কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে সরকারি নিষেধ অমান্য করে বিয়ে বাড়িতে বিদ্যালয়ের বেঞ্চ ভাড়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২ এপ্রিল) বিকেল থেকে এ নিয়ে উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগবতীপুর ও নাগেশ্বরী উপজেলার চর নুন খাওয়া গ্রামের মানুষদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

এর আগেও একই ঘটনায় দুই গ্রামের মানুষের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটেছিল। এতে ৬ জন আহত হয়েছিল।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগবতীপুর গ্রামের ঝুনকার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশত বেঞ্চ নাগেশ্বরী উপজেলার চর নুন খাওয়া গ্রামের বাসিন্দা আফজাল হোসেন তার ছেলের বিয়ের জন্য ৫০০ টাকার বিনিময়ে ভাড়া করেন। 

চর ভগবতীপুর গ্রামের বাসিন্দা মোজাহার আলী বলেন, এর আগে বেঞ্চ ব্যবহার করা নিয়ে মারামারি হয়েছে। আবার সরকারের জিনিস ভাড়ায় দিচ্ছে। সরকারি সম্পদ এভাবে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করাটা ভালো দেখায় না।

বিদ্যালয়ের প্রায় ৪০-৪৫টি বেঞ্চ বিয়ে বাড়িতে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠলেও ঘটনায় সম্পৃক্ত ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভিন্নরকম মন্তব্য পাওয়া গেছে।

বিয়েতে বেঞ্চ নিয়ে আসা নুন খাওয়া গ্রামের বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, আমি তো মেম্বার সাবকে বলে নিয়ে আসছি। বিয়ে শেষে তাকে চার-পাঁচশ টাকা দেওয়া লাগবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো.

রায়হান আলী বলেন, সে যে বেঞ্চ নিয়ে গেছে আমি তো জানিই না। ৩ দিন আগে বলছিল, আমি বলছি সভাপতিকে জানাতে, আমি কিছু বলতে পারবো না।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, টাকা নেবো কেন, এটা সঠিক নয়। বিদ্যালয়ের জমিদাতা আমি, গরিব পরিবার দেখে মানবিক কারণে বেঞ্চগুলো দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয়ের বেঞ্চ এভাবে ব্যবহার করা নিষেধ। বিষয়টি অবগত হলাম, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ