‘স্বাধীনতাবিরোধী’ বলায় বিএনপিকে এক হাত নিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা জামায়াতকে স্বাধীনতাবিরোধী বলে তাদের অনেকের বাবাও রাজাকার ছিলেন। কোন দলের কোন নেতা স্বাধীনতাবিরোধী, জনগণ জানে। যারা আজ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলে, তারাও স্বাধীনতাবিরোধীদের এমপি-মন্ত্রী এমনকি রাষ্ট্রপতিও বানিয়েছে।

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বুধবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের কার্যালয়ে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন গোলাম পরওয়ার। 

তিনি বলেন, জামায়াত তাদের সঙ্গে থাকলে সঙ্গী, না থাকলে জঙ্গি।
 
বিএনপির উদ্দেশ্য করে গোলাম পরওয়ার বলেন, বিরোধিতা করার আগে জামায়াতে অবদানের কথা স্মরণ করতে হবে। জামায়াতের সমর্থন ছাড়া সরকার গঠন করতে পারেননি। রাজপথে আন্দোলন করতে পারেননি। আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে জামায়াতের কত নেতাকর্মী মার খেয়েছে, রক্ত দিয়েছে, তাদের কতজন মার খেয়েছে?

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে। 

বিএনপি চব্বিশের অভ্যুত্থানকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলতে রাজি না হলেও গোলাম পরওয়ার বলেন, একাত্তরে বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। সে কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে কোটি কোটি মানুষ বলেছে, এটাই দ্বিতীয় স্বাধীনতা। জামায়াতে ইসলামী আদর্শিক কারণেই দেশ ও স্বাধীনতাকে ভালোবাসে।

জামায়াত নিয়ে ‘খেললে’ শেখ হাসিনা মতো পরিণতি হবে হুঁশিয়ারি দিয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন, মতের দ্বিমত থাকতে পারে, কিন্তু দেশ ও জাতির সঙ্গে আমাদের এক হতে হবে।

শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ চাননি দাবি করে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ৭ মার্চ যদি শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই থাকেন, তাহলে ৭ থেকে ২৩ মার্চ শেখ মুজিব পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন কেন?
 
ভারতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার মিশনে নেমেছে, গুজব ছড়াচ্ছে। সংস্কার শেষে সরকার নির্বাচন দেবে, তখনই জামায়াত ভোটের জন্য প্রস্তুত। 

মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির ড.

হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন  কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান, আব্দুল হালিম প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ জ ম য় ত ইসল ম স ব ধ নত ব র ধ গ ল ম পরওয় র ব এনপ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। এক বছর আগেও মানুষ চিন্তা করতে পারেনি যে তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু আজ সারা দেশের জনগণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছেমতো কেড়েও নেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন।

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট হয়ে গিয়েছিল। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। তারা মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যারা হাত-পা হারিয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই এসব খুনিকে ক্ষমা করবে না। খুনিদের বিচার করতে হবে এবং সব স্তরে সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণই তাঁদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার করতে চাইবেন, জনগণ তাঁদের প্রতিহত করবেন।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালিমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।’

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, বেকারত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। যেখানে মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। আমরা সাম্যের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’

খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম। গণসংযোগের সময় স্থানীয় মার্কেটের ব্যবসায়ী, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, গাড়িচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল