গ্রামগঞ্জে বংশবিরোধের ঘটনা নতুন নয়। আমাদের সাহিত্য ও সিনেমায় এর অজস্র নমুনা আছে। সমাজ ও পরিবারের নানা বাস্তবতায় এমন বিরোধ তৈরি হয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দুঃখজনক হচ্ছে, এমন অনেক বংশবিরোধ যুগ যুগ ধরে চলমান থাকে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, খুনোখুনি, পাল্টাপাল্টি মামলাও চলতে থাকে। কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় এমন এক বংশবিরোধ চলছে অর্ধশতাব্দী ধরে। গ্রামবাসীর উদ্যোগে শান্তি কমিটি গঠন করেও সে বিরোধ মেটানো যায়নি। এমন বিরোধের শেষ কোথায়?

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, আধিপত্য ধরে রাখাকে কেন্দ্র করে উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের কর্তাবাড়ি ও সরকারবাড়ির মধ্যে বিরোধ চলছে ৫৬ বছর ধরে। এই বিরোধে দুই পক্ষের ১৪ জন নিহত হয়েছেন। মামলা হয়েছে শতাধিক। এতে গ্রামের শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে। একের পর এক প্রজন্ম জন্ম নিচ্ছে এবং বেড়ে উঠছে এমন পরিস্থিতির মধ্যে। এই টানা বিরোধ শিশুর বেড়ে ওঠায় মানসিকভাবে কতটা প্রভাব ফেলে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

কর্তাবাড়ি ও সরকারবাড়ির বিরোধ মূলত এলাকায় নিজেদের শক্তি প্রদর্শন নিয়ে। আধিপত্য ধরে রাখাকে উভয় বংশের লোকজন আভিজাত্য মনে করেন। এর মধ্যে এক বাড়ির নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলার এক বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। আরেক বাড়ির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান। সর্বশেষ দুই বংশের বিরোধ মেটাতে গ্রামবাসীর উদ্যোগে একটি ‘শান্তি কমিটি’ও গঠন করা হয়েছিল। এরপরও গত মঙ্গলবার আবারও সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। গত ঈদুল আজহার আগের দিন ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষে এক বাড়ির একজন নিহত হন। সে ঘটনার সূত্র ধরে দুই পক্ষ আবার সংঘর্ষ জড়ালে আরেক বাড়ির একজন নিহত হন।

বিরোধ মেটাতে দুই বংশের লোকজন নিয়ে শান্তি কমিটি গঠিত হয়। শান্তি কমিটিকে দুই বংশের মধ্যে আবার সংঘর্ষ না হওয়ার বিষয়ে নজর রাখা এবং মামলার কারণে গ্রামছাড়া হওয়া দুই পক্ষকে গ্রামে ফিরিয়ে শান্তিতে বসবাস নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই পক্ষের লোকজন গ্রামে ফেরার পর আবার উত্তেজনা তৈরি হয় এবং দুই পক্ষ আবার সংঘর্ষে জড়ায়।

স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, গ্রামের দুটি বংশের শত্রুতা কয়েক প্রজন্মের। গ্রাম দুটিকে নিয়ে পুলিশকে সর্বদা তটস্থ থাকতে হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়।

আমরা আশা করব, দুই বংশের এ দীর্ঘ বিরোধ মেটাতে স্থানীয় প্রশাসন থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। যুগের পর যুগ এমন বিরোধ চলতে পারে না। এর অবসান হোক। গ্রামেও শান্তি ফিরে আসুক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিবাহবিচ্ছেদের পর আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন চাহাল

এ বছরের মার্চে পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন ভারতের লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল। ইউটিউবার–অভিনেত্রী ধনশ্রী বর্মার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁর। ভারতের ইউটিউবার রাজ শামানির সঙ্গে পডকাস্টে সংসার ভাঙা নিয়ে কথা বলেছেন চাহাল।

ভারতের হয়ে ২০২৩ সালে সর্বশেষ খেলা এই লেগ স্পিনার জানিয়েছেন, কয়েক বছর ধরেই তাঁর ও ধনশ্রীর মধ্যে সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছিল না। তবু তাঁরা এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগপর্যন্ত ব্যক্তিগত জীবনের ঝামেলা সামনে নিয়ে আসেননি। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিবাহবিচ্ছেদের পর তিনি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যান এবং একপর্যায়ে আত্মহত্যা করার কথাও ভাবেন।

আরও পড়ুনকাঁধের চোটে ভারতের বিপক্ষে আর খেলতে পারবেন না ওকস১ ঘণ্টা আগে

ভারতের হয়ে ৭২ ওয়ানডে ও ৮০ টি–টোয়েন্টি খেলা চাহালের কাছে রাজ শামানি জানতে চেয়েছিলেন, ঠিক কী কারণে তাঁদের সম্পর্কটা ভেঙে গেল? ৩৫ বছর বয়সী চাহালের উত্তর, ‘বেশ কিছুদিন ধরে সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিই চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমরা ব্যাপারটা সামনে আনব না।’

২০১৬ সালের জুনে ভারতের হয়ে অভিষেক চাহালের। চার বছর পর ধনশ্রীকে বিয়ে করেন তিনি। চাহাল জানিয়েছেন, জাতীয় দলে হয়ে খেলায় তাঁর ব্যস্ত হয়ে পড়া এবং ধনশ্রীরও নিজ ক্যারিয়ার নিয়ে মনোযোগী হয়ে পড়ায় কেউ কাউকে সময় দিতে পারেননি। সাংসারিক ঝামেলার এটাই মূল কারণ বলে মনে করেন চাহাল।

যুজবেন্দ্র চাহাল ও ধনশ্রী বর্মা

সম্পর্কিত নিবন্ধ