অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের এক প্রতিশ্রুতিশীল নাম ছিলেন উইল পুকোভস্কি। টেস্ট দলে তার ভবিষ্যৎ ছিল উজ্জ্বল। তবে একের পর এক মাথায় আঘাত, অর্থাৎ কনকাশনের কারণে মাত্র ২৭ বছর বয়সেই সব সম্ভাবনায় ইতি টানলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে আনুষ্ঠানিকভাবে জানালেন, তিনি আর ক্রিকেট খেলবেন না।

মাত্র এক টেস্ট খেলেই শেষ হলো পুকোভস্কির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। ২০২১ সালে ভারতের বিপক্ষে ঐ একমাত্র টেস্টে খেলেছিলেন তিনি। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে বারবার কনকাশনে আক্রান্ত হতে থাকেন। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চে শেফিল্ড শিল্ডে খেলতে গিয়ে তাসমানিয়ার পেসার রিলে মেরেডিথের বাউন্সারে মাথায় গুরুতর আঘাত পান পুকোভস্কি। সঙ্গে সঙ্গেই কনকাশন বদলি হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।

খেলোয়াড়ি জীবনে অন্তত ১৫ বার মাথায় আঘাত পাওয়া এই ব্যাটারকে নিয়ে একটি স্বতন্ত্র মেডিকেল প্যানেল গঠন করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। প্যানেল অবসরের পরামর্শ দিলেও, নিজের চুক্তি, বীমা ও আর্থিক বিষয় বিবেচনা করে কিছুটা সময় নেন তিনি।

অবসরের ঘোষণা দিতে গিয়ে মেলবোর্নের একটি রেডিও স্টেশনে পুকোভস্কি বলেন,  ‘আমি ক্রিকেটকে সবকিছু দিয়েছি। কিন্তু বারবার মাথায় আঘাত পাওয়ার পর বুঝতে পেরেছি, এটা আর আমার শরীরের পক্ষে সম্ভব নয়। এই সিদ্ধান্তে অনেকে হতাশ হবেন জানি, কিন্তু আমার কাছে এখন এটা জীবন-মৃত্যুর ব্যাপার। আমি চাই না বাকি জীবনটা বিছানায় শুয়ে কাটাতে হোক।’

তিনি আরও বলেন,  ‘গত এক বছর আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারতাম না, হেঁটে বের হওয়াও কষ্টকর ছিল। মাথাব্যথা, ক্লান্তি, বমিভাব – প্রতিদিনের সঙ্গী ছিল এসব। এমনকি আমার বাগদত্তাও হতাশ হতেন, কারণ আমি কোনো কাজেই সাহায্য করতে পারতাম না। সারাদিন ঘুমিয়ে থাকতাম।’

কনকাশনের প্রভাবে তার দৃষ্টিতেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। জানান,  ‘শরীরের বাঁ পাশে কিছু চলাচল করলেই মাথা ঘোরে, অসুস্থ বোধ করি। মোশন সিকনেস খুব বেশি হয়। স্বাভাবিক জীবনযাপনটাই কঠিন হয়ে পড়েছে।’

তবে ক্রিকেট ছাড়লেও এই খেলার সঙ্গেই থাকছেন পুকোভস্কি। ২০২৫-২৬ মৌসুমে মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেবেন তিনি। এছাড়া সম্প্রতি ধারাভাষ্যকার হিসেবেও কাজ করেছেন।

অভিযোগ নেই, কেবল কৃতজ্ঞতা নিয়ে পুকোভস্কি বলেন,  ‘ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। আমি গর্বিত, যদিও মন ভেঙে গেছে। আমি জানি, আমি সর্বোচ্চটা দিয়েছি। এখন চাই সুস্থ জীবন।’

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪৫.

১৯ গড়ে ২৩৫০ রান করেছেন পুকোভস্কি। ৭টি সেঞ্চুরি, যার মধ্যে তিনটিই ডাবল সেঞ্চুরি, আর আছে ৯টি ফিফটি। একমাত্র টেস্টে করেছিলেন ৬২ ও ১০ রান। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ১২ ম্যাচে ৩৩৩ রান করার পাশাপাশি একটি সেঞ্চুরি ও দুটি ফিফটির মালিক তিনি।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইতিহাসের দ্রুততম মানবের এখন সিঁড়ি ভাঙতে দম ফুরিয়ে আসে

হঠাৎ মনে হতে পারে, কথাবার্তায় লোকটা এখন তো বেশ সাদামাটা। তা-ই কি?

মোটেও না। চেনা সেই ক্যারিশমা যে চলে যায়নি, সেটা বোঝা গেল ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে উসাইন বোল্ট যখন সোজা বলে দিলেন, কেন তাঁর রেকর্ড আজও কেউ ভাঙতে পারেননি। মনে হবে, এই তো সেই বোল্ট। আবার একটু ধাক্কাও লাগবে পরের কথাগুলো শুনলে। একসময়ের সুপারম্যান এখন তাহলে এমন আটপৌরে জীবন কাটাচ্ছেন! যে জীবনে নাকি সিঁড়ি ভেঙে ওঠার সময় তাঁর দম ফুরিয়ে আসে! অথচ এই লোকটাই একসময় ১০০ মিটার দৌড়েছেন ৯.৫৮ সেকেন্ডে।

আরও পড়ুনআকাশছোঁয়ার অভিযানে ডুপ্লান্টিসের আবারও বিশ্ব রেকর্ড১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

টেলিগ্রাফের সঙ্গে সাক্ষাৎকারটা বোল্ট দিয়েছেন টোকিওতে। বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ দেখতে গেছেন সেখানে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ২০১৭ সালে অবসরের পর এই প্রথম অ্যাথলেটিকসের কোনো বড় আসর দেখতে গেলেন আটবারের এই অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন। জাপানি দর্শকেরা অবশ্য তাঁকে দেখে ঠিকই উল্লাসে ফেটে পড়েছে। তবে বোল্ট এখন বদলে গেছেন অনেকটাই। জ্যামাইকায় এখন তাঁর ঘরোয়া জীবনটা আলোয় থাকার সময়ের সেই জীবনের সঙ্গে একেবারেই মেলে না।

অবসর নেওয়ার পর এই প্রথম অ্যাথলেটিকসের কোনো বড় আসরে এলেন বোল্ট। টোকিওতে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এই সরকারও আমলাতন্ত্রের চাপে!
  • পুলিশের ৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
  • ইতিহাসের দ্রুততম মানবের এখন সিঁড়ি ভাঙতে দম ফুরিয়ে আসে