হালদা নদী থেকে বালু তোলায় দুজনকে এক লাখ টাকা জরিমানা
Published: 16th, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদী থেকে রাতের অন্ধকারে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাল্কহেড (নৌযান) ভর্তি করা হচ্ছিল। খবর পেয়ে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে পরিচালনা করা হয় অভিযান। এ সময় দুজনকে হাতেনাতে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে হালদা ও কর্ণফুলী নদীর মোহনা রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কচুখাইন গ্রামের গণি মিয়ার ঘাটে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
যে দুজনকে জরিমানা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন মুহাম্মদ ইউসুফ ও মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। দুজনের বাড়ি ভোলার সদর উপজেলায়। তাঁরা শ্রমিক হিসেবে বালু তোলায় নিয়োজিত ছিলেন। অভিযানে বালু তোলার ঘটনায় জড়িত মূল হোতাদের কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
অভিযানে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ, উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন এবং পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিলেন। জানতে চাইলে রাউজান উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হালদা নদী থেকে বালু তোলা এবং ড্রেজার ও বাল্কহেডে পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবু প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড চলে। গতকাল দুজনকে জরিমানার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়ার বিষয়ে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, হালদা নদী দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র। এখানে কার্পজাতীয় মা মাছেরা এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রজনন মৌসুমে একাধিকবার ডিম ছেড়ে থাকে। এ কারণে নদীতে কোনো ধরনের যান্ত্রিক নৌযান চলাচল ও বালু তোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। তবু প্রশাসনের চোখ ফাঁকিয়ে দিয়ে নদীটিতে অবৈধভাবে বালু তোলা হয়। বালু পরিবহনে নিয়োজিত নৌযানের পাখার আঘাতে নদীতে প্রায় সময় মা মাছ ও ডলফিনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ম হ ম মদ মৎস য উপজ ল দ জনক
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে গভীর রাতে বুড়া-বুড়ির বাড়িতে হামলা
বন্দরের জাঙ্গাল এলাকায় ইট ভাটার মাটি কাটতে না দেয়ায় নিরিহ নিরপরাধ বৃদ্ধ দম্পত্তির (বুড়া-বুড়ি) নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও বাড়ি ঘরে ব্যাপক হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশের উপস্থিতিতে একটি ইট ভাটা মালিকের সন্ত্রাসী বাহিনী এই হামলা ও ভাংচুরের নেতৃত্ব দিয়েছে বলে ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন। এরপর উল্টো তাদের ধরে নিয়ে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছেন। পরে জামিনে বের হয়ে ভুক্তভোগী এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে পুলিশ মামলা না নেয়ায় আতংকে রয়েছেন তারা।
জানা গেছে, বন্দরের জাঙ্গালের বাকদোবাড়িয়া এলাকায় অবস্থিত ৩টি ব্রিক ফিল্ডের মালিক মোঃ আলমগীর হোসেন। সে সাধারন মানুষের জমি জোর পূর্বক দখল করে মাটি কেটে ইট ভাটা পরিচালনা করে আসছে বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের আদালতে বেশ কয়েকটি দেওয়ানী মামলা চলমান রয়েছে।
ভূক্ত ভোগী বন্দরের জাঙ্গাল এলাকায় বৃদ্ধা মহিলা মিনারা বেগম মিনু জানান, আমার জমি জমার বিভিন্ন ভূয়া কাগজপত্র সৃজন করে ইট ভাটার মালিক আলমগীর জোর পূর্বক দখল করে মাটি কাটার চেষ্টা চালায়।
আমি ও আমার পরিবার এতে জোরালো আপত্তি করি এবং আমার স্বামী তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একাধিক দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। এতে ইট ভাটার মালিক আমাদের উপর ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদের প্রানে মেরে ফেলার জন্য আলমগীর নানা ষড়যন্ত্রের ফাদ পাততে থাকে।
আর এ কাজে থানা পুলিশকে সে ম্যানেজ করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের জীবন শেষ করে দেয়ার অপচেষ্টা চালায়। গত ২০ এপ্রিল রবিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে গভীর রাত ৩টা পর্যন্ত বন্দর থানার দারোগা জলিল, শরীফ ও বন্দর কামতাল ফাড়ির দারোগা মনির সহ প্রায় ২৫ জন পুলিশ আমার বাড়ীর চারদিকে ঘেরাও করে রাখে।
এসময় ব্রিক ফিল্ডের মালিক আলমগীরের প্রায় ২০/২৫ জনের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী দা, সাবল, বটি, খুন্তি, কুড়াল সহ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে বাড়ীর গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ব্যাপক হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। পরবর্তীতে বন্দর থানা পুলিশ বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে আমাকে ও আমার বৃদ্ধ স্বামীকে জোর পূর্বক থানার পুলিশ ভ্যানে তুলতে চায়।
বন্দর থানা পুলিশ কোন মামলা ছাড়াই বিনা ওয়ারেন্টে টানা হেচড়া করে আমাদেরকে থানায় নিয়া যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আমি মামলা ছাড়া বিনা ওয়ারেন্ট আমাদের কেন থানায় নিয়া যাবেন জানেত চাইলে আমাকে ও আমার স্বামী আঃ বাতেন (৬০) কে বেধম প্রহার করেন। আমি একজন বৃদ্ধা মহিলা হওয়া স্বত্তেও পুলিশ আমাকে উপর্যপুরি ৪টি বেত্রাঘাত করে।
তখন আমি পুলিশের হাতে পায়ে ধরে কোন মতে পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেলেও গভীর রাত ৩টায় আমার স্বামী আঃ বাতেন (৬০)কে জোরপূর্বক বন্দর থানায় নিয়া যায়।
থানায় নিয়ে ব্রিক ফিল্ডের মালিক আলমগীরের ম্যানেজার মজিবরকে বাদী বানাইয়া আমাদের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এর ১০/১৩/১৬ ধারায় একটি মিথ্যা মামলা নং-২৪৪২৫ দায়ের করেন।
বন্দর থানার পুলিশ আমার স্বামীকে ২০ এপ্রিল ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন সহ নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরন করলে বিজ্ঞ আদালত শুনানী অন্তে রিমান্ডের আবেদন না-মঞ্জুর পূর্বক জামিন প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে গত ২২ এপ্রিল আমি বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করলে মহামান্য আদালত আমাকেও জামিন প্রদান করেন।
বর্তমানে আমরা আদালত থেকে জামিন নেয়র পর এ ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা করতে গেলে ব্রিক ফিল্ডের মালিক আলমগীরের দাপটের কারনে পুলিশ কোন মামলা নিচ্ছে না।
এখন আমি আদালতে প্রতিকার চেয়ে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। আমি এই ঘটনার সুুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে কথা বলতে বন্দর থানার ওসির মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।