দেশে এ মুহূর্তে সাগর উপকূলে চলাচলের উপযোগী ফেরি না থাকায় অভ্যন্তরীণ নদীপথের জন্য তৈরি ‘কপোতাক্ষ’ চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ রুটে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌপথে সারাবছর চলাচলের উপযোগী ফেরি আনার আশ্বাস দিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই যে ফেরি, এটা টেম্পোরারি। দু-তিন মাস চলবে। আমরা সি ট্রাক দেব। সি ট্রাকে গাড়ি আসতে পারবে না। লোকজন আসতে পারবে। এখানে গাড়ি ও মানুষ পারাপারের জন্য কোস্টাল ফেরি দিতে হবে। সেটা আমাদের নেই, আনতে হবে।’
ফেরি উদ্বোধনের পর সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদের মাঠে সমাবেশে কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমদ মোস্তফা। তিনি তখন বলেন, ‘জোয়ারের সময় ঘাটের সামনের অংশ পানিতে ডুবে থাকে। ফেরিঘাট নির্মাণে সাফল্য ধরে রাখা চ্যালেঞ্জিং। দুই পাড়ে খাল খনন করে যে চ্যানেল সৃষ্টি করা হয়েছে তা নিয়মিত ড্রেজিং করতে হবে। মার্চ থেকে সাগর উত্তাল হতে শুরু করে। প্রায় ১৮ কিলোমটার এই নৌপথ। ভরা ও মরা কাটালের সময় ৭ মিটার বা ২১ ফুট উচ্চতার তারতম্য হয়। এখানে সাগরে চলাচল উপযোগী ফেরি প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় জনবল ও বরাদ্দ দরকার।’
খরচ কমলেও কমেনি পণ্যের দাম : পণ্য নষ্ট না হলেও পরিবহন খরচে তেমন একটা হেরফের হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গাড়িটি পণ্য নিয়ে সন্দ্বীপ এলেও, যাওয়ার সময় খালি যেতে হচ্ছে। আমাকে আসা-যাওয়ার ফেরি ভাড়া, গাড়ি ভাড়া দিতে হচ্ছে। যদি যাওয়ার সময় গাড়িগুলো সন্দ্বীপ থেকে মালামাল নিয়ে যেতে পারত, পরিবহন খরচ অর্ধেক কমে যেত। এ ক্ষেত্রে সন্দ্বীপে কলকারখানা গড়ে তুললে, এখান পণ্য নিয়ে গাড়িগুলো চট্টগ্রাম যেতে পারবে।’
ফেরিতে পণ্য আনার কারণে পরিবহন খরচ অর্ধেক কমে গেলেও ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যের দাম কমেনি বলে অভিযোগ করেছেন খুচরা ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতারা। সন্দ্বীপের মুন্সিরহাটের খুচরা সবজি বিক্রেতা মাহমুদ উদ্দিন বলেন, ‘সবজির দাম কমেনি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেড়েছে।’
সন্তোষপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুদ রানা বলেন, ‘তিন দিন আগে যে দামে সবজি কিনেছি আজকেও একই দাম। অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের দামও কমেনি। পরিবহন খরচ যেহেতু কমেছে, ব্যবসায়ীদের উচিত পণ্যের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম কমানো। না হলে ফেরির সুফল শুধু ব্যবসায়ীদের ঘরে যাবে, সাধারণ মানুষ আগের মতোই বঞ্চিত হবেন।’
এ বিষয়ে অহিন এন্টারপ্রাইজের নুরুল আফসার বলেন, ‘ফেরিতে মাল আসায় প্রতি সিলিল্ডারে পরিবহন খরচ ২০ টাকা কমে গেছে। ভোক্তা পর্যায়ে সেটা কমানো হবে।’ মাওয়াজ গ্লাসের স্বত্বাধিকারী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আগে আমরা খুচরা ব্যবসায়ীদের যে হারে কমিশন দিতাম, ফেরিতে পণ্য আসার পর কমিশন বাড়িয়ে দিয়েছি। ধীরে ধীরে
পণ্যের দাম আরও কমবে।’ সবজির আড়তদার ভাই ভাই বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘পণ্য আনা-নেওয়ার খরচ কমে যাওয়ার জিনিসপত্রের দাম কমে যাবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস য় দ ম কম ন বল ন উপয গ র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।
গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।
অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।
ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”
হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।
ঢাকা/আমিনুল