বরগুনার তালতলীতে ঈদুল ফিতরের নামাজ চলাকালীন ইমামকে ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মো. মাসুম বিল্লাহ (১৯) নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন মুসল্লিরা।

সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার শারিকখালি ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া শিকদার বাড়ি জামে মসজিদে এই ঘটনা ঘটে। আটক মাসুম বিল্লাহ করাইবাড়িয়া ইউনিয়নের আলীর বন্দর গ্রামের সাইদুল কাজীর ছেলে।

ভুক্তভোগী ইমামের নাম মো.

ইমরান হোসেন। তিনিও আলীর বন্দর গ্রামের ইব্রাহিম মোল্লার ছেলে ও আঙ্গাপাড়া শিকদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাসুম ও ইমরান একসময় বন্ধু ছিলেন। পরে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর জেরে সোমবার সকালে ঈদের নামাজের সময় ইমরানকে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা করেন মাসুম। পরে মুসুল্লিরা গণধোলাই দিয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আঙ্গারপাড়া শিকদার বাড়ি জামে মসজিদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘‘নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের সময় মাসুম বিল্লাহ একটি ছুড়ি বের করে ইমামকে আক্রমণের চেষ্টা করেন। এ সময় নামাজ ছেড়ে দিয়ে তাকে ধরি।’’

এ বিষয়ে ইমাম মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘‘মোবাইল চুরির একটি ঘটনা নিয়ে মাসুমের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। এর জেরে হত্যার উদ্দেশ্যে আমর ওপর হামলা চালানো হয়েছে।’’

তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ জালাল বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় মাসুম বিল্লাহকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

ঢাকা/ইমরান/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইমর ন

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ