শহুরে পরিবারের দ্বন্দ্ব নিয়ে ‘ননসেন্স’
Published: 12th, April 2025 GMT
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে আসছে নতুন সিরিজ। শহরকেন্দ্রিক পারিবারের গল্পের এ সিরিজের নাম ‘ননসেন্স’। ছয় পর্বের এ সিরিজের নির্মাতা রাকেশ বসু। সিরিজটি মুক্তি উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে একটি প্রেস শোর আয়োজন করা হয়। এতে অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন।
সিরিজের গল্প নিয়ে নির্মাতা রাকেশ বসু বলেন, ‘একই অ্যাপার্টমেন্টে থাকা দুটি ভিন্ন চিন্তাধারার পরিবারের গল্প নিয়ে এটি তৈরি। গল্পটি শুরু হয় মধ্যবিত্ত পরিবারের এক ব্যক্তিকে ঘিরে, যিনি সবার মন জুগিয়ে চলতে পছন্দ করেন। হঠাৎ কোনো এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। কেন সেই দ্বন্দ্ব এবং কী সেই ঘটনা, সে গল্পই দেখা যাবে সিরিজে।’
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ বিডি থেকে জানানো হয়েছে, শুরু থেকেই দর্শকদের চাহিদা ও পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে তারা কনটেন্ট উপহার দিয়ে আসছে। তাদের বানানো যেকোনো কনটেন্ট দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। নতুন ওয়েব সিরিজ ‘ননসেন্স’–এও এর প্রতিফলন ঘটেছে। সিরিজটি কমেডি ও থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এক ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে বলে মনে করছে তারা।
‘ননসেন্স’-এ অভিনয় করেছেন জাকিয়া বারী মম, ইন্তেখাব দিনার, আইশা খান, নাজিবা বাশার, মিলি বাশার, টনি মাইকেল গোমেজ প্রমুখ। বছরখানেক আগে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সিরিজটির দৃশ্যধারণের কাজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক রাকেশ।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গর জন্য এর আগে একক নাটক নির্মাণ করলেও এবারই প্রথম ওয়েব সিরিজ বানালাম। নাটকে তো অনেক বিষয় থাকে, যা আমরা দেখাতে পারি না। ওয়েব সিরিজে আমরা তা অনায়াসে তুলে ধরতে পারি। শহুরে দুটি পরিবারের নানান বিষয় স্যাটায়ার ওয়েতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। রাজনৈতিক ব্যাপারেরও একটা প্রতিফলন এ সিরিজে পাওয়া যাবে। আশা করছি, গল্পটা দর্শকের পছন্দ হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র র
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।