বিদায় অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়ায় ছাত্রদল নেতার হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত
Published: 7th, April 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরে একটি বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না করায় দুই শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। গত সোমবার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার কামানখোলা অলিউল্যাহ মুসলিম পলিটেকনিক একাডেমিতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম সাঈদ সারোয়ার ওরফে শুভ। তিনি সদর উপজেলার কামানখোলা বাজার এলাকার আবদুল আজিজের ছেলে ও স্থানীয় দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদায় অনুষ্ঠান চলাকালে লুঙ্গি পরা অবস্থায় হাতে একটি এসএস পাইপ নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন সাঈদ সারোয়ার। এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে থাকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকদের কাছে জানতে চান তাঁকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। একপর্যায়ে পাইপ নিয়ে দুই শিক্ষকের দিকে তেড়ে যান তিনি। কিছুক্ষণ পর সাঈদ সারোয়ারের বাবা আবদুল আজিজও ঘটনাস্থলে আসেন। তিনিও এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিম রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি এসেই জানতে চান তাঁকে কেন দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এ সময় তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি আমাদের মারধর করতে আসেন। আমিসহ কয়েকজন শিক্ষক একটি কক্ষে ঢুকে কোনো রকম নিজেদের রক্ষা করি।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘তিনি কেন এমন অশালীন আচরণ করেছেন জানি না। আমাকে মারতে তেড়ে এসেছেন, তাঁর বাবাও আমাকে মারধরের চেষ্টা করেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাঈদ সারোয়ার বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই বিদ্যালয় গড়ে তুলেছেন। এরপরও বিদ্যালয়ের কোনো অনুষ্ঠানে আমাদের জানানো হয় না। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করেছি, কাউকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ সত্য নয়।’ তিনি বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগের দোসর। তিনি বিগত দিনে বিদ্যালয়ের আয়–ব্যয়ের কোনো হিসাব দেননি। এখনো লুটপাট করে যাচ্ছেন।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মাকসুদুর রহমান বলেন, সাঈদ সারোয়ারের পূর্বপুরুষেরা বিদ্যালয়ের জন্য জমি দান করেছেন। তাই বলে বিদ্যালয়ে ঢুকে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো খুবই নিন্দনীয়। তাঁদের পরিবারের একাধিক সদস্য বিদ্যালয়ে চাকরি করছেন।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা (পশ্চিম) ছাত্রদলের সদস্যসচিব মিজানুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রদলে সাঈদের এখন কোনো পদপদবি নেই। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়াও সম্ভব নয়।’ লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ঈদ স র য় র য় অন ষ ঠ ন ছ ত রদল
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?