শিল্পকলায় প্রথমবার চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজনে ব্যান্ড শো
Published: 13th, April 2025 GMT
চৈত্রসংক্রান্তি উদযাপনের মধ্য দিয়ে আজ বিদায় জানানো হচ্ছে ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে। ঋতুরাজ বসন্তের শেষ দিনটিতে দেশের নানা প্রান্তে আয়োজন করা হয়েছে বর্ণাঢ্য সব অনুষ্ঠানের। আবহমান বাংলার চিরায়ত এই উৎসবকে নতুনভাবে রাঙাতে রাজধানীর জাতীয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ব্যান্ড শো ও সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে থাকছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকঢোল, লাঠিখেলাসহ বিভিন্ন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী এবং দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডগুলোর পরিবেশনা।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ‘চৈত্রসংক্রান্তি ব্যান্ড শো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’-এর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগ। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে রয়েছে মেঠোপথ কমিউনিকেশন। আয়োজকরা জানান, আজ দুপুর ২টায় শুরু হবে চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজন। এতে থাকছে মারমা, ত্রিপুরা, গারো, চাকমা ও খাসিয়া জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দল চিম্বুক, ইমাং, ইনভোকেশন, ইউনিটি, এফ মাইনর, দি রাবুগার পরিবেশনা। ঐতিহ্যবাহী ঢাকঢোল, লাঠিখেলাসহ থাকছে আরও বেশ কিছু আয়োজন। ব্যান্ড শো পর্বে থাকছে ওয়ারফেজ, আর্টসেল, দলছুট, ভাইকিংস, লালন, অ্যাভয়েড রাফা ও ফিডব্যাকের পরিবেশনা। আয়োজকরা আরও জানান, শুধু অনলাইনে নিবন্ধন করা দর্শক এ আয়োজন উপভোগ করার সুযোগ পাবেন। দুপুর ১২টায় দর্শকের প্রবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নির্দিষ্ট পাঁচটি গেট খুলে দেওয়া হবে। ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শক সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিল্পী ও ব্যান্ড সদস্যরা জানান, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলার চিরায়ত এই উৎসবে যে নতুনমাত্রা যোগ করা হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। সে কারণেই তারা চেষ্টা করবেন চৈত্রসংক্রান্তি উৎসবকে সুরে সুরে বর্ণাঢ্য করে তোলার।
এদিকে, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও নেত্রকোনা জেলার আঙ্গরোয়া গ্রামে চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে ‘খনার মেলা’র আয়োজন করা হয়েছে। আজ সূর্যোদয় থেকে শুরু হবে এ আয়োজন। চলবে পহেলা বৈশাখ সূর্যোদয় পর্যন্ত। রাত-দিনব্যাপী এ আয়োজনে থাকছে গান, কবিতা, বাউলগান, কিচ্ছাপালা, গাইন গীত, শ্লোক, খনার কৃষি, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, জীবন আর জ্যোতির্বিদ্যা নিয়ে বিশেষ আলোচনা। এই মেলায় গান পরিবেশন করবেন প্রখ্যাত বাউল সুনীল কর্মকার, প্রবীণ কৃষক বাউল মিয়া হোসেন ও শেফালী গায়েন। তাদের পাশাপাশি থাকছে বরেণ্য শিল্পী কফিল আহমেদ, কৃষ্ণকলি ও তাঁর গানের দল, সংগঠন সমগীত, ব্যান্ড সহজিয়া, চিৎকার, মুসা কলিম মুকুল, ফকির সাহেব, কুয়াশা মূর্খ, নূপুর সুলতানা, মঙ্গলঘরের শিল্পী কৃষক দুদু কাঞ্চন, দুলাল চিশতি, তরুণ শিল্পী ফয়সল, উদয়, সুমন, হৃদয়সহ আরও অনেকের পরিবেশনা।
উপস্থিত দর্শক-শ্রোতার অংশগ্রহণে খনার ওপর বিশেষ আলোচনা পর্বে ‘জল ভালা ভাসা/ মানুষ ভালা চাষা’– এ প্রতিপাদ্য নিয়ে কথা বলবেন গবেষক-লেখক পাভেল পার্থ, প্রাকৃতিক কৃষি আন্দোলনের সংগঠক দেলোয়ার জাহান, কবি আহমেদ নকিব, লেখক ও সংস্কৃতি সংগঠক বাকি বিল্লাহ, শিল্পী ও সংস্কৃতি সংগঠক বীথি ঘোষ, কবি আসমা বীথি, সংস্কৃতি সংগঠক আবুল কালাম আল আজাদ, লোকসাহিত্য গবেষক রাখাল বিশ্বাস, মঙ্গলঘর পরিসরের প্রধান সংগঠক বদরুন নূর চৌধুরী লিপন ও শিল্পী কফিল আহমেদ।
পুরো আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে এলাকাবাসী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মিডিয়া কমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠান কুল এক্সপোজার। এ ছাড়া দেশের নানা প্রান্তে চৈত্রসংক্রান্তি উদযাপনে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, যা বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি দর্শকের বিনোদনের তৃষ্ণা মেটাবে বলেও আয়োজকরা আশা প্রকাশ করছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ত রস ক র ন ত চ ত রস ক র ন ত অন ষ ঠ ন স গঠক
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ।
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়।
পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল।
ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র্যাঙ্কিং ৫৫)। র্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না।
প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।
এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ।
ঢাকা/ইয়াসিন