চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট (এক্সিম) ব্যাংকের চেয়ারম্যান চেন হুয়াইয়ু বলেছেন তার ব্যাংক চীনা উৎপাদন কারখানাগুলোকে বাংলাদেশে স্থানান্তরের জন্য সহায়তা করবে, যাতে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক বাজারে রপ্তানির কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

বৃহস্পতিবার চীনের বোয়াও শহরে অনুষ্ঠিত বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া অ্যানুয়াল কনফারেন্স ২০২৫-এর সাইডলাইনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

চীনা এক্সিম ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবকাঠামো ও জ্বালানি প্রকল্পে অর্থায়ন করে আসছে। তবে এবারই প্রথমবার তারা বাংলাদেশে চীনা বেসরকারি শিল্পকারখানা স্থাপনে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করলো।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, বাংলাদেশের অবস্থান এবং মানবসম্পদ দেশের অর্থনীতিকে বৈশ্বিক উৎপাদন হাবে রূপান্তর করতে পারে। তিনি চীনের শীর্ষস্থানীয় উৎপাদকদের বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার তাদের জন্য আকর্ষণীয় সুবিধা দেবে এবং একটি ট্রেড করিডোর গড়ে তুলবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ উৎপাদন ক্ষেত্রে চীনের পরিপূরক হতে পারে। তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম অঞ্চলে চীনা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) স্থাপনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান চেন হুয়াইয়ু বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে পণ্য সরবরাহের জন্য আদর্শ অবস্থানে রয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, ভিয়েতনাম কিভাবে চীনা ও পশ্চিমা বিনিয়োগ ব্যাবহার করে তার অর্থনীতি বদলে ফেলেছে, বাংলাদেশও যদি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে তবে একইভাবে লাভবান হতে পারবে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ইউনুস বলেন, আমরা ভিয়েতনামের কাছ থেকে শিখবো।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা দ্রুত এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নের অনুমোদন, নতুন অবকাঠামো প্রকল্প যেমন দশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার বাস্তবায়নে সহায়তা এবং ঋণ হ্রাস করার অনুরোধ জানান।

এ প্রসঙ্গে চেন হুয়াইয়ু জানান, তার ব্যাংক বিষয়গুলো পর্যালোচনা করবে। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশকে আরও বেশি চীনা মুদ্রা (আরএমবি) ভিত্তিক সহজ শর্তের ঋণ গ্রহণের পরামর্শ দেন।

উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা শিগগিরই পুনরায় বৈঠকে বসবেন এবং আলোচনার সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে জানানো হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি ও পরিবহন উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড.

খলিলুর রহমান এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এক স ম ব য

এছাড়াও পড়ুন:

২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে: আপ বাংলাদেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত না হলে তা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির

জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর

দাবিগুলো হলো— আসন্ন জকসু নির্বাচন ২৭ নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত করতে হবে; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে; সব সংগঠনকে সমান সুযোগ দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে; অরাজনৈতিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা যখন জকসুর দাবিতে অনশন করছিলাম, তখন প্রশাসন ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের অনশন ভাঙিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি মহল নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে।”

তিনি বলেন, “ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা ও বিভিন্ন বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় ওই মাসে নির্বাচন অসম্ভব। তাই ২৭ নভেম্বরই জকসু নির্বাচনের উপযুক্ত সময়।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা জানতে চাই, নির্বাচন পেছানোর মধ্য দিয়ে জকসু নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো প্রক্রিয়া চলছে কিনা। পুরান ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে একটি মহল নির্বাচন পণ্ড করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম ভোট হবে জকসু নির্বাচন—তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ