মিথ্যা মাদক মামলা দেওয়ার অভিযোগে ভৈরব থানার এসআই ক্লোজড
Published: 5th, April 2025 GMT
অটোরিকশা চালক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মাদক মামলা দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ভৈরব থানার এসআই আল মামুনকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী (বিপিএম সেবা) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, মাদকের সঙ্গে কোন আপস নয়। ৪ এপ্রিল দুপুরে ভৈরবের একটি পরিবার এসআই আল মামুনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে জানতে পেরেছি। এ ঘটনার পর এসআই আল মামুনকে ভৈরব থানা থেকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রমাণ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, ৮ মার্চ রাতে মাদক কারবারি আকবর আলীর ঘর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এসআই শ্যামল ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় আকবর ও তার স্ত্রী রুবি বেগমের নামে মামলা না দিয়ে উল্টো তারই ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী স্মৃতি বেগমের কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করেন এসআই আল মামুন ও এসআই শ্যামল। টাকা না দেওয়ায় অটোচালক মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রীকে এসআই আল মামুন গ্রেপ্তারের হুমকি দেন বলে তারা অভিযোগ করেন।
পরে ১১ মার্চ রাত ১টায় এসআই আল মামুন অটোচালক মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে গিয়ে তাকে আটক করে পুনরায় ১ লাখ টাকা দাবি করে। মামলা থেকে বাঁচার জন্য প্রতিবেশির কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ছাড়া পান অটোচালক ও তার স্ত্রী।
এ বিষয়ে ৪ এপ্রিল বিকেলে এসআই আল মামুন ও এসআই শ্যামল দেবনাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী ও তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেন, এসআই আল মামুন মাদক কারবারি আকবর ও তার স্ত্রী রুবি বেগমের সঙ্গে যোগসাজশে তাদের মামলায় আসামি করেন।
সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হলে কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারের নজরে আসে। ওই রাতেই এসআই আল মামুনকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক আল মামুন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলার বাদী শ্যামল চন্দ্র দেবনাথ। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এ বিষয়ে শ্যামল চন্দ্র দেবনাথের সঙ্গে কথা হলে তিনিও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাদক উদ্ধারের ১ দিন পর মাদক মামলা দায়ের করেছি। কার মাদক দিয়ে কাকে মামলা দিয়েছি তখন তো কেউ এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করেনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ ভ রব থ ন র এসআই
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সুদের টাকা লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আহতরা হলেন- পারভেজ শেখ (২০), মানিক শেখ (৪১), সাদ্দাম শেখ (৩৫), শাকিল খান (২৫), ফয়সাল শেখ (২০), আবু সাঈদ শেখ (৪০), সজীব শেখ (১৯), রনি শেখ (৪০), সোহেল সুলতান (২৫), আফ্রিদি শেখ (১৯), মোস্তফা শেখ (৪০), নুরুন্নবী (১৮), আমানুল্লাহসহ (২৫) আরও অনেকে।
গুরুতর আহতদের গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কোটালীপাড়া থানার আহত এসআই সেলিম মাহমুদ কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই এসআইসহ কোটালীপাড়া থানার আরও ৩ কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে কোটালীপাড়া থানার এসআই মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন।
মাঝবাড়ি গ্রামের কালাম দাড়িয়া ও বংকুরা গ্রামের হাসেম মুন্সি জানিয়েছেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বংকুরা গ্রামের রিয়াজুলের কাছ থেকে মাঝবাড়ি গ্রামের ফারুক দাড়িয়া সুদে টাকা নেন । সেই টাকা সময়মত ফারুক সুদে আসলে পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করেন। এতে পাওনাদার রিয়াজুল ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে দু’জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকালে বাকবিতণ্ডা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীকে সংঘর্ষে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানের পর দুই গ্রামের লোকজন ঢাল-সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দফায়-দফায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। দুই ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কোটালীপাড়া পাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ ও উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত রিয়াজুল ও ফারুক দাড়িয়ার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।