সত্য-মিথ্যার মিশ্রণে সাংবাদিকতা নয়: কাদের গনি
Published: 23rd, March 2025 GMT
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের মহাসচিব ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, ‘‘প্রতিটি দিন দুটি সূর্য উদিত হয়, একটি হচ্ছে প্রভাত সূর্য, অন্যটি হচ্ছে সংবাদ। সূর্যের আলোতে আমরা দেখি, আর সংবাদমাধ্যম আমাদের বিশ্ব দেখায় বা জানায়। একজন সাংবাদিকের কাজ সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা। সত্য-মিথ্যার মিশ্রণে সাংবাদিকতা নয়।’’
রবিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া শহরের দিশা টাওয়ারের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়া আয়োজিত আলোচনাসভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘‘সংবাদপত্র একটি মহান পেশা। সাংবাদিকদের সমাজের দর্পণ বলা হয়। সাংবাদিকরা সমাজের ওয়াচডগ করেন। অন্যায়, অনিয়ম, নিগ্রহ, শোষণ-বঞ্চনা ও অধিকার হরণের বিরুদ্ধে সব সময় সাংবাদিককে সোচ্চার থাকতে হয়।’’
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪ সাংবাদিকের ওপর হামলা
কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে কাজ করবে সরকার: তথ্য উপদেষ্টা
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘‘অর্ধ সত্য নয়, অথবা সত্য-মিথ্যার মিশ্রণ নয়, সাংবাদিকদের প্রকাশ করতে হয় সম্পূর্ণ সত্য। আমি সোজা সাপ্টা বলি, অর্ধসত্য কখনো সাংবাদিকতা হতে পারে না। সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের নানা ঝুঁকিতে পড়তে হয়। জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও সাংবাদিকরা এই মহান কাজটি করে যাচ্ছেন। অসহায় আত্মসমর্পণ সাংবাদিকদের মানায় না। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় আমরা দেখেছি, সাংবাদিকদের একটা বিশাল অংশ সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। যার কারণে আমরা আয়না ঘরের মতো চিত্র দেখেছি। যার কারণে শেখ হাসিনার দুর্নীতির খবর, সেনা প্রধানের দুর্নীতির খবর আমরা বাংলাদেশে পায়নি, পেয়েছি বিদেশে। কেবলমাত্র আমাদের অসহায় আত্মসমর্পণের কারণে অথবা সাংবাদিকদের দলদাসগীরির কারণে।’’
কাদের গনি চৌধুরী আরো বলেন, ‘‘মনে রাখবেন, সত্য কাজে বাধার সম্মুখীন হলেও সত্যের পাশে সমাজের মানুষ পাশে এসে দাঁড়ায়। সাংবাদিকতা কখনো মুর্খ জনের পেশা নয়। সাংবাদিকতা বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের পেশা। বস্তুনিষ্টতা ছাড়া সংবাদিকতা পর্যায়ে পড়ে পড়ে না। যারা দায়িত্বহীনভাবে সাংবাদিকতা পেশাকে ব্যবহার করেন, তারা আর যায় হোক সাংবাদিক নয়।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘প্রকৃতপক্ষে সংবাদ মাধ্যমের দায়বদ্ধতা হলো সমাজের কাছে, দেশের কাছে, মানুষের কাছে। বিগত সরকারের সময়ে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা বলতে কিছু ছিল না। সেই যায়গা থেকে আমাদের সাংবাদিকতাকে বাঁচাতে হবে, দেশকে বাঁচাতে হবে, তথ্য সন্ত্রাস ও হলুদ সাংবাদিকতা থেকে বাঁচাতে হবে। আমরা কারো কাছে বিক্রি হবো না, সরকারের কাছে মাথা নত করব না। আমরা সত্যকে সত্য বলেই সাংবাদিকতা করব।’’
এ সময় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, সাবেক সংসদ সদস্য মেহেদী আহম্মেদ রুমী, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক সামিমুল হাসান অপু, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, কুষ্টিয়া জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তারিকুল হক তারিকসহ জেলার সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা এবং জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র ব দ কত
এছাড়াও পড়ুন:
মৌলভীবাজারে পিবিআইর হাজতখানা থেকে আসামির লাশ উদ্ধার
মৌলভীবাজারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাজতখানার ভেতর থেকে মোকাদ্দুস (৩২) নামে আসামির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে পিবিআই।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে মৌলভীবাজার জেলা শহরের টিভি হাসপাতাল সড়কে পিবিআইর হাজতখানা থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
মোকাদ্দুস কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের কোনাগাঁও (বৃন্দাবনপুর) গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে। তিনি আলোচিত লিটন হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৯ আগস্ট কমলগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর পতনঊষার ইউনিয়নের কোনাগাঁও (বৃন্দাবনপুর) গ্রামের ধানক্ষেত থেকে লিটন নামের এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে মোকাদ্দুস পলাতক ছিলেন। রবিবার রাত ৮টার দিকে কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন মোকাদ্দুস। পরে তাকে লিটন হত্যার মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করে থানা পুলিশ।
পিবিআই জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর খাওয়া-দাওয়া শেষে মোকাদ্দুসকে ৭-৮ জন আসামির সঙ্গে হাজতখানায় রাখা হয়। সোমবার ভোর ৬টার দিকে ডিউটি অফিসার গিয়ে দেখেন, মোকাদ্দুস নিজের লুঙ্গি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন। পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও মোকাদ্দুসের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
১১ সেপ্টেম্বর লিটনের বাবা সাত্তার মিয়া অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে কমলগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এ মামলায় শামিম নামের আরেকজনকেও গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পিবিআইর পুলিশ সুপার মো. জাফর হুসাইন বলেছেন, লিটন হত্যা মামলার তদন্ত আমাদের হাতে। মোকাদ্দুস রবিবার রাতে কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সোমবার সকালে হাজতখানায় আত্মহত্যা করেন তিনি। বিষয়টি আমরা সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছি।
ঢাকা/আজিজ/রফিক