কোটা বাতিলের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা
Published: 20th, March 2025 GMT
জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছেন নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে শিক্ষার্থীরা সেখানে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে ৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে স্মারকলিপি তুলে দেন শিক্ষার্থীরা। জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদিয়া আফরিন।
এর আগে গতকাল (১৯ মার্চ) বুধবার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শহরের মুক্তির মোড়ে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টররা কারিগরি ব্যাকগ্রাউন্ডের না, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ল্যাবের সহকারী কর্মচারী। তারা মূলত অষ্টম শ্রেণি কিংবা এসএসসি পাস। তাদের ডিপ্লোমার শিক্ষক হওয়ার কোনো যোগ্যতা নেই। তারা যদি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক হন, তাহলে ডিপ্লোমা ছাত্ররা কতটুকু শিখবে। জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর শুধুমাত্র ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টদের জন্য। ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর হিসেবে প্রমোশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত কারিগরি সেক্টর ধ্বংসের পাঁয়তারা। দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল টেকনোলজি বিভাগের সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী জান্নাতী খাতুন বলেন, এইচএসসি পাশ করে যদি মাস্টার হওয়া যায় তাহলে তো আমাদের এতো কষ্ট করে ডিপ্লোমা করার প্রয়োজন নেই। আমাদের মা-বাবারা প্রতি সেমিস্টারে আমাদের পিছনে এত হাজার হাজার টাকা খরচ করছেন কীসের জন্য? এইচএসসি পাশ করে তারা যদি এত বড় বড় পদ পায়, তাহলে আমাদের ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালানো ছাড়া উপায় নেই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে ঢাকায় লংমার্চ করবো।
আরেক শিক্ষার্থী মাহিন হাসান বলেন, ২১ সালে নন টেকনিক্যাল থেকে বিতর্কিতভাবে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা শুধু ল্যাবের লাইট-ফ্যানের সুইচ বন্ধ করা ছাড়া কিছুই করতে পারে না। একটি রায়ের মাধ্যমে ৩০ শতাংশ নন টেকনিক্যাল ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এটি আমাদের সঙ্গে এক প্রকার বৈষম্য। আমরা চাই আমাদের দাবি যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া আফরিন বলেন, তাদের দাবিগুলো শুনেছি। যৌক্তিক মনে হয়েছে। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মোবাইল গেমে আসক্ত এইচএসসি পরীক্ষার্থীর কাণ্ড
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মোবাইল গেমে আসক্ত হয়ে জয় সাহা (১৯) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) নিজ বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জয় সাহা কটিয়াদী পৌরসভার পশ্চিমপাড়া মহল্লার কানু লাল সাহার ছেলে। চলতি বছর ময়মনসিংহ নটরডেম কলেজ থেকে তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।
নিহতের স্বজনেরা জানান, জয় সাহা মোবাইল ফোনে গেমে অতিরিক্ত আসক্ত ছিল। দিনের বেশির ভাগ সময় সে ঘুমিয়ে কাটাত এবং রাতে মোবাইলে গেম খেলত। শনিবার রাত আড়াইটার দিকে তার বাবা ফোন বন্ধ করে ঘুমানোর জন্য তাগিদ দেন। এরপর ছেলেকে ঘুমিয়ে পড়তেও দেখেন। রবিবার সকালে জয়ের মা ছেলের রুমে ঢুকে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।
আরো পড়ুন:
মাধবপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
কুড়িগ্রামে ছুরিকাঘাতে মসলা বিক্রেতা নিহত
জয় সাহার চাচা বেনু লাল সাহা বলেন, ‘‘জয় মোবাইল গেমে অতিরিক্ত সময় কাটাত। বিকেলে ওর বন্ধুরা মাঠে গিয়ে খেলা করলেও সে একা ঘরে মোবাইল চালাত। ধারণা করছি, মোবাইল গেমের কারণে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়ে হতাশয় সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।’’
কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি অপমৃত্যু হিসেবে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’’
ঢাকা/রুমন/রাজীব