতির এই অভিজ্ঞ উইঙ্গারকে ৮৩ মিনিটে বদলি নামান মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাচেরানো। ৮৯ মিনিটে জর্দি আলবার ক্রস থেকে বল পেয়ে হেডে জালে জড়ান ৩৪ বছর বয়সী পিকল্ট।
টানা তিন জয়ে এমএলএসের ইস্টার্ন কনফারেন্সের শীর্ষে উঠে এসেছে মায়ামি। লিগের আগের দুই ম্যাচে ডেভিড বেকহামের মালিকানাধীন ক্লাবটি শার্লট ও হিউস্টন ডায়নামোকে হারিয়েছিল। আর মৌসুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউইয়র্ক সিটির সঙ্গে করেছিল ড্র। ৪ ম্যাচে মায়ামির পয়েন্ট এখন ১০।
আন্তর্জাতিক বিরতির আগে এটিই ছিল ইন্টার মায়ামির শেষ ম্যাচ। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের দুটি ম্যাচ খেলতে মেসি শিগগিরই আর্জেন্টিনা দলে যোগ দেবেন। তার আগে মেসিকে এমন ছন্দে থাকতে দেখা নিশ্চিতভাবেই আর্জেন্টিনার সমর্থকদের জন্য আনন্দের ব্যাপার।
মায়ামির পরের ম্যাচ বাংলাদেশ সময় আগামী ৩০ মার্চ ভোরে, প্রতিপক্ষ ফিলাডেলফিয়া।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আটল ন ট
এছাড়াও পড়ুন:
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ: কী, কেন, কীভাবে
ফিফা বিশ্বকাপ বলতে অনেকে যা বোঝেন, জাতীয় দলগুলোকে নিয়ে আয়োজিত সেই বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালের জুন–জুলাইয়ে। এবারের জুন–জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ক্লাব নিয়ে আয়োজিত বিশ্বকাপ। আনুষ্ঠানিকভাবে যা ‘ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ’ নামে পরিচিত।
ক্লাব বিশ্বকাপ কি নতুন কিছু
না। ২০০০ সাল থেকেই ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ হয়ে আসছে। কখনো ৬ দল, কখনো ৭ দল নিয়ে। তবে বিভিন্ন মহাদেশের ক্লাব প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে আয়োজিত সেই বিশ্বকাপ খুব বেশি সাড়া ফেলতে পারেনি। বছরের শেষ দিকে ১০ দিনের মধ্যে অল্প কটি ম্যাচের মধ্যে শেষ হয়ে যেত ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। এই করে করে এরই মধ্যে আয়োজিত হয়ে গেছে ২০টি আসর। তবে এবার ক্লাব বিশ্বকাপকে বৈশ্বিক রূপ দেওয়ার জন্য টুর্নামেন্টের কলেবর বাড়িয়েছে ফিফা। পৃথিবীর ছয় মহাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছে মোট ৩২টি ক্লাব, যেমনটা জাতীয় দলের বিশ্বকাপে এত দিন হয়ে এসেছে।
ফরম্যাট কি বিশ্বকাপের মতোই
হ্যাঁ, জাতীয় দলগুলোকে নিয়ে আয়োজিত ফিফা বিশ্বকাপের মতোই (যদিও ২০২৬ আসরে অংশ নেবে ৪৮টি দেশ)। ৩২টি দল মোট ৮টি গ্রুপে ভাগ হয়েছে। প্রতি গ্রুপের সেরা দুই দল উঠবে শেষ ষোলোয়, সেখান থেকে একের পর এক নকআউট। এক মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি শহরে অনুষ্ঠিত হবে মোট ৬৩টি ম্যাচ।
৩২ দল কীভাবে চূড়ান্ত হয়েছে?
দল চূড়ান্ত হয়েছে বিভিন্ন পদ্ধতিতে। মোটের ওপর সর্বশেষ চার মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়নদেরই জায়গা দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ ১২টি ক্লাব আছে ইউরোপের, দক্ষিণ আমেরিকার আছে ৬টি। আবার অপেক্ষাকৃত দুর্বল ওশেনিয়া ফুটবল ফেডারেশন থেকেও দল আছে একটি। আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বরাদ্দ ছিল একটি জায়গা। ২০২৪ এমএলএস সাপোর্টাস শিল্ড জিতে সেটি পেয়েছে ইন্টার মায়ামি। এমএলএস থেকে দল অবশ্য আরও একটি আছে। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী যোগ্যতা থাকলেও একই মালিকানার দুটি ক্লাব টুর্নামেন্টে খেলতে পারবে না। প্লে–অফের মাধ্যমে একটি চূড়ান্ত হবে। এই প্রক্রিয়ায় লস অ্যাঞ্জেলেস এফসি যুক্ত হয়েছে।
দলগুলো কারা
এশিয়া (এএফসি): আল হিলাল (সৌদি আরব), উরাওয়া রেড ডায়মন্ডস (জাপান), আল আইন (সংযুক্ত আরব আমিরাত), উলসান (দক্ষিণ কোরিয়া)।
আফ্রিকা (সিএএফ): আল–আহলি (মিসর), ওয়াইদাদ (মরক্কো), এসপেরানস দি তিউনিস (তিউনিসিয়া), মামেলোদি সানডাউনস (দক্ষিণ আফ্রিকা)।
উত্তর, মধ্য ও ক্যারিবিয়ান (কনক্যাকাফ): মনটেরি (মেক্সিকো), সিয়াটল সাউন্ডার্স (যুক্তরাষ্ট্র), পাচুয়া (মেক্সিকো), লস অ্যাঞ্জেলেস এফসি (যুক্তরাষ্ট্র)।
দক্ষিণ আমেরিকা (কনমেবল): পালমেইরাস (ব্রাজিল), ফ্ল্যামেঙ্গো (ব্রাজিল), ফ্লুমিনেজ (ব্রাজিল), বোতাফোগো (ব্রাজিল), রিভার প্লেট (আর্জেন্টিনা), বোকা জুনিয়র্স (আর্জেন্টিনা)।
ইউরোপ (উয়েফা): চেলসি (ইংল্যান্ড), রিয়াল মাদ্রিদ (স্পেন), ম্যানচেস্টার সিটি (ইংল্যান্ড), বায়ার্ন মিউনিখ (জার্মানি), পিএসজি (ফ্রান্স), ইন্টার মিলান (ইতালি), পোর্তো (পর্তুগাল), বেনফিকা (পর্তুগাল), বরুসিয়া ডর্টমুন্ড (জার্মানি), জুভেন্টাস (ইতালি), আতলেতিকো মাদ্রিদ (স্পেন), রেড বুল সালজবুর্গ (অস্ট্রিয়া)।
ওশেনিয়া (ওএফসি): অকল্যান্ড সিটি (নিউজিল্যান্ড)।
আয়োজক দেশের দল: ইন্টার মায়ামি (যুক্তরাষ্ট্র)।
ক্লাব বিশ্বকাপের ট্রফি যখন মিসরে।