পূর্ব রাজাবাজারের রাস্তা ঘুরে দেখলেন রাজউক চেয়ারম্যান
Published: 14th, April 2025 GMT
রাজউকের চেয়ারম্যান মো. রিয়াজুল ইসলাম নববর্ষের প্রথম দিনে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় রাস্তা প্রশস্তকরণ সম্পর্কিত জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাজাবাজারে তিনি রাস্তার দুই পাশের বাড়ির মালিকদেরসহ অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং রাস্তা প্রশস্তকরণের সুবিধাগুলো তাদের কাছে তুলে ধরেন।
পরিদর্শনকালে রাজউক চেয়ারম্যান রাজউকের জোন-৫ এর সাবজোন ৫/২ এর আওতাধীন পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় বসবাসরত জনগণের নিত্যদিনের যানজট ও চলাচলের অসুবিধা নিরসনকল্পে ড্যাপের প্রস্তাবনা অনুযায়ী বিদ্যমান রাস্তাগুলো ৩০ ফুট প্রশস্তকরণের নিমিত্তে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ঘুরে দেখেন।
আরো পড়ুন:
বাসচালকে মারধরের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ, ৫ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক
মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতি, প্রাণ গেল যুবকের
এ সময় রাজউক চেয়ারম্যান রাজউকের চলমান কার্যক্রমগুলো অবহিতকরণসহ রাস্তা প্রশস্তকরণের ফলে যেসব সুযোগ সুবিধা এলাকার বাসিন্দারা পাবেন, সে সম্পর্কে বাসিন্দাদের সম্যক ধারণা দেন। এছাড়া তিনি বাসিন্দাদের বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধার কথা এবং তাদের কাছে থেকে সুচিন্তিত মতামত নেন।
এছাড়া বিদ্যমান অসুবিধাগুলো দ্রুত নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
এ প্রসঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো.
তিনি আরো বলেন, “রাজধানীবাসীর কাছে একটি বাসযোগ্য নগরী পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে যেকোনো সমস্যা সমাধানে রাজউক বর্তমানে সর্বোচ্চ দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছে। জনসাধারণের সহযোগিতায় রাজউক সংশ্লিষ্ট সবাই একটি বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে সদা সচেষ্ট। এমনকি নববর্ষের প্রথম দিন ছাড়াও অন্যান্য ছুটির দিনগুলোতেও যেন মানুষকে কোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে না হয় তার জন্য আমরা কাজ করছি।”
এ সময় তিনি জনসাধারণকে নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে নিয়ম মেনে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করার অনুরোধ করেন।
পরিদর্শনের সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) মো. হারুন-অর-রশীদ, পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১) মো. মনিরুল হক, পরিচালক (জোন-৫) মো. হামিদুল ইসলাম, অথরাইজড অফিসার (জোন ৫/২) মো. ইলিয়াস প্রমুখ।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ন র জউক র জউক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে
দেশে রোগমুক্ত সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তুলতে ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ড্রামে খোলা ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ একটি বড় বাধা। একইসাথে ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘ডি’ সমৃদ্ধকরণ ও গুণগত প্যাকেজিং অত্যন্ত জরুরি।
রাজধানীর বিআইপি কনফারেন্স রুমে সোমবার (২৮ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত “সবার জন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল: অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়” শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব বিষয় তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত এই কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৬ জন সাংবাদিক অংশ নেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, জাতীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট জরিপ ২০১১-১২ অনুযায়ী, প্রাক্-বিদ্যালয়গামী প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন ভিটামিন ‘এ’ এবং দুইজন শিশু ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভুগছে। ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ আইন, ২০১৩ অনুযায়ী ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ ব্যতীত ভোজ্যতেল বাজারজাত করা নিষিদ্ধ। আইসিডিডিআর,বি-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারে মোট ভোজ্যতেলের ৬৫ শতাংশই ড্রামে বিক্রি হয়। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ তেলে কোনো ভিটামিন ‘এ’ নেই, আর ৩৪ শতাংশ তেলে রয়েছে প্রয়োজনের চেয়ে কম মাত্রায়। মাত্র ৭ শতাংশ ড্রামের খোলা তেলে আইন অনুসারে ভিটামিন ‘এ’–এর নির্ধারিত পরিমাণ পাওয়া গেছে। ফলে সাধারণ মানুষ আইনটির সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
কর্মশালায় জানানো হয়, নন-ফুড গ্রেড উপকরণে তৈরি ড্রাম দিয়ে ভোজ্যতেল পরিবহন করা হয়-যেগুলো আগে কেমিক্যাল, লুব্রিকেন্ট/মবিল বা অন্যান্য শিল্পপণ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়েছে। এ ধরনের ড্রামে সংরক্ষিত খোলা ভোজ্যতেল জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, পাশাপাশি এতে ভেজাল মেশানোর আশঙ্কাও থাকে। এই পুরোনো ড্রামগুলোতে কোনো লেবেল বা উৎস সম্পর্কিত তথ্য না থাকায় তেলের উৎপত্তিস্থল বা সরবরাহকারীকে শনাক্ত করা যায় না। তাই খোলা ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ আইন বাস্তবায়নে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কর্মশালায় জানানো হয়, জুলাই ২০২২ এর পর থেকে ড্রামে খোলা সয়াবিন তেল এবং ডিসেম্বর ২০২২ এর পর থেকে খোলা পাম তেল বাজারজাতকরণ বন্ধে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি। তাই নিরাপদ ভোজ্যতেল ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে শিল্প মন্ত্রণালয়, বিএসটিআই, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।
ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতি অন্ধত্ব, গর্ভকালীন মাতৃমৃত্যুসহ নানা শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। অন্যদিকে, ভিটামিন ‘ডি’-এর অভাব রিকেটস ও হাড় ক্ষয়ের পাশাপাশি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ প্রেক্ষাপটে, ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’ সমৃদ্ধকরণ একটি সাশ্রয়ী ও কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এতে সাধারণ মানুষ প্রতিদিনের খাবারের মাধ্যমে সহজেই এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন পেতে পারে।
এছাড়াও কর্মশালায় ভোজ্যতেলে গুণগতমানের প্যাকেজিং নিশ্চিতের উপরও জোর দেওয়া হয়। সাধারণত সূর্যরশ্মিসহ যেকোন আলোর সংস্পর্শে ভিটামিন ‘এ’ নষ্ট হতে থাকে এবং একপর্যায়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। ভোজ্যতেল বাজারজাত হয় যেসব বোতলে সেগুলোর অধিকাংশই আলো প্রতিরোধী না হওয়ায় ভোজ্যতেলের গুণগত ও পুষ্টিমান হ্রাস পায়। সে কারণে ভোজ্যতেলের প্যাকেজিংয়ের জন্য আলো প্রতিরোধী অস্বচ্ছ উপাদান ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর-এর কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগের পরিচালক (উপসচিব) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন; ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের কনসালটেন্ট সাবেক অতিরিক্ত সচিব মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার; ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট আবু আহমেদ শামীম; দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
কর্মশালায় গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের লার্জ স্কেল ফুড ফর্টিফিকেশন কান্ট্রি এডভোকেসি বাংলাদেশ-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. রীনা রাণী পাল এবং প্রজ্ঞা'র কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার।
ঢাকা/হাসান/সাইফ