পুরান ঢাকার নারিন্দাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা মাঠে বসানো মেলা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। আজ রোববার বিকেলে এই মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কবির হোসেন নামের এক ব্যক্তি এই মেলা বসিয়েছিলেন। খেলার মাঠে শিশু-কিশোরদের জন্য বিভিন্ন রাইড ও খেলনার দোকান বসিয়ে বাণিজ্য করছিলেন তিনি। পাশাপাশি সেখানে খাবারের দোকানও বসিয়েছিলেন।

ঈদ ও বৈশাখী মেলার নামে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুটি মাঠ, একটি পার্ক ও একটি সড়কের এক পাশ দখল করে মেলা বসানো হয়। এ নিয়ে গত শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। প্রতিবেদন প্রকাশের পর এ নিয়ে নানা মহলে ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা হয়। বিএনপির বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনও তাঁর ফেসবুকে প্রথম আলোর প্রতিবেদন যুক্ত করে নিজের অভিমত প্রকাশ করেছিলেন। কার অনুমতি নিয়ে খেলার মাঠ ও পার্কে মেলার আয়োজন করা হয়েছে, তা সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তিনি।

এই মাঠে মেলা বন্ধ করে দেওয়ার পর মুঠোফোনে ইশরাক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, খেলার মাঠে মেলা বন্ধ করে দিতে তিনি পুলিশকে অনুরোধ জানিয়ে আসছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ খেলার মাঠে মেলা বন্ধের কোনো উদ্যোগ নিয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়নি।

পুলিশ মেলা বন্ধ ঘোষণা করলে স্টলগুলো বন্ধ করে দেন দোকানিরা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ