ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয় না, আসে লুটেরা শ্রেণি: ফরহাদ মজহার
Published: 11th, April 2025 GMT
কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, কমিউনিটি যখন দাঁড়িয়ে যায়, এলাকা যখন দাঁড়িয়ে যায় তখনই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উন্মেষ ঘটে। ভোট দিয়ে হয় না, ভোটে লুটেরা মাফিয়া শ্রেণি আসে।
শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী মাজারে জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স আয়োজিত গণমানুষের জাগ্রত জুলাই শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র কায়েম হয় যখন আমরা বুঝবো এ কমিউনিটি সবচেয়ে শক্তিশালী, কমিউনিটিতে থাকতে হবে, কমিউনিটির সিদ্ধান্তে এ এলাকায় উন্নয়ন হবে, কমিউনিটি যেমনি করে চায় তেমনি করে হবে। কমিউনিটি খুব ভালো করে বুঝে কোনটা তার ভালো, কোনটা তার খারাপ।
তিনি আরও বলেন, যে ইসলাম ধর্মের অন্তর্গত না, যে সনাতন ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্মের, অন্য ধর্মের সেও আমার সমাজের অন্তর্গত। আমার সমাজের বাইরে সে না, এই যে সত্য কথাটা, এটা মাজার নিত্যদিন প্রচার করে। মাজারে যে গান হয়, যে সংস্কৃতির চর্চা হয় তার একটাই ভাষা, মানুষ। মানুষের চেয়ে সত্য আর কিছু নাই। মাজার এটাই করে। এই যে কথা বলবার যে শক্তির জায়গা এটা যদি রাখতে পারি তখন আমরা বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন করতে পারবো।
শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠন করতে জনগণকে লাগবে উল্লেখ করে এই রাষ্ট্রচিন্তক বলেন, জনগণকে বাদ দিয়ে উপর থেকে চাপ দিয়ে রাষ্ট্র গঠন করা যায় না। আমাদের উপদেষ্টা ফারুকী (সংস্কৃতি উপদেষ্টা) এটা খুব ভালো করে বুঝেন যে, জনগণকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্র গঠন করা যায় না।
ফরহাদ মজহার বলেন, মাজার আমাদের মনে করিয়ে দেয় স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন এ স্মৃতির উছিলায় একত্রিত হই, মানুষটা নাই কিন্তু মানুষের স্মৃতি আছে, সেটা কি? তার কাজ, তার আমল। মানুষ নশ্বর, মৃত্যুকে সে কখনোই এড়াতে পারবে না, সে মরবেই কিন্তু সে যেটা রেখে যায় সেটা হচ্ছে আমল। মাজার শেখায়, তোমার জীবন তুচ্ছ, তোমার আমল সবার আগে।
জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ রোমেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, মিরপুরে আন্দোলনে আহত মাহফুজুর রহমান, আবুল বাসার সোহেল, সম্মুখ সারির যোদ্ধা আলী নুর, কবি নকিব মুকশি, হাসনাত শোয়েব, জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের সদস্য তৌফিক হাসান, হুমায়ুন শফিক, উদয় হাসান ও মিলন হোসেন প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র
এছাড়াও পড়ুন:
কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।