ফিলিস্তিনের জন্য বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি: সালাউদ্দিন
Published: 8th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের জন্য বৃহৎ পরিসরে কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে, সোমবার (৭ এপ্রিল) ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল আনটিল দ্য জেনোসাইড স্টপস’ এর সমর্থনে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্রদল।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে শিবির ও ছাত্রদলে পৃথক কর্মসূচি
ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি
এ কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “গণহত্যার বিরুদ্ধে যারা সোচ্চার নয়, তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ যোগাচ্ছে। আমেরিকার মার্কিন বাহিনীর প্রতি আমরা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাই। মুসলিম বিশ্বের যারা মোড়ল তাদের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা সারা পৃথিবীতে নির্যাতিত মুসলিমদের পাশে দাঁড়ান। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দিতে চাই, ফিলিস্তিনদের পক্ষে এবং ইজরাইলের এ গণহত্যার প্রতিবাদে অতি শীঘ্রই সারা বাংলাদেশে বৃহৎ পরিসরে কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে।”
তিনি বলেন, “অবিলম্বে ফিলিস্তিনের গাজায়, রাফায়,গণহত্যা বন্ধ চাই। সারা বিশ্বের মানুষ জেগে উঠেছে। গতকাল সারা দেশের মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছে। আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রগতিশীল সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কর্তৃক আয়োজিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে, তার সাফল্য কামনা করি।”
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশের বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার আওয়ামী লীগ পরোক্ষভাবে ইজরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইজরাইল ব্যতীত সকল রাষ্ট্র গমনের যে নির্দেশনা ছিল, সেখান থেকে ইসরাইল নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। আমরা পত্রিকা থেকে যে পরিসংখ্যান পেয়েছি ৫০ থেকে ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই পরিসংখ্যানের চেয়েও আরো বেশি হত্যা করা হয়েছে।”
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা বাংলাদেশে ইসরাইলের কোনো পণ্য বয়কট করব, তার মানে এই না যে- আমরা কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা করব। গতকাল বাংলাদেশের কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হামলা হয়েছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের ব্যর্থতা এখানে লক্ষণীয়। তাদের উচিত ছিল আগে থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা। তা না হলে বাংলাদেশের নামে এ বদনামটা হত না।”
বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসিরের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল।
রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, “স্বাধীন ফিলিস্তিন একটি ছোট্ট রাষ্ট্র। সেখানকার শান্তিকামী মুসলমানরা নিজেদের আবাসভূমি স্থায়ী করার জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন। কিন্তু দখলদার ইসরায়েল সন্ত্রাসী হামলার মধ্য দিয়ে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যার অর্ধেক নারী ও শিশু। এ রকম ধংসযজ্ঞ চলার পরও যেসব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান প্রতিবাদ জানাননি তাদের আমরা ধিক্কার জানাই।”
তিনি বলেন, “আজ জাতিসংঘসহ সব মানবাধীকার সংগঠন নিশ্চুপ। গাজায় সর্বোচ্চ মানবাধিকার লঙ্ঘন হলেও তাদের কোনো প্রতিবাদ নেই। আজ থেকে যেখানে আমরা ইসরায়েলী পণ্য পাব সেখানে বয়কট করবো। আজ যদি সারা বিশ্বের মুসলিমরা ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে তাদের সামনে কেউ দাঁড়াতে পারবে না।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ব এনপ র ইসর য় ল গণহত য
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।