তামাক চুল্লিতে নিয়ে কিশোরীকে ‘ধর্ষণ’, অভিযুক্ত পলাতক
Published: 21st, March 2025 GMT
রাঙামাটির লংগদু উপজেলার আটরকছড়া ইউনিয়নে তামাক চুল্লিতে নিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত যুবক মনির (৩০) পালাতক।
কিশোরীর বাবা বলেন, “গত বুধবার রাতে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে মনিরের বাসায় যাই। মনিরের স্ত্রী জানায়, আমার মেয়ে সেখানে যায়নি, তার স্বামী তামাক ক্ষেতে আছে। সন্দেহ হলে, তামাক ক্ষেতে খুঁজতে গেলে মনির মানুষ দেখে পালানোর চেষ্টা করেন। এলাকার লোকজন তাকে আটক করে। পরে মনির স্বীকার করেন, আমার মেয়ে তামাকের চুলায় আছে। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে।”
তিনি আরো বলেন, “স্থানীয় মাতব্বররা মামলা না করার পরামর্শ দেন। তারা বসে বিষয়টি সমাধান করার কথা বলেন। এসময় আমার মেয়ের ধর্ষককে কৌশলে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন তাকে হেফাজতে রাখা লোকজন।”
আরো পড়ুন:
কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার
পটুয়াখালীর সেই পরিবারটির সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান
ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, “আমার সঙ্গে মনিরের সম্পর্ক আছে, এমনটা আমার বাবাকে বলবে বলে ভয়ে দেখান মনির। এ কারণে আমি তামাক ক্ষেতে পালাই। কিছুক্ষণ পর আমাকে দেখতে পেয়ে জোর করে গভীর তামাক ক্ষেতে নিয়ে যান মনির। চট্টগ্রামে নিয়ে আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তামাকের চুলায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন মনির। পরে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করলে মনির আমাকে তামাক চুলায় রেখে পালিয়ে যান।”
লংগদু থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “কিশোরীর বাবা বৃহস্পতিবার রাতেই থানায় আসলে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আসামি পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। কিশোরীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা/শংকর/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫