ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নাম লেখাতে আমরা প্রস্তুত: অধ্যাপক মোর্শেদ
Published: 10th, April 2025 GMT
ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নাম লেখাতে প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান।
তিনি বলেছেন, “ইসরায়েলকে সশস্ত্র জবাব দিতে হবে। বিশ্বের সবগুলো দেশকে ঐক্যবদ্ধ থেকে ইসরাইলকে মোকাবিলা করতে হবে। প্রয়োজনে যুদ্ধে নাম লেখাতে আমরা প্রস্তুত আছি। অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সাদা দলের মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
নিরাপত্তা উপদেষ্টার নিয়োগ বাতিলের দাবি বিপ্লবী পরিষদের
এবারের শোভাযাত্রা সর্ববৃহৎ ও জাঁকজমকপূর্ণ হবে: চারুকলা
এ সময় অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, ঢাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বিজ্ঞান অনুষদ ডিন ও ঢাবি সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুস সালাম, আইন অনুষদ ডিন অধ্যাপক ইকরামুল হক, কলা অনুষদ ডিন অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান প্রমুখ।
কলা অনুষদ ডিন অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ বিবেকের তাড়নায় আজ এখানে দাঁড়িয়েছি। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ইজরাইল বর্বর গণহত্যা চালিয়ে আসছে। গাজা একটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ নিহত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের সমর্থন নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া ইজরাইল যে নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “আমরা ইজরাইলকে জানাতে চাই, এ গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এছাড়া যেসব দেশ ইজরাইলকে সহযোগিতা করছে, তাদেরকে সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে এবং জাতিসংঘ ও ওআইসিকে এগিয়ে আসতে হবে। বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আমরা দেখেছি ফোনে আড়িপাতার যন্ত্র আমদানি হয়েছিল এই ইজরাইল থেকে, পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সেপ্ট ইজরাইল’ বাতিল করেছে। আমরা চাই না বাংলাদেশের সঙ্গে ইজরাইলের কোনো লিখিত অলিখিত সম্পর্ক থাকুক।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অংশ হিসেবে নয় শিক্ষক হিসেবে এখানে এসেছি। যদি মনুষত্ববোধ থেকে থাকে আমাদের সবারই এ বিষয়ে সামনে আসা উচিত। আমাদের যদিও করার কিছু নেই, কিন্তু আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ইসরাইল যা খুশি করুক, কিন্তু তারা ফিলিস্তিনি জাতির কিছুই করতে পারবে না। তারা জেগে থাকবে, টিকে থাকবে। ইসরায়েলের সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা আছে, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কচ্ছেদ করতে হবে।”
ঢাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার বলেন, “অক্টোবর ২০২৩ এ তাদের ধারণা ছিল, তারা ফিলিস্তিনকে ধ্বংস করে ফেলবে। কিন্তু হামাস এবং হিজবুল্লার প্রতিরোধের মুখে আল্লাহর রহমতে এখনো তারা এ লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। তবে যে যেই ভাষা বোঝে, তাকে সে ভাষায় জবাব দিতে হবে। ইসরাইল একটা জাতিগত নিধন করতে চায়। তাদের দর্শন হলো এখন যদি শিশুদের হত্যা করা না হয়, তাহলে তারা বড় হয়ে যুদ্ধ করবে। সুতরাং ইসরায়েলকে তাদের ভাষায় জবাব দিতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমার তো মনে হয় যুদ্ধের প্রয়োজন নেই। কেবল ওপেকভুক্ত দেশগুলো যদি তেল দেওয়া বন্ধ করে, তাহলে যুদ্ধ বন্ধ হয়ে আসবে।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।