কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, কমিউনিটি যখন দাঁড়িয়ে যায়, এলাকা যখন দাঁড়িয়ে যায় তখনই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উন্মেষ ঘটে। ভোট দিয়ে হয় না, ভোটে লুটেরা মাফিয়া শ্রেণি আসে।

শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী মাজারে জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স আয়োজিত গণমানুষের জাগ্রত জুলাই শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র কায়েম হয় যখন আমরা বুঝবো এ কমিউনিটি সবচেয়ে শক্তিশালী, কমিউনিটিতে থাকতে হবে, কমিউনিটির সিদ্ধান্তে এ এলাকায় উন্নয়ন হবে, কমিউনিটি যেমনি করে চায় তেমনি করে হবে। কমিউনিটি খুব ভালো করে বুঝে কোনটা তার ভালো, কোনটা তার খারাপ।

তিনি আরও বলেন, যে ইসলাম ধর্মের অন্তর্গত না, যে সনাতন ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্মের, অন্য ধর্মের সেও আমার সমাজের অন্তর্গত। আমার সমাজের বাইরে সে না, এই যে সত্য কথাটা, এটা মাজার নিত্যদিন প্রচার করে। মাজারে যে গান হয়, যে সংস্কৃতির চর্চা হয় তার একটাই ভাষা, মানুষ। মানুষের চেয়ে সত্য আর কিছু নাই। মাজার এটাই করে। এই যে কথা বলবার যে শক্তির জায়গা এটা যদি রাখতে পারি তখন আমরা বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন করতে পারবো।

শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠন করতে জনগণকে লাগবে উল্লেখ করে এই রাষ্ট্রচিন্তক বলেন, জনগণকে বাদ দিয়ে উপর থেকে চাপ দিয়ে রাষ্ট্র গঠন করা যায় না। আমাদের উপদেষ্টা ফারুকী (সংস্কৃতি উপদেষ্টা) এটা খুব ভালো করে বুঝেন যে, জনগণকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্র গঠন করা যায় না।

ফরহাদ মজহার বলেন, মাজার আমাদের মনে করিয়ে দেয় স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন এ স্মৃতির উছিলায় একত্রিত হই, মানুষটা নাই কিন্তু মানুষের স্মৃতি আছে, সেটা কি? তার কাজ, তার আমল। মানুষ নশ্বর, মৃত্যুকে সে কখনোই এড়াতে পারবে না, সে মরবেই কিন্তু সে যেটা রেখে যায় সেটা হচ্ছে আমল। মাজার শেখায়, তোমার জীবন তুচ্ছ, তোমার আমল সবার আগে।

জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ রোমেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, মিরপুরে আন্দোলনে আহত মাহফুজুর রহমান, আবুল বাসার সোহেল, সম্মুখ সারির যোদ্ধা আলী নুর, কবি নকিব মুকশি, হাসনাত শোয়েব, জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের সদস্য তৌফিক হাসান, হুমায়ুন শফিক, উদয় হাসান ও মিলন হোসেন প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পাল্টা হামলায় নিরাপদ আশ্রয়ে ইসরায়েলের লাখ লাখ মানুষ 

ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলার জবাবে রাতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ভোর হওয়ার ঠিক আগে ইসরায়েলে বেজে ওঠে সাইরেন। এর ফলে ইসরায়েলের লাখ লাখ মানুষ নিরাপদ আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। 

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে দেশটির জনগণকে আশ্রয়স্থল থেকে বেরিয়ে আসতে বলেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর জনগণকে দেশের সব অঞ্চলে সুরক্ষিত এলাকা (আশ্রয়স্থল) থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আশ্রয়স্থলের কাছাকাছি অবস্থান করতে হবে।

ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে কাজ করছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলিদের নিরাপদ এলাকায় চলে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খবর আল জাজিরার

এএফপির খবর বলছে, শনিবার ভোরে ইরান নতুন করে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, ইরান থেকে ছোড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র তাঁরা শনাক্ত করেছে।

ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে রক্ষা পেতে ইসরায়েলের অনেক অঞ্চলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়। ইরান ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এ কথা জানিয়েছে।

এক্সে দেওয়া পোস্টে তারা লিখেছে, ‌‘ইরানের ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার বিষয়টি শনাক্ত হওয়ার পর-ই বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ার্নিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে।’ সেখানে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী হামলার উৎস শনাক্ত করছে। প্রয়োজন অনুযায়ী উৎসকে লক্ষ্য করে প্রতিরোধমূলক অভিযানে নামছে।

তবে, ইসরায়েলের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তথা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘শতভাগ দুর্ভেদ্য না’ উল্লেখ করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, তারা যেন সমস্ত নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলে।

ইসরায়েলের ইংরেজি পত্রিকা দ্য জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের হামলায় ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৩ জন আহত হয়েছেন। তেল আবিব ও জেরুসালেমে সতর্কতামূলক সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসরায়েলের একটি আবাসিক রাস্তার ছবি দেখা গেছে যা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে। রাস্তাজুড়ে ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইরানের পাল্টা হামলায় একজন নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চলে ইরানের রকেট হামলায় আহত একুশ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের জরুরি সেবা বিভাগ ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ)। এক্স-এ প্রকাশিত একটি পোস্টে, এমডিএ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর, অন্যদের অবস্থা হালকা থেকে মাঝারি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত সিএনএনকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলে একজন নারী নিহত এবং ‌‘প্রায় ৪০ জন’ আহত হয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমসও ইসরায়েলি পুলিশের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে তেল আবিবের কাছে একটি শহরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ঘটনাস্থলেই ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানের জনগণকে বিদ্রোহ করার ডাক দিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী
  • ইরানে হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ইসরায়েলের 
  • ইরানের পাল্টা হামলায় সুরক্ষিত এলাকায় ইসরায়েলের লাখ লাখ মানুষ 
  • ইরানের পাল্টা হামলায় নিরাপদ আশ্রয়ে ইসরায়েলের লাখ লাখ মানুষ