‘এ্যালা ঘরোত ধানও নাই ক্ষ্যাতের আলুর দামও নাই’
Published: 28th, March 2025 GMT
‘ধান বেচে আলু গাড়চি (রোপণ করা) বাহে। এ্যালা ঘরোত ধানও নাই, ক্ষ্যাতের আলুর দামও নাই। আলু আবাদ করি এবার হামার সর্বনাশ হইচে। বউ-ছাওয়া নিয়া ঈদের দিনটা পার করমো তারও কোনো বুদ্দি নাই।’ রংপুরের গঙ্গাচড়ার মহিপুর হাটে গতকাল শুক্রবার দুপুরে এমনই বর্ণনা দিলেন চরগ্রাম ইছলী এলাকার কৃষক আহাম্মদ আলী। তিনি জানান, প্রতিবছর উৎপাদিত আলু বিক্রির লাভের টাকায় পরিবারের ঈদের কেনাকাটাসহ সংসার খরচ চলে। কিন্তু লাভ দূরের কথা, আলুতে এবার ষোল আনাই লোকসান গুনতে হচ্ছে। শুধু আহাম্মদ আলীই নন, আলু উৎপাদনের এলাকা হিসেবে পরিচিত রংপুরের গঙ্গাচড়াসহ আট উপজেলার অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষকের এবার একই অবস্থা। ঈদের আমেজ নেই গ্রামের কৃষক পরিবারে।
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। শেষ সময়ে বিভাগীয় শহর রংপুরে যখন ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত মানুষ, ঠিক তখনই উল্টো চিত্র বিরাজ করছে জেলার গ্রামাঞ্চলে। সেখানে উপজেলা পর্যায়ের হাটবাজারগুলোতেও জমেনি ঈদের কেনাকাটা। রংপুরের গঙ্গাচড়া, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র। কৃষকরা জানান, কাটা-মাড়াই শেষে রোপা আমন ধান বিক্রি করে লাভের আশায় তারা নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ধানের ওই জমিতে আলু চাষ করেন। চড়া দামে বীজ কেনাসহ কৃষি উপকরণের দাম বাড়ায় এ বছর প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ পড়েছে অন্তত ২২ টাকা। সেখানে বর্তমানে প্রতি কেজি আলু বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ১০ টাকায়। আলুর বাজারে ধস নামায় বিশাল অঙ্কের টাকা লোকসান শুনতে হচ্ছে তাদের। গঙ্গাচড়ার হাবু গ্রামের কৃষক শওকত আলী জানান, আমন ধান বিক্রিসহ একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় তিন বিঘা জমিতে এবার আলু চাষ করেছেন। আলু উত্তোলনের পর দাম না থাকায় বিক্রি করতে পারেননি। হিমাগারে নেওয়াও সম্ভব হয়নি। এখনও সেই আলু মাঠে নিয়ে বিপাকে আছেন তিনি।
শুক্রবার ছিল তারাগঞ্জে হাটের দিন। এই হাটে আশপাশের কয়েকটি উপজেলার মানুষ কেনাকাটা করতে আসেন। বিকেলে হাটে ঘুরে দেখা যায়, দুয়েকটি দোকানে কয়েকজন ক্রেতার দেখা মিললেও, প্রায় সব দোকানে অলস সময় পার করছেন অধিকাংশ কর্মচারী। কাউনিয়া উপজেলা সদরে সাদমান ক্লথ স্টোরের সামনে কথা হয় মীরবাগ এলাকার কৃষক আবদুল হাকিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভাই, আমার মেয়ে দুইটা বায়না ধরচে, বাধ্য হয়া ১০ টাকা কেজিতে লোকসান করি আলু বেচে হাটোত আসনু ছাওয়াগুলার নতুন জামা কেনার। তয় যে দাম, জামাত হাতে দেওয়া যাওছে না।’ ওই স্টোরের মালিক নুরুজ্জামান বলেন, ‘এবার ব্যবসা খুবই খারাপ। মানুষের হাতে টাকা না থাকায় ঈদের কাপড়-চোপড় কেনার আগ্রহ নেই কারও।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন
পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান, অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়।
তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”
নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।
ঢাকা/ইভা