মুন্সীগঞ্জে বিএনপির আনন্দ শোভাযাত্রায় সংঘর্ষ
Published: 14th, April 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত বিএনপির আনন্দ শোভাযাত্রায় হওয়া সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন যুবক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আতাউর করিম দুইজনকে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
শরীয়তপুরে আবারো ককটেল বিস্ফোরণ, সংঘর্ষ
নলকূপের পানি নিয়ে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া দুইজন হলেন- মো.
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আজ দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে শোভাযাত্রা বের করে জেলা বিএনপি। এতে জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি দলটির নেতাকর্মীররা অংশ নেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় শোভাযাত্রাটি পৌঁছালে কিছু নেতাকর্মীর মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হট্টগোল শুরু হয়য়। পরে তারা সংঘর্ষে জড়ান। এসময় আহত হন কয়েকজন। পরে শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আহতদের মধ্যে দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিবি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমি শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছিলাম। পেছনে কারা হট্টগোল করেছে তা আমি দেখিনি। পরে নেতারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কথা কাটাকাটির জোরে কয়েকজনের মধ্যে ঘটনাটি ঘটতে পারে। তাদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আতাউর করিম বলেন, “আজ দুপুরে দুইজন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, “তুচ্ছে ঘটনা নিয়ে কিছুটা হট্টগোলের খবর পেয়েছি। তবে নিজেরাই তা মিটিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”
ঢাকা/রতন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ স ঘর ষ দ ইজন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।