পাবনার ঈশ্বরদীতে বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত পাঁচজনের মধ্যে একই পরিবারের তিনজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার দিয়াড় বাঘইল কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদে নিহতদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শেষ বিদায় জানাতে জানাজায় উপস্থিত হয় হাজারো মানুষ। জানাজা শেষ করে বাঘইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে পাশাপাশি তিনটি কবরে দাফন করা হয়েছে বাবা-মা ও ছেলেকে।

নিহতরা হলেন- উপজেলার বাঘইল গ্রামের একই পরিবারের মৃত বাবু হোসেনের ছেলে রাব্বি হোসেন (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা খাতুন (২৭), তাদের ছেলে মুস্তাকিম (২)।

এদিকে সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে যখন নিজ গ্রামে একই পরিবারের তিনজনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তখন থেকেই গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। একসঙ্গে একই পরিবারের তিনজনের এমন করুণ মৃত্যু স্বজনরা মেনে নিতে পারছেন না।

স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত রাব্বি হোসেন তার স্ত্রী মুক্তা খাতুন ও ছোট্ট ছেলে মুস্তাকিমকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করে অটোরিকশাযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় অটোরিকশাটি দাশুড়িয়া বহরপুর এলাকা পর্যন্ত পৌঁছালে বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে তারা তিনজনই ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ঘটনায় অন্য এলাকার আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত রাব্বি হোসেনের ছোট ভাই মো.

সায়েম বলেন, আমার ভাই-ভাবী ও ভাতিজা বাজারে শপিং করে বাড়ি ফেরার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। আমাকে হাসপাতাল থেকে মুঠোফোনে জানানো হলে আমি এসে দেখি তাদের মরদেহ পড়ে রয়েছে। এমন করুণ মৃত্যু যেন আর কোনো পরিবারের না হয়।

শুক্রবার সকালে রাব্বির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলে, পুত্রবধু ও একমাত্র নাতিকে হারিয়ে পাথরপ্রায় রাব্বির মা। একইসাথে তাদের হারিয়ে নানা বিলাপ করছে পরিবারের সদস্যরা। তাদের মৃত্যুর খবর শুনে রাব্বির বাড়িতে এসে ভিড় করছে এলাকাবাসী।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে ভালোবাসার সম্পর্কের পর পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় রাব্বি-মুক্তা দম্পতি। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় তাদের ঘরে একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এরপর পারিবারিক কলহের জেরে গত পাঁচ মাস যাবৎ বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছিল মুক্তা। পারিবারিক বিবাদ শেষে শুক্রবার শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল মুক্তা খাতুনের। 
সেই লক্ষেই আগের দিন বৃহস্পতিবার ঈশ্বরদী বাজার থেকে কেনাকাটা শেষে বাবার বাড়ি উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামে ফেরার পথেই সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী ও সন্তানসহ মারা যান মুক্তা খাতুন।

এদিকে নিহতদের জানাজা নামাজে উপস্থিত হয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, পাবনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল ছাড়াও হাজারো মানুষ।

এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের মরদেহ পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করে দাফনের অনুমতি দিয়েছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন একই পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।

উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।

ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।

এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ