ফিলিস্তিনের জন্য বৃহৎ পরিসরে কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ। 

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে, সোমবার (৭ এপ্রিল) ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল আনটিল দ্য জেনোসাইড স্টপস’ এর সমর্থনে এ বিক্ষোভ  কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্রদল।

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে শিবির ও ছাত্রদলে পৃথক কর্মসূচি

ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি

এ কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “গণহত্যার বিরুদ্ধে যারা সোচ্চার নয়, তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ যোগাচ্ছে। আমেরিকার মার্কিন বাহিনীর প্রতি আমরা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাই। মুসলিম বিশ্বের যারা মোড়ল তাদের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা সারা পৃথিবীতে নির্যাতিত মুসলিমদের পাশে দাঁড়ান। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দিতে চাই, ফিলিস্তিনদের পক্ষে এবং ইজরাইলের এ গণহত্যার প্রতিবাদে অতি শীঘ্রই সারা বাংলাদেশে বৃহৎ পরিসরে কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে।”

তিনি বলেন, “অবিলম্বে ফিলিস্তিনের গাজায়, রাফায়,গণহত্যা বন্ধ চাই। সারা বিশ্বের মানুষ জেগে উঠেছে। গতকাল সারা দেশের মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছে। আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রগতিশীল সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কর্তৃক আয়োজিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে, তার সাফল্য কামনা করি।”

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশের বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার আওয়ামী লীগ পরোক্ষভাবে ইজরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইজরাইল ব্যতীত সকল রাষ্ট্র গমনের যে নির্দেশনা ছিল, সেখান থেকে ইসরাইল নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। আমরা পত্রিকা থেকে যে পরিসংখ্যান পেয়েছি ৫০ থেকে ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই পরিসংখ্যানের চেয়েও আরো বেশি হত্যা করা হয়েছে।”

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা বাংলাদেশে ইসরাইলের কোনো পণ্য বয়কট করব, তার মানে এই না যে- আমরা কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা করব। গতকাল বাংলাদেশের কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হামলা হয়েছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের ব্যর্থতা এখানে লক্ষণীয়। তাদের উচিত ছিল আগে থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা। তা না হলে বাংলাদেশের নামে এ বদনামটা হত না।”

বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসিরের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল।

রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, “স্বাধীন ফিলিস্তিন একটি ছোট্ট রাষ্ট্র। সেখানকার শান্তিকামী মুসলমানরা নিজেদের আবাসভূমি স্থায়ী করার জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন। কিন্তু দখলদার ইসরায়েল সন্ত্রাসী হামলার মধ্য দিয়ে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যার অর্ধেক নারী ও শিশু। এ রকম ধংসযজ্ঞ চলার পরও যেসব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান প্রতিবাদ জানাননি তাদের আমরা ধিক্কার জানাই।”

তিনি বলেন, “আজ জাতিসংঘসহ সব মানবাধীকার সংগঠন নিশ্চুপ। গাজায় সর্বোচ্চ মানবাধিকার লঙ্ঘন হলেও তাদের কোনো প্রতিবাদ নেই। আজ থেকে যেখানে আমরা ইসরায়েলী পণ্য পাব সেখানে বয়কট করবো। আজ যদি সারা বিশ্বের মুসলিমরা ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে তাদের সামনে কেউ দাঁড়াতে পারবে না।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ব এনপ র ইসর য় ল গণহত য

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে

সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।

শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।

পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।

শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল