চৈত্রসংক্রান্তি উদযাপনের মধ্য দিয়ে আজ বিদায় জানানো হচ্ছে ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে। ঋতুরাজ বসন্তের শেষ দিনটিতে দেশের নানা প্রান্তে আয়োজন করা হয়েছে বর্ণাঢ্য সব অনুষ্ঠানের। আবহমান বাংলার চিরায়ত এই উৎসবকে নতুনভাবে রাঙাতে রাজধানীর জাতীয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ব্যান্ড শো ও সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে থাকছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকঢোল, লাঠিখেলাসহ বিভিন্ন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী এবং দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডগুলোর পরিবেশনা। 

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ‘চৈত্রসংক্রান্তি ব্যান্ড শো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’-এর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগ। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে রয়েছে মেঠোপথ কমিউনিকেশন। আয়োজকরা জানান, আজ দুপুর ২টায় শুরু হবে চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজন। এতে থাকছে মারমা, ত্রিপুরা, গারো, চাকমা ও খাসিয়া জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দল চিম্বুক, ইমাং, ইনভোকেশন, ইউনিটি, এফ মাইনর, দি রাবুগার পরিবেশনা। ঐতিহ্যবাহী ঢাকঢোল, লাঠিখেলাসহ থাকছে আরও বেশ কিছু আয়োজন। ব্যান্ড শো পর্বে থাকছে ওয়ারফেজ, আর্টসেল, দলছুট, ভাইকিংস, লালন, অ্যাভয়েড রাফা ও ফিডব্যাকের পরিবেশনা। আয়োজকরা আরও জানান, শুধু অনলাইনে নিবন্ধন করা দর্শক এ আয়োজন উপভোগ করার সুযোগ পাবেন। দুপুর ১২টায় দর্শকের প্রবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নির্দিষ্ট পাঁচটি গেট খুলে দেওয়া হবে। ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শক সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিল্পী ও ব্যান্ড সদস্যরা জানান, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলার চিরায়ত এই উৎসবে যে নতুনমাত্রা যোগ করা হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। সে কারণেই তারা চেষ্টা করবেন চৈত্রসংক্রান্তি উৎসবকে সুরে সুরে বর্ণাঢ্য করে তোলার। 

এদিকে, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও নেত্রকোনা জেলার আঙ্গরোয়া গ্রামে চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে ‘খনার মেলা’র আয়োজন করা হয়েছে। আজ সূর্যোদয় থেকে শুরু হবে এ আয়োজন। চলবে পহেলা বৈশাখ সূর্যোদয় পর্যন্ত। রাত-দিনব্যাপী এ আয়োজনে থাকছে গান, কবিতা, বাউলগান, কিচ্ছাপালা, গাইন গীত, শ্লোক, খনার কৃষি, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, জীবন আর জ্যোতির্বিদ্যা নিয়ে বিশেষ আলোচনা। এই মেলায় গান পরিবেশন করবেন প্রখ্যাত বাউল সুনীল কর্মকার, প্রবীণ কৃষক বাউল মিয়া হোসেন ও শেফালী গায়েন। তাদের পাশাপাশি থাকছে বরেণ্য শিল্পী কফিল আহমেদ, কৃষ্ণকলি ও তাঁর গানের দল, সংগঠন সমগীত, ব্যান্ড সহজিয়া, চিৎকার, মুসা কলিম মুকুল, ফকির সাহেব, কুয়াশা মূর্খ, নূপুর সুলতানা, মঙ্গলঘরের শিল্পী কৃষক দুদু কাঞ্চন, দুলাল চিশতি, তরুণ শিল্পী ফয়সল, উদয়, সুমন, হৃদয়সহ আরও অনেকের পরিবেশনা।

উপস্থিত দর্শক-শ্রোতার অংশগ্রহণে খনার ওপর বিশেষ আলোচনা পর্বে ‘জল ভালা ভাসা/ মানুষ ভালা চাষা’– এ প্রতিপাদ্য নিয়ে কথা বলবেন গবেষক-লেখক পাভেল পার্থ, প্রাকৃতিক কৃষি আন্দোলনের সংগঠক দেলোয়ার জাহান, কবি আহমেদ নকিব, লেখক ও সংস্কৃতি সংগঠক বাকি বিল্লাহ, শিল্পী ও সংস্কৃতি সংগঠক বীথি ঘোষ, কবি আসমা বীথি, সংস্কৃতি সংগঠক আবুল কালাম আল আজাদ, লোকসাহিত্য গবেষক রাখাল বিশ্বাস, মঙ্গলঘর পরিসরের প্রধান সংগঠক বদরুন নূর চৌধুরী লিপন ও শিল্পী কফিল আহমেদ।

পুরো আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে এলাকাবাসী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মিডিয়া কমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠান কুল এক্সপোজার। এ ছাড়া দেশের নানা প্রান্তে চৈত্রসংক্রান্তি উদযাপনে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, যা বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি দর্শকের বিনোদনের তৃষ্ণা মেটাবে বলেও আয়োজকরা আশা প্রকাশ করছেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ত রস ক র ন ত চ ত রস ক র ন ত অন ষ ঠ ন স গঠক

এছাড়াও পড়ুন:

জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব

সময়ের চেয়েও বেশি দীর্ঘ হলো অপেক্ষা। উত্তেজনার বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে ছিল ফুটবলীয় রোমাঞ্চ। শেষ ১৫ মিনিট যেন পরিণত হলো রূপকথার উপসংহারে—যেখানে আবাহনীর স্বপ্ন থেমে যায়, আর বসুন্ধরা কিংস খুঁজে পায় চতুর্থ ফেডারেশন কাপের সোনালি মুহূর্ত।

বৃষ্টির ছন্দে বিভ্রান্ত হওয়া ফাইনাল আবার শুরু হলো এক সপ্তাহ পর। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচের বাকি অংশ গড়ালো ময়মনসিংহ জেলা স্টেডিয়ামে। যেখানে শুরু থেকেই ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে নামে কিংস। অতিরিক্ত সময়ে কিছুই হল না। তবে অপেক্ষার পুরস্কার মিলল টাইব্রেকারে।

সেখানে বাজিমাত করলেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ। আবাহনীর দ্বিতীয় শট আটকে দিয়ে দলকে দিলেন এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। আর শেষ শটটি নেন ব্রাজিলিয়ান ড্যাসিয়েল, যা গোললাইন পার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উৎসবে ফেটে পড়ে কিংস শিবির।

আরো পড়ুন:

যে কারণে এবারের লিগ জয়কে এগিয়ে রাখছেন সালাহ

পাঁচ গোলের রোমাঞ্চকর ফাইনালে শেষ হাসি বার্সার

কিছুদিন আগেই আবাহনীর কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল কিংস। এবার সেই হারের উত্তরটা যেন মিলল একই মঞ্চে, একই কৌশলে— তবে ভিন্ন ফলাফলে। মোরসালিন, তপু, ইনসান, জোনাথন আর ড্যাসিয়েল— কেউই ভুল করেননি। আবাহনীর একমাত্র ব্যর্থ শটটি ছিল নাইজেরিয়ান এমেকার, যা ঠেকিয়ে দেন শ্রাবণ। আর মিরাজুলের চতুর্থ শট, যা প্রথমবার ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন শ্রাবণ। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্তে আবার নিতে হয়। তাতেও গোল হলেও ততক্ষণে কিংস হয়ে গেছে অপ্রতিরোধ্য।

এদিন মাত্র ১৫ মিনিট খেলা হলেও মাঠের উত্তাপ ছিল পূর্ণদৈর্ঘ্য নাটকের মতো। শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর সুমন রেজা ও অধিনায়ক হৃদয়। আগের ম্যাচেও হলুদ-লাল কার্ডে ভরা ছিল দৃশ্যপট। ফুটবল এখানে শুধু কৌশলের খেলা নয় তা যেন হয়ে ওঠে মানসিক স্থিতির পরীক্ষাও।

এই জয়ে বসুন্ধরা কিংস চতুর্থবারের মতো ফেডারেশন কাপ জয় করল। একই সঙ্গে আবাহনীকে প্রথমবার কোনো ফাইনালে হারানোর কৃতিত্বও অর্জন করল তারা। অতীতে দুই ফাইনালে পরাজিত হয়েছিল কিংস। এবার তারা সেই রেকর্ড মুছে দিল নির্ভার ফুটবলে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশ গড়ার নায়কদের জন্য ফ্লাইট এক্সপার্টের বিশেষ উদ্যোগ
  • প্রথমবারের মতো দেশে সংযোজিত এসইউভি গাড়ি আনল প্রোটন
  • এক সপ্তাহে এভারেস্ট জয় কি সত্যিই সম্ভব
  • সম্পর্কের ৫০ বছর: বাংলাদেশে প্রথমবার চীনা ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী
  • ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে উৎসবকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে: মোহাম্মদ আজম
  • জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব
  • যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের
  • প্রথম আলোর সম্পাদক-প্রকাশের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন, আদেশ ৪ মে
  • বন্ধু রাশিয়াকে সাহায্য করতে সেনা পাঠায় উত্তর কোরিয়া