গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আবদুল হাফিজ
Published: 25th, March 2025 GMT
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন করতে অন্তর্বর্তী সরকার ‘আপ্রাণ চেষ্টা করছে’ বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মিলনায়তনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের সঙ্গে মতবিনিময় ও ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে আবদুল হাফিজ এ কথা বলেন। জাগ্রত নাগরিক সমাজ নামের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
পরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে আহত রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড পরিদর্শন করে তাঁদের হাতে ঈদের উপহার তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী।
আহতদের উদ্দেশে আবদুল হাফিজ বলেন, ‘আপনাদের এই ত্যাগ অবিস্মরণীয়, অতুলনীয়। আপনাদের মতো আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন, সংগ্রাম করতে পারিনি। বুক পেতে দিতে পারিনি। এ জন্য আপনাদের প্রতি আমার ঈর্ষা হয়।’
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জালাল উদ্দীন বলেন, ‘তোমাদের এই অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম যেন এই বীরত্বগাথা জানতে পারে, সেই ব্যবস্থা আমরা করব।’
অনুষ্ঠানে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ১৪০ জন এবং পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৩০ জনের হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়। উপহারের প্যাকেটে ছিল ১ কেজি পোলাওর চাল, ১ কেজি মসুর ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি চিনি, ২ প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই, কিশমিশ, গরম মসলা, গুঁড়া দুধ ও নুডলস।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে যান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আবদুল হাফিজ। ঢাকা, ২৫ মার্চ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল হ ফ জ ব শ ষ সহক র আহতদ র উপহ র
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।